রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ইয়াংওয়ানের চেয়ারম্যান কিহাক সাংকে
Published: 9th, April 2025 GMT
নিজের ৭৮ বছর জীবনের অর্ধেকের বেশিই তিনি জড়িয়ে আছেন বাংলাদেশের সঙ্গে। আশির দশকে এ দেশের পোশাকশিল্পের যাত্রার শুরুতে তিনি ছিলেন এই শিল্পের যাত্রাসঙ্গী। তা–ও আবার হাতে গোনা কয়েকজনের মধ্যে একজন। শুধু তা–ই নয়, আশির দশকে বাংলাদেশের পোশাকশিল্প উদ্যোক্তাদের মধ্যে তিনি ছিলেন প্রথম বিদেশি বিনিয়োগকারী। বাংলাদেশের শিল্পের সঙ্গে সেই যে তাঁর যাত্রা শুরু করেছিলেন, এখন তা এক শিল্পসামাজ্যে রূপ নিয়েছে।
৪৫ বছর ধরে বাংলাদেশ ও এর শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে আছেন কোরিয়ার বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাং, পেলেন অন্য রকম এক স্বীকৃতি। বাংলাদেশের শিল্প খাতের বিকাশ ও বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান, বৈদেশিক আয়ের অবদানের জন্য তাঁকে দেওয়া হয়েছে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব (অনারারি সিটিজেনশিপ)। চার দিনব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী দিনে তাঁর হাতে এই স্বীকৃতি তুলে দেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এর মাধ্যমে একজন বিদেশি বিনিয়োগকারী হিসেবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য তিনি পেলেন এ দেশের নাগরিক না হয়েও ‘সম্মানিত নাগরিক’ মর্যাদা।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে যাঁরা তাঁকে এই সম্মাননা দেওয়ার প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁরা বলছেন, বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হলে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত ও সহজ করতে হবে। পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পথচলা নিরাপদ ও মসৃণ করাও জরুরি। সেই সঙ্গে তাঁদের যথাযথ স্বীকৃতি ও সম্মাননা দিতে পারলে অন্যান্য বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও তাতে সম্মানিত বোধ করবেন।
এবারের বিনিয়োগ সম্মেলনের মূল আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা বিডা। সংস্থাটি এ দেশের বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ‘বিনিয়োগ অ্যাম্বেসেডর বা বিনিয়োগ দূত’ হিসেবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চায়। এ জন্য ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাংকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রদানের মাধ্যমে এ দেশের বিনিয়োগ দূতের স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্যোগ নেয় তারা। বিডা মনে করছে, কিহাক সাংয়ের হাত ধরে এ দেশে কোরীয়সহ বিশ্বের আরও অনেক বিনিয়োগকারীর বড় ধরনের বিনিয়োগ আসবে বা আনতে কাজ করবেন।
বিডার এই ভাবনা যে একেবারে অমূলক নয়, তার প্রমাণও এরই মধ্যে পাওয়া গেছে। এবারের বিনিয়োগ সম্মেলনে কোরিয়ার আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের একটি প্রতিনিধিদল এসেছে। ইয়াংওয়ান করপোরেশনের চেয়ারম্যান কিহাক সাং নিজ উদ্যোগে কোরিয়া থেকে এসব বিনিয়োগকারীকে বাংলাদেশ সফরে নিয়ে এসেছেন। সফরকারী কোরিয়া বিনিয়োগকারীদের দলটি গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সেখানে তারা বাংলাদেশে বড় ধরনের বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে।
কিহাক সাং.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
রাস্টফ ব্যান্ডের ভোকাল আহরার মাসুদ মারা গেছেন। সেমাবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ভক্তদের কাছে দীপ নামে পরিচিত ছিলেন আহরার মাসুদ।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়। তবে এ শিল্পীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
আরো পড়ুন:
৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে
সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা
রাস্টফ ব্যান্ডের ফেসবুক পেজে দীপের মৃত্যুর খবর জানিয়ে লেখা হয়, “এমন এক বেদনাদায়ক মুহূর্তে সঠিক শব্দ খুঁজে পাওয়া বা কোনো শব্দ খুঁজে পাওয়া—প্রায় অসম্ভব। প্রিয় ভোকালিস্ট, বন্ধু ও সহযাত্রী আহারার ‘দীপ’ মাসুদের মৃত্যুসংবাদ আমাদের স্তম্ভিত করেছে। আমরা শোকে ভেঙে পড়েছি, এখনো অবিশ্বাসের ভেতর ডুবে আছি। গত রাতেই তিনি আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন।”
দীপের শূন্যতা ব্যাখ্যা করে লেখা হয়, “তার পরিবার, বন্ধু ও প্রিয়জনদের প্রতি আমাদের অন্তরের সমবেদনা ও প্রার্থনা। আপনাদের মতো আমরাও এই অপূরণীয় ক্ষতি বোঝার চেষ্টা করছি, চেষ্টা করছি দীপের অসাধারণ প্রতিভাকে সম্মান জানাতে এবং তার চেয়েও বড় কথা—মানুষ হিসেবে তিনি আমাদের কাছে যে অমূল্য ছিলেন, তাকে স্মরণ করতে। এই কঠিন সময়ে সবার কাছে অনুরোধ, দয়া করে পরিবার ও কাছের মানুষদের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করুন এবং তার আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করুন। শান্তিতে ঘুমাও, দীপ। তোমার শূন্যতা চিরকাল বেদনাময় হয়ে থাকবে।”
তরুণদের কাছে জনপ্রিয় আরেকটি ব্যান্ড পাওয়ারসার্চও দীপের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, “স্মরণ করছি আহরার মাসুদ দীপকে। কিছুক্ষণ আগে আমরা হারিয়েছি আমাদের প্রিয় ভাই, ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং এক সত্যিকারের শিল্পীকে। এক্লিপস, কার্ল, ক্যালিপসো ও সবশেষ রাস্টফ ব্যান্ডের অবিস্মরণীয় কণ্ঠ আহরার মাসুদ দীপ আমাদের মাঝে আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।”
পাওয়ারসার্চ আরো লেখেন, “আহরার মাসুদ দীপ শুধু একজন ভোকালিস্টই ছিলেন না, তিনি ছিলেন শক্তি, সৃজনশীলতা আর আবেগের প্রতীক, যিনি তার চারপাশের সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছেন; একই সাথে তার অত্যন্ত নমনীয় ব্যবহার, যা সবাইকে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীই করে ফেলত! শান্তিতে থাকো ভাই, তুমি সব সময় আমাদের গল্পের অংশ হয়ে থাকবে।”
ঢাকা/শান্ত