নির্বাচন ঘিরে গুপ্ত হামলা ও অবৈধ অস্ত্র নিয়ে শঙ্কা
Published: 14th, December 2025 GMT
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে চোরাগোপ্তা হামলা, অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার ও নাশকতার আশঙ্কা আরও প্রবল হচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। পাশাপাশি যানবাহন এবং নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত হওয়া স্থাপনায়ও অগ্নিসংযোগ করে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টাও হতে পারে—এমন আভাসও পেয়েছে পুলিশ।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর পক্ষ থেকে মাঠপর্যায়ের সদস্যদের এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে। আবার মাঠপর্যায় থেকেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে এমন আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল শনিবার রাতে পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) সঙ্গে দেশের সব বিভাগের (রেঞ্জ) ডিআইজি এবং মহানগর পুলিশের কমিশনারদের বৈঠকেও এ–সংক্রান্ত আলোচনা এবং করণীয় নির্ধারণের বিষয়ে পরামর্শ এসেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে।
এই ক্ষেত্রে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন শুক্রবার দিনের বেলায় ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনাকে সতর্কবার্তা হিসেবে দেখছে সরকার। হাদির ওপর গুলির ঘটনার পর ওই দিন রাতে আরও দুটি নাশকতার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে রাজধানীর বাড্ডায় একটি বাসে এবং লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। গতকাল বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত রাজধানীর শান্তিনগর, মৌচাক ও মিরপুরে চারটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনাকে একই সূত্রে দেখছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
পুলিশ ও র্যাবের ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচন বানচাল করতে চায় এমন গোষ্ঠীটি চোরাগোপ্তা হামলা ও নাশকতার মাধ্যমে ভীতি তৈরির চেষ্টা করবে; যার একটা অন্যতম লক্ষ্য নির্বাচনী কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটানো ও ভোটার উপস্থিতি কমানো। ওই গোষ্ঠীর দেশে-বিদেশে পলাতক থাকা একটা অংশের অনলাইনে এ–সংক্রান্ত কিছু আলাপ-আলোচনার উপাদান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে এসেছে। ইন্টারনেটে একটি যোগাযোগ অ্যাপে এ রকম একটি আলোচনায় লক্ষ্যবস্তু হিসেবে ঢাকা ও চট্টগ্রামের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ কারণে সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্কভাবে কাজ করতে বলা হয়েছে।
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২সরকারও এই বিষয়গুলোকে নির্বাচন বানচালের বড় ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভায় হাদির ওপর হামলাকে নির্বাচন বন্ধের অপপ্রয়াস হিসেবে উল্লেখ করে বক্তব্য এসেছে।
এই সভায় মূলত নির্বাচন ঘিরে মানুষের মধ্যে কীভাবে নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা যায়, সেটি গুরুত্ব পেয়েছে। সেখানে ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ফ্যাসিস্ট টেররিস্টদের দমনের’ উদ্দেশ্যে অবিলম্বে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভা শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত বা বানচাল করার যেকোনো অপচেষ্টা অন্তর্বর্তী সরকার কঠোর হস্তে দমন করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সারা দেশে পেশাদার সন্ত্রাসী ও অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনার জন্য মাঠপর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। বড় কোনো ঘটনা ঘটলে সেখানে পুলিশের কোনো গাফিলতি পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট থানার ওসিকে ‘ক্লোজ’ করা হবে—এমন আলোচনাও রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, এ বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে নির্বাচনকেন্দ্রিক সামগ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে। এই নিরাপত্তাব্যবস্থায় জুলাই অভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত থাকার কারণে যাঁরা সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু হয়ে থাকতে পারেন, তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে একটি বিশেষ হটলাইন নম্বর চালুরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
চিন্তা এখন অস্ত্র নিয়েজানা গেছে, গতকাল আইনশৃঙ্খলা–সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠকে এবং আগের দিন শুক্রবার উপদেষ্টা পরিষদের কয়েকজন সদস্য এবং আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের জরুরি বৈঠকে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহারের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। সীমান্ত হয়ে যেন অবৈধ অস্ত্র প্রবেশ করতে না পারে এবং কোনো আসামি পালাতে না পারে, সেটি বিশেষভাবে বলা হয়েছে। অবৈধ পথে সীমান্ত পারাপার বন্ধে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে।
সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উচ্চপর্যায়ের বৈঠকগুলোতে আওয়ামী লীগের শাসনামলে যেসব ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কাছে অস্ত্রের মজুত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করতে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করেছে এমন চিহ্নিত ব্যক্তিদের ধরতে বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া পেশাদার সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে প্রচেষ্টা জোরদারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, অবৈধ অস্ত্রের রুটগুলো চিহ্নিত করা এবং অর্থের জোগানদাতাদের শনাক্তে কাজ শুরু করেছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
এসবের পাশাপাশি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় পুলিশের লুট অস্ত্রগুলো উদ্ধারে জোর দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত হারিয়ে যাওয়া ১ হাজার ৩৩৭টি অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। এর মধ্যে ৪০০টির মতো পিস্তলও আছে।
মাঠপর্যায়ে কঠোর বার্তাঅবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার দাবি এসেছে রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকেও। গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিও এসেছে তাদের কাছ থেকে। সব মিলিয়ে নির্বাচনের সময়কালে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারকে এ বিষয়ে নিয়ে বিশেষভাবে ভাবতে হচ্ছে।
জানতে চাইলে আইজিপি বাহারুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পুলিশের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার, আমরা করব। কোনোভাবেই নির্বাচন বানচালের চেষ্টা সফল হবে না। মাঠপর্যায়ে এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভোটার এবং প্রার্থীরা যেন সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করতে পুলিশ সর্বোচ্চ সচেষ্ট থাকবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ঠপর য য় রক ষ ক র সরক র র ঘটন র ওপর গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
