Prothomalo:
2025-12-13@21:07:31 GMT

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

Published: 13th, December 2025 GMT

‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।

অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।

শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো.

সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

কর্মসূচি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ষ ট রপত কর ছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: পুষ্পস্তবক অর্পণসহ চার বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা আয়োজন

যথাযোগ্য মর্যাদায় আজ ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হবে। এ উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কালো পতাকা উত্তোলন, স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।
তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই বিপ্লবের স্মৃতিস্মারক, গ্রাফিতি ও পোস্টার প্রদর্শনীরও আয়োজন থাকছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে এক সভায় বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়।

এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ৬টা ২০মিনিটে উপাচার্য ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভবনসমূহে কালো পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ৬টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জমায়েত, সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে উপাচার্যের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ কবরস্থান, জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণের স্মৃতিসৌধ ও বিভিন্ন আবাসিক এলাকার স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ।

এরপর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ও রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের উদ্দেশ্যে যাত্রা। বেলা সোয়া ১১টায় উপাচার্যের সভাপতিত্বে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এ ছাড়া বাদ আসর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিয়াসহ বিভিন্ন হল মসজিদ ও অন্যান্য উপাসনালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনায় দোয়া ও প্রার্থনা করা হবে।

আরও পড়ুনশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ৮ মিনিট আগে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

দিবসটি উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান সকাল সাড়ে আটটায় পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করবেন।

শিক্ষক সমিতি, অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হবে।

ঢাকা শহরে বসবাসকারী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে যোগদানের সুবিধার্থে ঢাকার বিভিন্ন রুটে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।

দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো কর্মসূচি রাখা হয়নি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এবারও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এ ছাড়া কোনো আলোচনা সভা, শোকসভা বা অন্য কোনো কর্মসূচি নেই। বিগত বছরগুলোতেও এ ধরনের কোনো আয়োজন ছিল না।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

আজ রোববার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বুদ্ধিজীবী চত্বরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১০টায় শহীদদের স্মরণে ‘শোক র‌্যালি’ করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বেলা ১১টায় উপাচার্য দপ্তরের সম্মেলনকক্ষে  ‘মুক্তচিন্তা, মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এবারও যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের আয়োজন করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ৬টায় সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে পতাকা উত্তোলন, সকাল আটটায় সিনেট ভবন চত্বর থেকে পদযাত্রা, সকাল ৮টা ১০ মিনিটে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করবে সব বিভাগ, ইনস্টিটিউট, হল প্রশাসন, শিক্ষক সমিতি, অফিসার সমিতি, সহায়ক কর্মচারী সমিতি, সাধারণ কর্মচারী ইউনিয়ন, পরিবহন টেকনিক্যাল কর্মচারী সমিতি, স্কুল ও অন্যান্য সংগঠন। সকাল সোয়া ৯টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যদের স্মৃতিচারণা, সম্মাননা স্মারক প্রদান ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

বাদ জোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত রয়েছে। সন্ধ্যা ছয়টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে রয়েছে নাটক আলোর পাহারাদার। আর জুলাই বিপ্লবের স্মৃতিস্মারক, গ্রাফিতি ও পোস্টার প্রদর্শনী ১৪ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা]

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: পুষ্পস্তবক অর্পণসহ চার বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা আয়োজন
  • জবিতে ‘ই’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সম্পন্ন, উপস্থিতি ৮১ শতাংশ
  • ‘আজ যে শিশু’ থেকে ‘ঘুম ভাঙা শহরে’: শহীদ মাহমুদ জঙ্গীর সাত দশকের গল্প
  • আজ শেষ হচ্ছে কম্পিউটার সিটির মেলা
  • ভেনেজুয়েলা ছাড়তে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করেছে: মাচাদো
  • ‎বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মরণ
  • মওলানা ভাসানী মজলুমদের পক্ষে ছিলেন, কখনো আপোষ করেননি: টুকু 
  • বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবসে বিএনপির দুই দিনের কর্মসূচি
  • আজ মওলানা ভাসানীর ১৪৫তম জন্মবার্ষিকী