যাতায়াতে সময় বাড়ছে ৯ আন্তনগর ট্রেনের
Published: 1st, March 2025 GMT
চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় যেতে চট্টলা এক্সপ্রেস ট্রেনের এখন সময় লাগে ৬ ঘণ্টা ১০ মিনিট। এই আন্তনগর ট্রেন সকাল ছয়টায় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। পৌঁছায় দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে। তবে রেলের নতুন সময়সূচিতে এই ট্রেনের গন্তব্যে পৌঁছার সময় বাড়তে যাচ্ছে। তখন পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে। অর্থাৎ আগের চেয়ে বাড়তি ৩০ মিনিট সময় লাগবে যাত্রীদের।
শুধু চট্টলা এক্সপ্রেস নয়, রেলওয়ের নতুন সময়সূচি অনুযায়ী গন্তব্যে যাতায়াতে আরও আট জোড়া (১৬টি) আন্তনগর ট্রেনের সময় বাড়ছে। অবশ্য আগের চেয়ে সময় কমবে ৯ জোড়া ট্রেনের। আর গন্তব্যে পৌঁছার ক্ষেত্রে সময়ের পরিবর্তন হবে না ১১ জোড়া ট্রেনের।
সম্প্রতি রেলওয়ে নতুন সময়সূচি চূড়ান্ত করেছে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল। রেলের ভাষায় এই সময়সূচিকে ‘ওয়ার্কিং টাইম টেবিল’ বলা হয়। এই সময়সূচি মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে বাস্তবায়িত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান রেলওয়ের কর্মকর্তারা। বর্তমানে ট্রেন চলাচল করছে ওয়ার্কিং টাইম টেবিল-৫৩ অনুযায়ী। যা ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে।
ট্রেন পরিচালনার সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে দুটি অঞ্চলে বিভক্ত। একটি অঞ্চল যমুনা নদীর পূর্ব পাশে, যা পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে (ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট-ময়মনসিংহ বিভাগ) হিসেবে পরিচিত। আর যমুনা নদীর পশ্চিম পাশ নিয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে গঠিত (রাজশাহী-রংপুর-খুলনা বিভাগ)। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের অধীন ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন রুটে বর্তমানে ২৯ জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে।
নতুন সময়সূচিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট রুটে এক জোড়া করে বিরতিহীন আন্তনগর, ঢাকা-নোয়াখালী রুটে এক জোড়া আন্তনগর ট্রেন চলাচলের সময় রাখা হয়েছে। তবে ইঞ্জিন ও কোচ-সংকটের কারণে শুরুতে তা বাস্তবায়নের সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা। তবে কোচ ও ইঞ্জিন পেলে তা চালু করা হবে।
সময় বেশি লাগবে ৫ থেকে ৪০ মিনিটনতুন সময়সূচি অনুযায়ী, আগের চেয়ে সবচেয়ে বেশি বাড়তি সময় লাগবে জামালপুর এক্সপ্রেসের। ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে চলাচলরত জামালপুর এক্সপ্রেস বর্তমানে সকাল ১০টায় ঢাকা স্টেশন ছাড়ে। ভূঞাপুরে পৌঁছায় বিকেল চারটায়। অর্থাৎ সময় লাগে ছয় ঘণ্টা। তবে নতুন সময়সূচি অনুযায়ী লাগবে ৬ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। এদিকে ভূঞাপুর থেকে আগে বিকেল সাড়ে চারটায় ছাড়লেও এখন ছাড়বে বিকেল সোয়া পাঁচটায়।
ঢাকা থেকে তারাকান্দির উদ্দেশে যমুনা এক্সপ্রেস এখন ছেড়ে যায় বিকেল পৌনে পাঁচটায়। পৌঁছায় রাত ১০টা ৫০ মিনিটে। সময় লাগে ছয় ঘণ্টা পাঁচ মিনিট। সামনে লাগবে ৬ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট। ঢাকা-তারাকান্দি রুটে চলাচলরত আরেক আন্তনগর ট্রেন অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসের বাড়তি সময় লাগবে ১০ মিনিট। এখন ঢাকা থেকে ছাড়ে বেলা সাড়ে ১১টায়, পৌঁছায় বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে। আর নতুন সময়ে ছাড়বে বেলা সাড়ে ১১টায়, পৌঁছাবে বিকেল ৫টায়।