হাদিকে গুলির নিন্দা–প্রতিবাদ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের, নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় উদ্বেগ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন। তারা বলছে, ওসমান হাদির ওপর সশস্ত্র হামলা গণতন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা ও নাগরিক নিরাপত্তার ওপর সরাসরি আঘাত।
আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে বিবৃতি পাঠিয়ে ও নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এসব মন্তব্য করেন ভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও নেতারা। এ ছাড়া নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কয়েকটি দলের নেতারা।
এর আগে দুপুরে রাজধানীর বিজয় নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় ওসমান হাদিকে গুলি করে মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। হাদিকে ‘লাইফ সাপোর্ট’ দেওয়া হয়েছে।
বিক্ষোভ কর্মসূচি বিএনপিরসংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে লন্ডন থেকে ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তারেক রহমান বলেন, দেশ এখন অত্যন্ত সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী প্রতিটি দল ও ব্যক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী হাদির ওপর হামলার প্রতিবাদে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামীকাল শনিবার সারা দেশে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল।
জামায়াত আমিরের উদ্বেগওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা মতভিন্নতার কারণে এ ধরনের সহিংসতা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।’ এ ঘটনার দ্রুত, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করেন শফিকুর রহমান।
এদিকে বিকেল পাঁচটার দিকে ওসমান হাদিকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান শফিকুর রহমান। সেখানে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কেউ যদি আবার বাংলাদেশে নতুন করে ফ্যাসিজম বা সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চান, তাহলে খুব দেরি হবে না যথাযথ জবাব পেতে। জনগণ সব ষড়যন্ত্র রুখে দেবে।
সরকার–পুলিশ প্রশাসনের জবাবদিহি চায় গণসংহতিওসমান হাদির ওপর গুলি চালানোর তীব্র প্রতিবাদ, হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানিয়েছে গণসংহতি আন্দোলন। এক বিবৃতিতে দলটির প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময় ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনা অত্যন্ত আতঙ্কজনক।
অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে যেখানে সরকারের সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করার কথা, সেখানে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো সম্ভব হচ্ছে। সরকার ও পুলিশ প্রশাসনকে এর জন্য জবাব দিতে হবে।
প্রকাশ্যে হুমকি দিলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি: এনসিপিওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে এনসিপি বলেছে, ‘এ হামলা শুধু একজন প্রার্থীর ওপর নয়, গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার হওয়া গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার ওপরও সরাসরি আঘাত।’
ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ওসমান হাদির ওপর হামলার আগে প্রকাশ্যে হুমকি দিলেও সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি বলেও অভিযোগ করেছে এনসিপি। দলটি বলেছে, দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ দেশের জনগণের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালিয়েছে, সশস্ত্র গোষ্ঠী গড়ে তুলেছে। তাদের অবশিষ্ট সন্ত্রাসী বাহিনী এখনো সক্রিয়ভাবে দেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
নির্বাচনের জন্য অশনিসংকেত: ইসলামী আন্দোলনওসমান হাদিকে গুলির ঘটনা নির্বাচনের জন্য অশনিসংকেত হিসেবে দেখছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটি গুলিবর্ষণকারী ও হুকুমদাতাকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান। ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজখবর রাখছেন বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ কারা হয়।
বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়: বাংলাদেশ জাসদওসমান হাদির ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালানোর ঘটনাকে সন্ত্রাসী অপতৎপরতার নগ্ন দৃষ্টান্ত আখ্যা দিয়ে কঠোর ভাষায় এর নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ জাসদ। এক যৌথ বিবৃতিতে দলটির সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া ও সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, ‘নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর একজন প্রার্থীকে লক্ষ্য করে এমন সশস্ত্র হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এটি নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করার জন্য পরিকল্পিত ও সুসংগঠিত ষড়যন্ত্রের অংশ।’ তারা বলেন, নির্বাচনকে আতঙ্কিত ও নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে নেওয়ার জন্যই এই হামলা চালানো হয়েছে—এটি স্পষ্ট।
নিরাপত্তা পরিস্থিতি চরম নাজুক: এবি পার্টিওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি। এক বিবৃতিতে দলটির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, রাজনৈতিক ভিন্নমত দমনে গুলি, হামলা ও সন্ত্রাস কোনো সভ্য দেশে বরদাশতযোগ্য নয়। ওসমান হাদির ওপর সশস্ত্র হামলা গণতন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা ও নাগরিক নিরাপত্তার ওপর সরাসরি আঘাত।
নেতৃদ্বয় ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনা করে আরও বলেন, এই হামলা প্রমাণ করে দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি চরমভাবে নাজুক। নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পারবে কি না, তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন থেকে যায়।
আরও পড়ুনওসমান হাদি ‘লাইফ সাপোর্টে’: ঢাকা মেডিকেলের পরিচালকের দপ্তর৩ ঘণ্টা আগেসুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে: ডাকসু ভিপিত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থী ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনা নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া এবং প্রার্থীদের নিরাপত্তা প্রশ্নে আশঙ্কার সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহসভাপতি (ভিপি) আবু সাদিক কায়েম। এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন।
ফ্যাসিস্টদের দেশি-বিদেশি দোসররাও আগামী নির্বাচন হতে দিতে চায় না মন্তব্য করে সাদিক কায়েম বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি, অতিসত্বর এই গুলিকারীকে চিহ্নিত করতে হবে। একই সঙ্গে এ ঘটনার পেছনের রাজনৈতিক মোটিভ উদ্ঘাটন করে জাতিকে জানাতে হবে।