প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৯০ টাকার বেশি নাকি কম হবে, তা নিয়ে সরকার ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আজ মঙ্গলবারও বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে দর-কষাকষি হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে আগামীকাল বুধবার আবার উভয় পক্ষ বৈঠকে বসছে। আশা করা হচ্ছে, কাল একটা সুরাহা হবেই। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণের জন্য সচিবালয়ে আজ দুপুরে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের ৬ সদস্যের একটি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খান ও বাণিজ্যসচিব মো.

মাহবুবুর রহমান।

প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৮ টাকা এবং খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ১৩ টাকা করে বাড়াতে চেয়ে ভোজ্যতেল পরিশোধন কারখানাগুলোর সমিতি ঈদের আগের শেষ কর্মদিবসে ট্যারিফ কমিশনে চিঠি দেয়। ঈদের পর প্রথম অফিস খোলার দিনে গত রোববার এ নিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বৈঠক করলেও কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি। সে বৈঠকের ধারাবাহিকতায় আজও বৈঠক হয়। যদিও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি বৈঠক থেকে।

পবিত্র রমজান মাসে মানুষকে সুরক্ষা দিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পক্ষ থেকে আমদানি পর্যায়ে ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্ক-কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। সদ্য সমাপ্ত মার্চ মাসে এ অব্যাহতির মেয়াদ শেষ হয়েছে। ভোজ্যতেল পরিশোধন কারখানা সমিতির দাবি হচ্ছে, শুল্ক-কর অব্যাহতির মেয়াদ যেহেতু শেষ হয়ে গেছে ফলে দাম বৃদ্ধি ছাড়া তাদের উপায় নেই। অব্যাহতি বজায় থাকলে দাম বাড়াবেন না তাঁরা।

কারখানার মালিকদের দাবির আগেই অবশ্য ভোজ্যতেলে আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর রেয়াতের মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধির সুপারিশ করে এনবিআরকে চিঠি দেয় ট্যারিফ কমিশন। কিন্তু এনবিআর এ ব্যাপারে চুপ রয়েছে।

যোগাযোগ করলে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান এ নিয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছয় মাস ধরে ভোজ্যতেলের আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। লম্বা সময় এ ধরনের সুযোগ বজায় রাখার বাস্তবতায় এনবিআর নেই। আপাতত কর অব্যাহতির পক্ষে থাকাটা আমাদের জন্য কঠিন।’

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ভোজ্যতেলের আমদানি পর্যায়ে শুল্ক-কর অব্যাহতি দেওয়ায় মাসে ৪৩১ কোটি টাকা কম রাজস্ব সংগ্রহ হয়েছে। সেই হিসাবে ছয় মাসে এনবিআর রাজস্ব হারিয়েছে ২ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) আজ মঙ্গলবারের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৭৫ থেকে ১৭৬ টাকা, আর ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ৮৪৫ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৫৭ থেকে ১৬৬ টাকা, পাম তেল ১৪৪ থেকে ১৫০ টাকা এবং সুপার পাম তেল ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও টিকে গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ মোস্তফা হায়দার প্রথম আলোকে জানান, এ পর্যায়ে তিনি বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাজি নন।

মোহাম্মদ মোস্তফা হায়দার আজ বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সমিতির নেতৃত্ব দেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে সিটি, মেঘনা গ্রুপসহ আরও তিনটি গ্রুপের প্রতিনিধিরা ছিলেন। তাঁদের মধ্যে দুজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁরা বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন যে গত রমজানে লোকসানে সয়াবিন ও পাম তেল বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা অবশ্য ব্যবসায়ীদের কথা পুরোপুরি আস্থায় নেননি বলে জানা গেছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ জ যত ল পর য য় আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।

উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।

ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।

এএএম//

সম্পর্কিত নিবন্ধ