তিন মাসে বিদেশি ঋণ কমল ৭৪ কোটি ডলার
Published: 12th, April 2025 GMT
দেশের ব্যাংকগুলোর ডলার ব্যবহারের সীমা কমিয়ে দিয়েছে বেশির ভাগ ব্যাংক ও বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান। এতে ব্যাংকগুলোর অফশোর ব্যাংকিং ব্যবসায় মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে বিদেশি ঋণে। তাতে গত অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে বিদেশি ঋণ ৭৪ কোটি মার্কিন ডলার কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবর–ডিসেম্বর প্রান্তিকে যে পরিমাণ বিদেশি ঋণ কমেছে, তার মধ্যে সরকারি খাতের ঋণ কমেছে ২১ কোটি ৪০ লাখ ডলার। আর বেসরকারি খাতের ঋণ কমেছে ৫২ কোটি ২০ লাখ ডলার। বেসরকারি খাতের ঋণের মধ্যে বায়ার্স ক্রেডিটই কমেছে ৪৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার। যখন কোনো আমদানিকারকের পক্ষে বিদেশি ব্যাংক আমদানি মূল্য শোধ করে দেয়। আর ৬ মাসে আমদানিকারক সুদসহ তা পরিশোধ করে তাকেই বায়ার্স ক্রেডিট বলা হয়।
দেশের ব্যাংকগুলো তার বিদেশি ব্যাংকের সঙ্গে থাকা সীমা থেকে এই ঋণ নেয়। তবে ডলার–সংকটের কারণে দেশের ব্যাংকগুলোর ডলারের সীমা কমিয়ে দিয়েছে বিদেশি অনেক ব্যাংক। আবার মাসের পর মাস আমদানি দায়ের অর্থ না পেয়ে অনেক বিদেশি ব্যাংক এ দেশের কিছু ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। এ কারণেও বায়ার্স ক্রেডিট উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে বলে মনে করছেন ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছরের ডিসেম্বর শেষে বৈদেশিক ঋণের স্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৩৬৩ কোটি ডলার। প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ১২২ টাকা হিসাবে দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১২ লাখ ৬৪ হাজার ২৮৬ কোটি টাকায়। এর মধ্যে সরকার ও সরকারি দপ্তর মিলিয়ে বিদেশ থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ৮ হাজার ৪২১ কোটি ডলার। আর বেসরকারি খাতে ঋণের স্থিতি ১ হাজার ৯৪২ কোটি ডলার। একই বছরের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ১০ হাজার ৪৩৭ কোটি ডলার। সেই হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে বিদেশি ঋণ কমেছে ৭৪ কোটি ডলার। সেপ্টেম্বরে বিদেশ থেকে সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর নেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৪৪২ কোটি ডলার। আর বেসরকারি খাতের ঋণ ছিল ১ হাজার ৯৯৪ কোটি ডলার।
গত ডিসেম্বরে মোট ঋণের মধ্যে বিদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি খাত মিলে নেওয়া দীর্ঘমেয়াদি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৬৯ কোটি ডলার। আর সরকারি ও বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদি ঋণ এসেছে ১ হাজার ২৯৫ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে বিদেশ থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৬৪ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরে বিদেশ থেকে ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ৩০০ কোটি ডলার বা প্রায় ৩ শতাংশ। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে সাড়ে ১৫ বছরে সরকার প্রায় ৮৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ করে। ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এর আগে জুলাই পর্যন্ত সময়ে দেশে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ১০ হাজার ৩৭৯ কোটি ডলার।
বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার বিদায় নেওয়ার বছরে (২০০৬ সাল শেষে) বাংলাদেশের বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের কিছু কম। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছর পর ২০০৮ সাল শেষে তা দাঁড়ায় ২ হাজার ১১৯ কোটি ডলার।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম বর প র ন ত ক র ড স ম বর ঋণ র স থ ত ১০ হ জ র ব সরক র আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া’
ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীনন্দা শঙ্কর। সৃজিত মুখার্জির ‘এক যে ছিল রাজা’, সুমন ঘোষের ‘বসুপরিবার’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করেছেন এই তারকা। বলা যায়, টলিউডের প্রথম সারির সব নির্মাতার সঙ্গেই কাজ করেছেন এই নৃত্যশিল্পী।
গত কয়েক বছর ধরে কলকাতা ছেড়ে মুম্বাইয়ে বসবাস করছেন শ্রীনন্দা। সেখানে সংসার, কাজ নিয়ে সময় কাটছে তার। তবে অভিনয়ে নেই। অভিনয় থেকে দূরে থাকার কারণ কী? ফের কী অভিনয়ে ফিরবেন না শ্রীনন্দা?
ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে আলাপকালে এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন শ্রীনন্দা। এ অভিনেত্রী বলেন, “টলিউডে যাদের সঙ্গেই কাজ করেছি, তাদের সঙ্গে এখনো আমার খুব ভালো সম্পর্ক। ভীষণ ভালো অভিজ্ঞতাও বলা চলে। মুশকিল হলো, বাংলা সিনেমায় তেমন বাজেট থাকে না। সত্যিই যদি খুব ভালো সিনেমা হয় বা এমন কোনো পরিচালক আমাকে অফার দেন যেখানে কোনো ভাবেই ‘না’ করব না। আমি নিশ্চয়ই আবার অভিনয়ে ফিরব।”
আরো পড়ুন:
কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি অভিনেত্রী
পরিচালকের আপত্তিকর মন্তব্য নিয়ে মুখ খুললেন শোলাঙ্কি
কিছু কিছু লোকের সঙ্গে কাজ করতে গিয়েও মাঝপথে থেমে গিয়েছেন শ্রীনন্দা। কারণ, তাদের সঙ্গে মানসিকভাবে মেলেনি। তার ভাষায়—“মুম্বাই, কলকাতা বা সাউথ ইন্ডাস্ট্রি যেখানেই হোক না কেন, আমি ভালো মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। কেউ এমন চরিত্রে সুযোগ দেন, যেখানে প্রয়োজনে টাকাটা ভুলে গিয়ে শুধু পরিচালকের নাম দেখেই কাজটা করব।”
কিছুটা ইঙ্গিপূর্ণভাবে শ্রীনন্দা বলেন, “কাজের পাশাপাশি আমার সংসারও রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবশ্যই পেতে হবে, যার জন্য সংসারটা ইগনোর করার কথা ভাবব। অর্থাৎ মনে হবে সংসার ফেলে এই সিনেমাটা আমাকে করতেই হবে। এই বয়েসে একটু কফি খেতে যাবেন? কাজ দেবেন? এগুলো করতে পারব না। সবাই তো চেনেই আমাকে। কাজ দিতে হলে দেবেন।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব শ্রীনন্দা। অনেকে ভেবেছিলেন, এ মাধ্যমে কাজ করে টাকা আয় করে থাকেন। তাদের উদ্দেশে শ্রীনন্দা বলেন, “অনেকেরই ভ্রান্ত ধারণা এটাও আমার পেশা। এখান থেকে অনেক টাকা উপার্জন করা যায়। আমি নিজেও আগে বিষয়টা জানতাম না। পোস্ট করতে করতে বুঝেছি। আমি এখন মুম্বাইয়ে মায়ের সঙ্গে পুরোদমে নাচের স্কুল চালাচ্ছি। এখন মোট ছয়টা ব্রাঞ্চ এবং ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। সব মিলিয়ে ভালো আছি।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রলের শিকার হন শ্রীনন্দা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমার তো একেবারেই গন্ডারের চামড়া হয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন আগে আমাকে একজন বলেছিলেন, ‘রিল মামনি’। আমি আর মা এটা শুনে হেসে গড়িয়ে পড়েছি। মাঝেমধ্যে এসব বেশ মজাও লাগে। তবে যে পরিমাণ ভালোবাসা পাচ্ছি, সেটা খুব মন থেকেই ভক্তরা দিচ্ছেন বলে আমার বিশ্বাস। আমি মনে করি, এটা আমার জীবনে আশীর্বাদ।”
ঢাকা/শান্ত