বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানার পৃথক দুই হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে ৩ দিন করে ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এছাড়া যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় পুলিশের সাবেক প্রধান (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ৩ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানসহ ৯ জনকে নতুন করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

আজ বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো.

আব্দুল ওয়াহাব শুনানি শেষে আসামিদের রিমান্ড ও গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।

এদিন আনিসুল ও মামুনকে আদালতে হাজির করে জিহাদ হোসেন হত্যা মামলায় ৫ দিন ও ওয়াসিম শেখ হত্যা মামলায় ৩ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা। আসামি পক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন।

জিহাদ হোসেন হত্যা মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর শনির আখড়া এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেন জিহাদ হোসেন (২২)। এরপর আসামিদের ছোড়া গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা নুরুল আমিন মোল্লা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৮৫ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করে গত ৩ সেপ্টেম্বর যাত্রাবাড়ী থানায় একটা হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ওয়াসিম শেখ হত্যা মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে গত ১৮ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় আন্দোলনে অংশ নেন ব্যবসায়ী ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী মো. ওয়াসিম শেখ। এদিন সন্ধ্যা ৭টায় আসামিদের ছোড়া গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী রেহানা আক্তার গত ২৮ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪৩ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন।

এদিকে যাত্রাবাড়ী থানার পৃথক মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মো. নুরুজ্জামান আহম্মেদ, সাবেক শিক্ষা ও সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণিজ্য উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পুলিশের সাবেক আইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অপরদিকে গুলশান থানার মামলায় সাবেক ওসি মাজহারুল ইসলাম, ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল ও ভোলা-৪ আসনের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, ঢাকা-৭ আসনের সাবেক এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিমকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব ক আইজ প স ব ক আইনমন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

না’গঞ্জ আদালতের এজলাসের প্রবেশমুখে সাবেক আইনমন্ত্রীকে মারধর (ভিডি

নারায়ণগঞ্জে আদালতের এজলাসের প্রবেশমুখে বিক্ষুব্ধ জনতা ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মারধরের শিকার হয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) পৌনে তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত হাফেজ সোলাইমান হত্যা মামলায় রিমাণ্ড শুনানির জন্য নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুদ্দিন কাদিরের আদালতে তোলা হয় তাকে বলে জানান আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান।

তিনি বলেন, হত্যা মামলাটিতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমাণ্ড আবেদন করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শুনানি শেষে আদালত চারদিনের রিমাণ্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক গণমাধ্যমকর্মী বলেন, দুপুরে আদালতে তোলার সময় বাইরে  বিএনপন্থী আইনজীবীরা ‘আনিসুল হকের ফাঁসি’ চেয়ে স্লোগান দেন। শুনানি শেষে এজলাস থেকে বের হওয়ার সময় প্রবেশমুখে তাকে চর-থাপ্পর দেন বিক্ষুব্ধ জনতা ও বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। 

এই সময় আনিসুল হকের মাথায় পুলিশের হেলমেট ছিল। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা সাবেক এ আইনমন্ত্রীকে নিয়ে দৌঁড়ে আদালতের বারান্দা ত্যাগ করেন এবং একইভাবে তাকে দ্রুততার সাথে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।

গণমাধ্যমকর্মীদের ধারণ করা ভিডিওতেও এজলাসের প্রবেশমুখে আনিসুল হককে চর-থাপ্পর দিতে দেখা যায়। 

প্রিজন ভ্যানে থাকা অবস্থায়ও বাইরে আদালত প্রাঙ্গণে ‘ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই, আনিসুল হকের ফাঁসি চাই’ বলে স্লোগন দিতে থাকেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। 

শুনানির আগে ও পরে বিএনপির মিছিলে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাবেক সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির ও আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধানকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় বলেও জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান বলেন, এজলাস থেকে বের হওয়ার পর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি হয়, পরে পুলিশ দ্রুততার সাথে আসামিকে প্রিজন ভ্যানে তোলে। কিন্তু সেখানে কেউ চর-থাপ্পর দিয়েছে এমনটা আমার নজরে পড়েনি।

যোগাযোগ করা হলে ‘আনিসুল হককে উৎসুক জনগণ মারধর করেছে’ বলে জানিয়ে এতে বিএনপন্থী আইনজীবীদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সরকার হুমায়ূন কবির।

তিনি আরও বলেন, ফাঁসির দাবিতে মিছিল করছি আমরা কিন্তু চর-থাপ্পর দিছে জনগণ। আইনজীবীরা কেন মারবে, তাদের প্রতি মানুষের ক্ষোভ আছে, সেই ক্ষোভ থেকে জনগণ তাকে মারধর করেছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • না’গঞ্জ আদালতের এজলাসের ভেতর সাবেক আইনমন্ত্রীকে মারধর (ভিডিও)
  • না’গঞ্জ আদালতের এজলাসের প্রবেশমুখে সাবেক আইনমন্ত্রীকে মারধর (ভিডিও)
  • না’গঞ্জ আদালতের এজলাসের প্রবেশমুখে সাবেক আইনমন্ত্রীকে মারধর (ভিডি
  • নারায়ণগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে কিল-ঘুষি
  • নারায়ণগঞ্জে আদালত প্রাঙ্গণে সাবেক আইনমন্ত্রীকে কিল-ঘুষি
  • নারায়ণগঞ্জের আদালতে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে কিলঘুষি