মোবাইলে ভিডিও দেখানোর কথা বলে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ
Published: 14th, December 2025 GMT
শরীয়তপুরের জাজিরায় মোবাইল ফোনে ভিডিও দেখানোর কথা বলে পাঁচ বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে নাজমুল খাঁ (২৩) নামে যুবকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্তকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয়রা।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত নাজমুল খাঁ আব্দুর বেপারী কান্দি এলাকার আব্দুর রশিদ খাঁর ছেলে।
আরো পড়ুন:
এমবিবিএস ও বিডিএস ভর্তি পরীক্ষা শুক্রবার, বাড়ল সময়
ডিজির সঙ্গে তর্ক: নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন ডা.
স্বজনরা জানায়, শিশুটি শনিবার বিকেলে বাড়ির পাশে খেলতে যায়। নাজমুল তাকে মোবাইল ফোনে ভিডিও দেখানোর কথা বলে ঘরে ডেকে নেয় এবং ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ ওঠে।
মেয়েকে অনেকক্ষণ দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন তার মা। পরে তিনি বাড়ির পাশে শিশুটিকে দেখতে পান। প্যান্টে রক্ত দেখে মেয়ের কাছে ঘটনাটি জানতে চান তিনি। একপর্যায়ে শিশুটি তার মাকে সম্পূর্ণ ঘটনা জানায়। শিশুটিকে প্রথমে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে পাঠান কর্তব্যরত চিকিৎসক। ঘটনাটি জানাজানি হলে অভিযুক্ত নাজমুলকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা।
ভুক্তভোগীর বাবা বলেন, “মেয়ে বাসায় ফেরার পর পোশাকে রক্তের দাগ দেখে তার মা বিষয়টি জানতে চান। তখন মেয়ে জানায়, খেলতে যাওয়ার সময় নাজমুল তাকে ডেকে নিয়ে যায় এবং তার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করে। আমার মেয়ের সঙ্গে সংঘটিত ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।”
সদর হাসপাতালের চিকিৎসক লিমিয়া সাদিনা বলেন, “মেয়েটিকে সেক্সুয়াল হ্যারাজমেন্ট করা হয়েছে এমন অভিযোগে নিয়ে আসা হয়। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাকিটা বলতে পারব।”
জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালেহ আহম্মেদ বলেন, “আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। শিশুটিকে জাজিরা উপজেলা হাসপাতালে পাঠাই। সেখানে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। স্থানীয়রা অভিযুক্তকে গণধোলাই দিলে পুলিশ তাকে নিয়ে আসে। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর আটক অভ য গ
এছাড়াও পড়ুন:
সেন্ট মার্টিনে যেতে পর্যটকের চাপ, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব টিকিট আগাম বিক্রি
সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পর্যটকের চাপ বেড়েছে। কক্সবাজার শহর থেকে প্রতিদিন ছয়টি জাহাজে প্রায় দুই হাজার পর্যটক দ্বীপটিতে যাচ্ছেন। মৌসুমের শুরুতে দৈনিক যেতেন ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ জন। জাহাজমালিকেরা জানিয়েছেন, পর্যটকের চাপে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সব জাহাজের টিকিট আগাম বিক্রি হয়ে গেছে।
জাহাজমালিকদের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন অন্তত তিন হাজার পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তবে সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দৈনিক দুই হাজারের বেশি পর্যটক বহনের অনুমতি নেই। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই নৌপথে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।
গত ১৩ দিনে অন্তত ২১ হাজার পর্যটক সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করেছেন। এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমভি বার আউলিয়া, কেয়ারি সিন্দাবাদ ও কেয়ারি ক্রুজের পরিচালকেরা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত টিকিট বিক্রি শেষ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জাহাজমালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনো জাহাজের টিকিট অবিক্রীত নেই। এমভি কর্ণফুলী জাহাজের টিকিট আগামী ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত অগ্রিম বিক্রি হয়ে গেছে। অন্য পাঁচটি জাহাজের প্রায় ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।
এর আগে গত ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য সেন্ট মার্টিন দ্বীপ উন্মুক্ত করা হয়। তবে নভেম্বর মাসে রাতযাপনের অনুমতি না থাকা ও জাহাজ চলাচল সীমিত থাকায় সে মাসে কোনো পর্যটক দ্বীপে যাননি। চলতি ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাতযাপনের সুযোগ রাখায় পর্যটক বেড়েছে।
কক্সবাজার হোটেল-গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্র ও শনিবার কক্সবাজার সৈকতে অন্তত দুই লাখ পর্যটক এসেছেন। তাঁদের অনেকেরই সেন্ট মার্টিন যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। কিন্তু আসনসংখ্যা সীমিত হওয়ায় সেই ইচ্ছা অনেকের পূরণ হয়নি।
কঠোর নজরদারিতে পর্যটকসেন্ট মার্টিন যেতে পর্যটকদের বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। নির্দেশনা অনুযায়ী, বিআইডব্লিউটিএ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান সেন্ট মার্টিনে চলাচল করতে পারবে না। পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে।
এ ছাড়া দ্বীপের পরিবেশ রক্ষায় রাতের বেলায় সৈকতে আলো জ্বালানো, উচ্চ শব্দ, বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা কেনাবেচা, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ সব ধরনের মোটরচালিত যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহারেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয় উপপরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা প্রথম আলোকে বলেন, দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের ১২ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কিউআর কোড সংযুক্ত টিকিট ছাড়া কাউকে জাহাজে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। দৈনিক দুই হাজারের বেশি পর্যটকও যেতে পারবেন না। যাত্রীরা প্লাস্টিক বা পলিথিন বহন করছেন কি না, তা জাহাজে ওঠার আগেই তদারকি হচ্ছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, সেন্ট মার্টিন যাতায়াত ও দ্বীপে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করছে। পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণেও নজরদারি চলছে।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৪ জানুয়ারি বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন অনুযায়ী, দ্বীপসংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের ১ হাজার ৭৪৩ বর্গকিলোমিটার এলাকাকে সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করে পরিবেশ মন্ত্রণালয়।