চট্টগ্রাম থেকে চাঁদপুরগামী মেঘনা এক্সপ্রেস এখন ছাড়বে বিকেল সোয়া পাঁচটায়। পৌঁছাবে ৯টা ২৫ মিনিটে। অর্থাৎ সময় লাগবে ৪ ঘণ্টা ১০ মিনিট। অবশ্য বর্তমানে সময় লাগে চার ঘণ্টা। ঢাকা থেকে দেওয়ানগঞ্জগামী তিস্তা এক্সপ্রেসের এখন সময় লাগে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা। নতুন সময়সূচিতে লাগবে ৫ ঘণ্টা ৫০ মিনিট। এখনকার মতো সকাল সাড়ে ৭টায় ট্রেন ছাড়বে, তবে পৌঁছাবে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে।
ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের এখন সময় লাগে পাঁচ ঘণ্টা পাঁচ মিনিট। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী এই ট্রেন ছাড়বে বেলা সোয়া ১টায়, পৌঁছাবে ৬টা ৪০ মিনিটে। অর্থাৎ সময় লাগবে ৫ ঘণ্টা ২৫ মিনিট। ঢাকা-মোহনগঞ্জ রুটের আরেক আন্তনগর ট্রেন হাওর এক্সপ্রেসের বাড়তি সময় লাগবে ১০ মিনিট করে।
ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটে চলাচলরত কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেসের গন্তব্যে পৌঁছার সময় বাড়ানো হয়েছে পাঁচ মিনিট। আগের মতো কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছাড়বে বিকেল চারটায়। তবে ঢাকায় পৌঁছাবে পাঁচ মিনিট দেরিতে রাত আটটায়।
কম সময়ে পৌঁছাবে যেসব ট্রেননতুন সময়সূচি অনুযায়ী ৯ জোড়া ট্রেনের গন্তব্যে পৌঁছার সময় কমবে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী গোধূলী এক্সপ্রেস বেলা ৩টায় ছেড়ে রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে পৌঁছায়। ভবিষ্যতে ১০ মিনিট কমে পৌঁছাবে রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে।
চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেসের গন্তব্যে পৌঁছাতে ৩৫ মিনিট কম সময় লাগবে। নতুন সময়সূচি অনুযায়ী সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে পৌঁছাবে বেলা ৩টা ৫৫ মিনিটে। এখন পৌঁছায় বিকেল সাড়ে চারটায়।
মহানগর এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম স্টেশন ছাড়বে দুপুর সাড়ে ১২টায়, ঢাকায় পৌঁছাবে ৬টা ৪০ মিনিটে। আগের চেয়ে পাঁচ মিনিট কম সময় লাগবে গন্তব্যে পৌঁছাতে। একইভাবে তূর্ণা এক্সপ্রেস বেলা দেড়টায় ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছাবে বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে। এখন পৌঁছায় ৫টা ১৫ মিনিটে। চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে বিজয় এক্সপ্রেস জামালপুরে পৌঁছাবে ১০ মিনিট কম সময়ে, সন্ধ্যা ৬টায়। এই ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে ছাড়বে সকাল সোয়া নয়টায়।
সিলেট থেকে ঢাকাগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস আগের মতোই দুপুর ১২টায় ছাড়বে। তবে আগের চেয়ে ১০ মিনিট কমে সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় পৌঁছাবে। আরেক আন্তনগর ট্রেন কালনী এক্সপ্রেস ও উপবন এক্সপ্রেস সিলেট থেকে ঢাকায় পৌঁছাবে আগের চেয়ে পাঁচ মিনিট কম সময়ে। সিলেট থেকে ট্রেন দুটি ছাড়বে যথাক্রমে সকাল সোয়া ৬টায় এবং রাত সাড়ে ১১টায়। কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী এগারসিন্ধুর প্রভাতী ছাড়বে সকাল সাড়ে ৬টায়, ঢাকায় পৌঁছাবে সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে। সময় কমবে পাঁচ মিনিট।
এদিকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস এখন সকাল সাড়ে সাতটায় ছাড়লেও পরে ছাড়বে সকাল সাতটায়। আর সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ছাড়বে বিকেল পাঁচটা থেকে। এখন ছাড়ে বিকেল পৌনে পাঁচটায়। চাঁদপুরগামী মেঘনা এক্সপ্রেসের যাত্রার সময় ৪৫ মিনিটে এগিয়ে এনে বিকেল সোয়া ৫টা করা হয়েছে। কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী কক্সবাজার এক্সপ্রেসের যাত্রার সময় ১০ মিনিট এগিয়ে আনা হয়েছে। এখন দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে ছাড়ে, নতুন সময়ে ছাড়বে দুপুর সাড়ে ১২টায়।
রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওপিএস) মোহাম্মদ শহিদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন রুটে যাতায়াতের সময় কমানো হয়েছে। তবে ময়মনসিংহ অঞ্চল রেললাইন ও সেতুর সংস্কারকাজ চলছে। এ কারণে ওই অঞ্চলের কয়েকটি ট্রেনের গন্তব্যে পৌঁছতে আগের চেয়ে বেশি সময় লাগবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ন ট কম সময় দ প র ১২ট ক শ রগঞ জ ৪৫ ম ন ট ৪০ ম ন ট ১০ ম ন ট ৫০ ম ন ট র লওয় র সময় ল গ এখন ছ ড় সময় ব ড় সময় কম অন য য় র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
গৌহাটি টেস্টে ‘লাঞ্চের আগে টি-ব্রেক’! জানুন কেন এই ব্যতিক্রম
টেস্ট ক্রিকেটের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য অনুযায়ী দিনের বিরতিগুলোর ক্রম থাকে- টস, লাঞ্চ, টি এবং শেষে স্টাম্পস। কিন্তু আসন্ন ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় টেস্টে সেই নিয়ম ভেঙে দেখা যাবে এক অভিনব দৃশ্য। ২২ নভেম্বর গৌহাটির বারসাপারা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হতে যাওয়া এই টেস্টে লাঞ্চের আগে দেওয়া হবে টি-ব্রেক। ভারতীয় টেস্ট ইতিহাসে যা ঘটছে প্রথমবারের মতো।
কেন লাঞ্চের আগে টি-ব্রেক?
গৌহাটির বারসাপারা স্টেডিয়াম ভারতের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত। যেখানে সূর্যোদয় হয় দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে অনেক আগে। ফলে সন্ধ্যা নেমেও আসে তাড়াতাড়ি। এই প্রাকৃতিক সময়ের পার্থক্যের কারণে দিনের পূর্ণ ৯০ ওভার খেলা শেষ করা প্রায়ই কঠিন হয়ে পড়ে। তাই খেলার সময় সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগাতে এবং আলো নিভে যাওয়ার আগেই দিনের খেলা শেষ করতে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) ও ক্রিকেট সাউথ আফ্রিকা (সিএসএ) যৌথভাবে বিরতির সময়সূচিতে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আরো পড়ুন:
রোহিতের সেঞ্চুরির ‘হাফ-সেঞ্চুরি’, ঢুকলেন এলিট ক্লাবে
রশিদ-জাম্পাকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের রিশাদ
নতুন সময়সূচি:
নতুন সূচি অনুযায়ী ম্যাচ শুরু হবে সকাল ৯টায়। যা ভারতের স্বাভাবিক টেস্ট সময়ের (সকাল ৯টা ৩০ মিনিট) চেয়ে আধঘণ্টা আগে।
প্রথম সেশন: সকাল ৯টা থেকে ১১টা,
টি-ব্রেক: সকাল ১১টা থেকে ১১টা ২০ পর্যন্ত (২০ মিনিট),
দ্বিতীয় সেশন: সকাল ১১টা ২০ থেকে দুপুর ১টা ২০ পর্যন্ত,
লাঞ্চ ব্রেক: দুপুর ১টা ২০ থেকে ২টা পর্যন্ত (৪০ মিনিট),
শেষ সেশন: দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
এতে সূর্যাস্তের আগেই খেলা শেষ করা সম্ভব হবে। আবার দর্শকরাও পাবেন দিনের পূর্ণ খেলার স্বাদ।
ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে এই পরিবর্তন নিঃসন্দেহে এক অভিনব অধ্যায়, যা প্রমাণ করে খেলার সৌন্দর্য যেমন ঐতিহ্যে, তেমনি তা সময়ের প্রয়োজনেও অভিযোজিত হয়।
ঢাকা/আমিনুল