পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের আগে ট্রাম্প বললেন, ‘অনেক বিষয়ে’ আমরা একমত হয়েছি
Published: 18th, March 2025 GMT
ইউক্রেন শান্তিচুক্তির বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এরই মধ্যে ‘অনেক বিষয়ে’ একমত হওয়ার কথা জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শান্তিচুক্তি নিয়ে আজ মঙ্গলবার এই দুই নেতার বহুল প্রত্যাশিত ফোনালাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এর কয়েক ঘণ্টা আগে ট্রাম্প এ কথা জানান।
নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় আজ সকালে তিনি পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন।
আরও পড়ুনপুতিন কি ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবেন১৪ মার্চ ২০২৫ট্রাম্প লিখেছেন, ‘প্রতি সপ্তাহে উভয় পক্ষের আড়াই হাজার সেনাসদস্যের মৃত্যু হচ্ছে। এটি এখনই বন্ধ হওয়া উচিত। আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছি।’
এর আগে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি যেন একটি শান্তিচুক্তি করা যায়। যুদ্ধবিরতি ও একটি শান্তিচুক্তির জন্য আমরা কাজ করছি।’
আরও পড়ুনরাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে শিগগির কথা বলবেন ট্রাম্প-পুতিন১৬ মার্চ ২০২৫এদিকে পুতিন যে শান্তিচুক্তিতে আগ্রহী, সে বিষয়ে তাঁকে প্রমাণ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে রাজি হওয়ায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ‘সাহসের’ প্রশংসা করেছেন। একই ধরনের কাজ করতে তিনি পুতিনের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে মাখোঁ লিখেছেন, ‘অনেক মৃত্যু হয়েছে। অনেক জীবন ধ্বংস হয়েছে। অনেক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে। বন্দুকের শব্দ অবশ্যই থামাতে হবে।’
যুক্তরাজ্যের আইনপ্রণেতাদের সামনে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন, পুতিনকে এখন পূর্ণাঙ্গ ও শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে হবে। শান্তিচুক্তি নিয়ে পুতিনের মধ্যে আন্তরিকতার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে ট্রাম্প-পুতিনের ফোনালাপের আগমুহূর্তে বেশ উৎসাহব্যঞ্জক বার্তা দিয়েছে হোয়াইট হাউস। গতকাল সোমবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সাংবাদিকদের বলেন, পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় শান্তিচুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করতে ট্রাম্প ‘দৃঢ়প্রতিজ্ঞ’।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশকে ‘অশ্বডিম্ব’ বললেন সিপিবি সভাপতি
আট মাস আলোচনার পর জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে সুপারিশ দিয়েছে, তাকে ‘অশ্বডিম্ব’ বলেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন।
‘জগাখিচুড়ি মার্কা’ কমিশনের সুপারিশের পর পরিস্থিতি জটিলতার দিকে মোড় নেওয়ার দিকটি নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আট মাস আলোচনার পর একটা অশ্বডিম্বের মতো একটা অবস্থা।’
আজ শনিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে এক সংলাপে ‘পলিটিকস ল্যাব: পাবলিক ডায়ালগ’ শীর্ষক সংলাপে এ কথা বলেন সাজ্জাদ জহির। এ সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)।
তরুণ রাজনীতিকদের মধ্যে মতাদর্শভিত্তিক সংলাপ ও গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে জার্মান ফাউন্ডেশন ফ্রেডরিখ এবার্ট স্টিফটুং (এফইএস)-এর সহযোগিতায় ‘পলিটিকস ল্যাব’ শিরোনামে চারটি ধারাবাহিক কর্মশালা করেছে সিজিএস। তার সমাপনী অনুষ্ঠান হিসেবে আজকের সংলাপ হয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে হস্তান্তরের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে তা নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। নানা প্রশ্নে বিভিন্ন দলের আপত্তির বিষয়গুলো সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়ার তফসিলে না থাকা নিয়ে যেমন সমালোচনা হচ্ছে, আবার গণভোটের সময় নিয়েও দলগুলোর মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে।
এই সংকট তৈরির জন্য ঐকমত্য কমিশনকে দায়ী করে সাজ্জাদ জহির বলেন, ‘এটার সমাধানটা কী? এই গণভোটের সমাধানটা কী? জুলাই সনদ কীভাবে বাস্তবায়ন হবে? সে বিষয়ে কোনো দিকনির্দেশনা কিন্তু নেই। মানে একধরনের হাওয়ার ওপরে সবকিছু চলছে। এখানে ৮৪টা পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ২০টাতে একমত হয়েছে, বাকিগুলোতে একমত হয়নি। তাহলে কোন বিষয়ে ভোটটা হবে।’
জুলাই সনদে স্বাক্ষর না করা সিপিবি সভাপতি বলেন, ‘আমরা দেখলাম জুলাই সনদে স্বাক্ষর হলো। এরপর সর্বশেষ সংস্কার কমিশন তারা আবার আরেকটা খেলা খেলল এখানে। দেখেন কী অবস্থা! তারা বলছে যে নোট অব ডিসেন্ট কিছুই থাকবে না। ভিন্ন মত থাকবে না। আমার তো ভিন্নমত আছে, কেন থাকবে না?’
গণভোট নিয়ে তিনি বলেন, ‘সংবিধানে কোথাও গণভোটের কোনো বিধান নেই। একটা আছে যেটা ১৪২ ধারা। যেটা নির্বাচিত সংসদে যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে মতভেদ তীব্রতর হয়, তাহলে সেই বিষয়ের ওপরে নির্বাচিত সংসদ জনগণের আহ্বান করতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে গণভোট সংবিধানসম্মত নয়।’
সিপিবির সভাপতি বলেন, এসব জটিলতা এড়াতে প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার করে দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা নিতে গত বছরের অক্টোবর মাসে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছিলেন। তবে ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে’ সরকার সেটি শোনেনি।