শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ে কাংশা ইউনিয়নের দুটি এলাকায় বনভূমিতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আগুন পাহাড়ের বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে দেখে স্থানীয়রা খবর দেন বন বিভাগকে। বনের বড় একটি অংশ পুড়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে জীববৈচিত্র্য।
কয়েক দিন ধরে ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের কাংশা ইউনিয়নের হালচাটি ও গান্ধীগাঁও এলাকার বিস্তীর্ণ বনভূমি পুড়ে যাচ্ছে। এতে জঙ্গলে বসবাস করা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণী ও বনজ গুল্মলতা পুড়ে বনের প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রতিবছর এই মৌসুমে যেন বন পোড়ানোর মচ্ছব চলে। কে যে বনে আগুন দেয়, তা কেউ জানতেও পারে না।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, কিছুদিনের মধ্যেই বনের গাছ নিলামে বিক্রি করা হবে। বনের যেসব অংশীজন রয়েছেন, তারাই গাছ কাটার সুবিধার্থে এ আগুন লাগিয়ে দেন। প্রতিবছর এই সময়ে আগুন লাগে এসব বনে।
পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন ভয়েসের সভাপতি রফিক মজিদ বলেন, কতিপয় দুর্বৃত্ত ও বন বিভাগের কিছু কর্মচারী বনকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে প্রতিবছর আগুন দিয়ে থাকে। যেন বনায়ন না হয়। কারণ বনায়ন হলে অপরাধীরা অপরাধ করতে পারবে না।
রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল করিমের ভাষ্য, ১০-১৫টি স্পটের অগুন নেভানো হয়েছে। মাইকিং করে স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে বনের ভেতরে তারা যেন ধূমপান থেকে বিরত থাকেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আগ ন
এছাড়াও পড়ুন:
পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করল পাকিস্তান-সৌদি আরব
পাকিস্তানের ওপর কেউ হামলা চালালে সৌদি আরব তাদেরকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে। আবার সৌদি আরবের ওপর কেউ আগ্রাসন চালালে পাকিস্তানও সৌদি আরবকে রক্ষায় এগিয়ে আসবে। ঠিক এমনই একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সৌদি আরব ও পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তান।
জিও নিউজের খবর অনুসারে, বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের সৌদি আরব সফরের সময় এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে শাহবাজের বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে এ চুক্তির কথা জানানো হয়।
আরো পড়ুন:
এক সপ্তাহে সৌদি আরবে ২০ হাজারের বেশি প্রবাসী গ্রেপ্তার
২০ বছর কোমায় থাকার পর মারা গেলেন সৌদির ‘ঘুমন্ত যুবরাজ’
চুক্তি স্বাক্ষরের পর উভয় দেশ একটি যৌথ বিবৃতিতে জানায় যে, ভ্রাতৃত্ব, ইসলামিক সংহতি ও অভিন্ন কৌশলগত স্বার্থের ভিত্তিতে এবং প্রায় আট দশকের দীর্ঘ অংশীদারত্বের ওপর দাঁড়িয়ে দুই পক্ষ কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
ক্রাউন প্রিন্সের আমন্ত্রণেই শরিফ সৌদি আরব সফরে গেছেন বলেও তাদের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সৌদি আরবের সঙ্গে হওয়া এই প্রতিরক্ষা চুক্তির ফলে এখন ‘এক দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসনকে উভয়ের বিরুদ্ধে আগ্রাসন’ বিবেচনা করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা এই চুক্তিকে 'ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন অগ্রগতি' বলে অভিহিত করেছেন। তাদের মতে, এটি পাকিস্তান ও সৌদি আরবের সম্পর্ককে আনুষ্ঠানিক নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতিতে উন্নীত করেছে। তারা বলছেন যে, এই পদক্ষেপ কেবল পাকিস্তান-সৌদি সম্পর্ককে দৃঢ় করছে না, বরং দক্ষিণ এশিয়া এবং মুসলিম বিশ্বের জন্যও এর গুরুত্ব রয়েছে। এটি পাকিস্তানকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষার সবচেয়ে সক্ষম মুসলিম শক্তি হিসেবে তুলে ধরেছে।
বিশ্লেষকরা আরও বলছেন যে, সাম্প্রতিক আঞ্চলিক অস্থিরতা, ইসরায়েলের হামলা, দোহা সম্মেলন এবং আরব বিশ্বে সার্বভৌমত্ব নিয়ে উদ্বেগ বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে এই চুক্তির তাৎপর্য অনেক বেশি। এটি প্রমাণ করে যে, বর্ধিত হুমকির সময়ে সৌদি আরব পাকিস্তানকে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসেবে বিশ্বাস করছে।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেখানো হয়, চুক্তি স্বাক্ষরের পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে আলিঙ্গন করতে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির, যাকে দেশটির সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে দেখা হয়।
ঢাকা/ফিরোজ