হাদিকে গুলি করে আওয়ামি লীগ পুনর্বাসন হবে না: রাশেদ প্রধান
Published: 13th, December 2025 GMT
দেশপ্রেমিক হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণকে সবার ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান।
তিনি বলেছেন, “দেশপ্রেমিক হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ আমাদের সবার উপরে আক্রমণ। অগাস্ট মাসের ৫ তারিখ বাংলার পবিত্র মাটি থেকে হিন্দুস্তানি আধিপত্যবাদ এবং আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। হাদিকে গুলি করে হিন্দুস্তানি আওয়ামি লীগ পুনর্বাসন হবে না।”
আরো পড়ুন:
বিএনপির প্রতিবাদ কর্মসূচি: নয়াপল্টনে এসে মিলছে সব পথের মিছিল
গুলি হাদির মাথার ডান দিক দিয়ে ঢুকে বাঁ দিকে বেরিয়ে গেছে: ডিজি
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) পল্টনের শফিউল আলম প্রধান মিলনায়তনে শরিফ ওসমান হাদির সুস্থতা কামনায় জাগপা আয়োজিত দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
রাশেদ প্রধান বলেন, “এক আবু সাঈদ শহীদ হওয়ার পরে লক্ষ আবু সাঈদ গর্জে উঠেছিল। এক রক্তাক্ত হাদিকে দেখে লক্ষ হাদি প্রস্তুত। হিন্দুস্তানি আধিপত্যবাদ ও আগ্রাসন চলবে না, আওয়ামী লীগ পুনর্বাসন চলবে না; পুরাতন জালেম, নতুন জালেম চলবে না। বাংলার বীর ওসমান হাদিকে আমরা রাজপথে অগ্রণী ভূমিকায় ফেরত চাই। আসুন আমরা দোয়া করি, মহান রাব্বুল আলামিন হাদিকে যেন দ্রুত পূর্ণ সুস্থতা দান করে।”
জাগপা মুখপাত্র বলেন, “তফসিল ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হাদির ওপর হামলা প্রমাণ করে দেশে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ এখনো তৈরি হয় নাই। দুই-একজন প্রার্থী বুলেট প্রুফ গাড়ি নিয়ে ঘুরবে, আর বাকিদের কী হবে?”
“জুলাইয়ে লুট হওয়া তেরোশোর অধিক অস্ত্র এখনো উদ্ধার হয় নাই। এভাবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে না। দ্রুততম সময়ের মধ্যে হাদির ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে এবং এই আক্রমণের পিছনে থাকা সকল রাঘব-বোয়ালদের আইনের আওতায় আনতে হবে,” যোগ করেন তিনি।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে জাগপা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য আসাদুর রহমান খান, প্রকাশনা সম্পাদক এস এম জিয়াউল আনোয়ার, যুব জাগপা সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু, সাংঠনিক সম্পাদক ওলিউল আনোয়ার, জাগপা ঢাকা মহানগর যুগ্ন আহ্বায়ক সাব্বির আহাম্মেদ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় বাদ পড়লেন ৪৭ জন, আপিল করেছেন অনেকে
বিভিন্ন অভিযোগ এবং ডোপ টেস্ট (মাদক পরীক্ষা) উতরাতে না পারায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (জকসু) নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন ৪৭ প্রার্থী। প্রার্থিতা ফিরে পেতে তাঁরা রোববার পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন আপিল করেছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে প্রাথমিক তালিকায় থাকা ১৯৪ জন এবং দুই ধাপে আপিলে ফিরে পাওয়া ৯ জনসহ মোট ২০৩ জন থেকে ৪৭ জনকে বাদ দিয়ে চূড়ান্ত তালিকায় ১৫৬ জনকে রাখা হয়।
বাদ পড়াদের মধ্যে ছাত্রদল–সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক ও দুজন নির্বাহী সদস্য প্রার্থী এবং ছাত্র শক্তি সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ প্যানেলের সহকারী সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থীসহ কয়েকজন আলোচিত প্রার্থী রয়েছেন।
চূড়ান্ত তালিকা থেকে সহসভাপতি (ভিপি) পদে ১ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ২ জন, সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ৬ জন, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদে ৪ জন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে ৪ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক পদে ১ জন, আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক পদে ১ জন, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে ২ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১ জন, পরিবহন সম্পাদক পদে ৩ জন, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থী কল্যাণ সম্পাদক পদে ৪ জন, পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক পদে ৩ জন এবং নির্বাহী সদস্য পদে ১৫ জন বাদ পড়েছেন।
ভিপি পদ থেকে বাদ পড়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী চন্দন কুমার দাস। জিএস পদ থেকে বাদ পড়া দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী মোছা. উম্মে মাবুদা এবং দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান টিংকু।
এজিএস পদ থেকে ছয়জন প্রার্থী বাদ পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্র শক্তি সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ প্যানেলের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মো. শাহিন মিয়া। বাকি পাঁচজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন সংগীত বিভাগের শাহরিয়ার রহমান আবির, বাংলা বিভাগের ফাহিম ফয়সাল, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের গৌরাঙ্গ দাস, ফিন্যান্স বিভাগের মো. জহিরুল ইসলাম সোহাগ এবং ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের মো. নাফিউ উদ্দীন জিসান।
শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক পদ থেকে চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী বাদ পড়েছেন। তাঁরা হলেন বাংলা বিভাগের মো. শাহাদাত হোসেন ও মাসুম মিয়া, আইন বিভাগের আবু সাঈদ মো. আকিব এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের মো. ইর্তেজা তাসনীম।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদ থেকেও বাদ পড়েছেন চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাঁরা হলেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মো. জিহাদুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের মো. আশিকুল হক আকাশ, মনোবিজ্ঞান বিভাগের মো. ইমরান হোসেন এবং রসায়ন বিভাগের মো. তানভীর মাহমুদ শিহাব।
স্বাস্থ্য ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক পদে বাদ পড়েছেন মাহমুদুল হাসান নাজমুল নামে স্বতন্ত্র প্যানেলের এক প্রার্থী। তিনি ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী।
আইন ও মানবাধিকারবিষয়ক সম্পাদক পদেও বাদ পড়েছেন এক প্রার্থী। তিনি হলেন ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী অর্ঘ্য দাস।
সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক পদে বাদ পড়েছেন দুজন প্রার্থী। তাঁরা হলেন স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থী লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মেহেদী হাসান ও আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মাঈন আল মুবাশ্বির। ক্রীড়া সম্পাদক পদে বাদ পড়েছেন স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থী আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. তাসনিমুল ইসলাম।
পরিবহন সম্পাদক পদ থেকে তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী বাদ পড়েছেন। তাঁরা হলেন মার্কেটিং বিভাগের মো. আরিফুল ইসলাম আসলাম, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের মাইদুল ইসলাম এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মো. ইমন মিয়া।
সমাজসেবা ও শিক্ষার্থী কল্যাণ সম্পাদক পদ থেকে বাদ পড়েছেন চারজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাঁরা হলেন বাংলা বিভাগের মো. আসিফ মাহমুদ ও মো. সাব্বির হোসেন, মার্কেটিং বিভাগের মো. আসিফ আহম্মদ এবং অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ফাহাদুল ইসলাম।
পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক পদ থেকে বাদ পড়া তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন আইন বিভাগের উমর ফারুক, অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের মো. রওসন উল ফেরদৌস এবং আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মো. শাহরিয়া তামজিদ।
নির্বাহী সদস্য পদ থেকে ১৫ জন প্রার্থী বাদ পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে ছাত্রদল–সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের দুজন হলেন ইতিহাস বিভাগের মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ এবং অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের মনিরুজ্জামান মনির।
বাকি ১৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন পরিসংখ্যান বিভাগের পাভেল আনাম, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের মো. শিহাব উদ্দীন হিফজু ও মো. শের আলী, মার্কেটিং বিভাগের মো. শাহরিয়ার কাদের প্লাবণ, ইংরেজি বিভাগের মো. সিফাত হাসান সাকিব, আইন বিভাগের মো. কামরান সিদ্দিকী ইমরোজ, প্রিন্টমেকিং বিভাগের মো. রাহুল ইসলাম জামিল, লোকপ্রশাসন বিভাগের ইফতে হাসান ইমন, দর্শন বিভাগের আবু সায়েম, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মিজান উদ্দিন মাসুদ ও মো. বাশার আলী, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মো. তাওহিদুল ইসলাম সম্রাট বাবর এবং ইতিহাস বিভাগের জুয়েল মাতুব্বর।
এ বিষয়ে ছাত্রদল–সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ প্যানেলের নির্বাহী সদস্য প্রার্থী ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম আরিফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি শুরু থেকেই তালিকায় ছিলাম, আমার ডোপ টেস্টের ফলাফলও নেগেটিভ ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই জানতে পারি, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় আমার নাম নেই। কেন বাদ দেওয়া হলো, তা–ও আমি জানি না।’
এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, ডোপ টেস্টের ফলাফল পজিটিভ আসায় দুজন এবং সুনির্দিষ্ট অভিযোগের কারণে অন্যদের চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে রোববার পর্যন্ত বাদ পড়া প্রার্থীদের আপিলের সুযোগ আছে।