ভারত নানা রকম বিধিনিষেধ আরোপ করার পরও দেশটিতে গত জুলাই মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় বেড়েছে। তবে একেক খাতের অবস্থা একেক রকম। তৈরি পোশাক, প্লাস্টিকসহ কয়েকটি পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। অন্যদিকে অনেকটাই কমেছে পাট ও পাটজাত পণ্য এবং খাদ্যপণ্য রপ্তানি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, গত জুলাইয়ে ভারতে মোট ১৪ কোটি ৯৪ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪ শতাংশ বেশি।
স্থলবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারত বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। তখন আশঙ্কা করা হয়েছিল, দেশটির বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি কমে যাবে। কারণ, সমুদ্রপথ ব্যবহার করে ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে সময় বেশি লাগবে। এখন দেখা যাচ্ছে, কয়েকটি খাতে এটার প্রভাব পড়েছে। তবে পোশাকসহ কয়েকটি খাতে তেমন প্রভাব পড়েনি।
ভারতের বাজারসহ বিভিন্ন দেশে পোশাক রপ্তানি করে এ কে এইচ গ্রুপ। এর উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের পোশাকপ্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বেশি। আর সমুদ্রপথে পোশাক নেওয়ার খরচ দেয় ভারতীয় ক্রেতারা। স্থলবন্দরের বিধিনিষেধে পোশাক রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।’
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হিসাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারত ছিল বাংলাদেশের অষ্টম বড় রপ্তানি বাজার। দেশটিতে ওই অর্থবছরে ১৭৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ১২ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি। ভারত থেকে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের ৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ আসে। ভারতের তুলনায় বাংলাদেশের বড় বাজারগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, স্পেন, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ও পোল্যান্ড।
বাণিজ্য বিশ্লেষকেরা বিভিন্ন সময় বলেছেন, বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের (৪ হাজার ৮২৮ কোটি ডলার) তুলনায় ভারতে রপ্তানি অনেক বেশি নয়। তবে যেসব কারখানা ভারতের বাজারনির্ভর, তাদের জন্য বিধিনিষেধ বিপদের কারণ হবে। সেসব কারখানার শ্রমিকেরা চাকরি হারাতে পারেন।
অবশ্য সরকার বলছে, ভারতের বিধিনিষেধের কারণে সার্বিকভাবে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা কম। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ১২ আগস্ট সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক এগিয়ে নিতে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে বাণিজ্যের বাধা দূর করা উচিত। দুই দেশের জন্যই এটা লাভজনক। তিনি বলেন, এক মাসের চিত্র দিয়ে বাণিজ্য পরিস্থিতি ভবিষ্যতে কোথায় দাঁড়াবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না।সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান ভারতের বিধিনিষেধস্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানিতে গত চার মাসে তিন দফায় বিধিনিষেধ দিয়েছে ভারত। গত ১৭ মে ও ২৭ জুন দুই দফায় পোশাক, খাদ্যপণ্য, পাটপণ্য, তুলা-সুতার বর্জ্য, প্লাস্টিকের পণ্য ও কাঠের আসবাব রপ্তানিতে বিধিনিষেধ দেওয়া হয়। তৃতীয় দফায় ১১ আগস্ট আরও কিছুসংখ্যক পাটপণ্যে বিধিনিষেধ দেয় দেশটি।
বিধিনিষেধ অনুযায়ী, পাট ও পোশাক পণ্য বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি করা যাবে না। শুধু দেশটির মুম্বাইয়ের নভোসেবা বন্দর দিয়ে রপ্তানি করতে হবে। এর বাইরে খাদ্যপণ্য ও কোমল পানীয়, কাঠের আসবাব, তুলা-সুতার বর্জ্য, প্লাস্টিক পণ্যের ক্ষেত্রে বুড়িমারী ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ছাড়া শুধু ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে যুক্ত স্থলবন্দরগুলো দিয়ে রপ্তানি করা যাবে। তবে বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের স্থলবন্দর দিয়ে ওই পণ্যগুলো রপ্তানি করা যাবে না।
ভারতে বাংলাদেশ থেকে যা রপ্তানি আয় হয়, তার ৩৫ শতাংশের মতো আসে পোশাক খাত থেকে।
বিধিনিষেধের আগে বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে ভারতে রপ্তানি হতো ৩০ শতাংশ পোশাক। স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হতো ৬৯ শতাংশ। প্রায় ১ শতাংশের কাছাকাছি যেত আকাশপথে। বিধিনিষেধের পর এখন প্রায় সব পোশাকই যাচ্ছে সমুদ্রপথে।
ঘুরপথে পণ্য পাঠাতে ৮ থেকে ৯ শতাংশ খরচ বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে এটা সমাধান করা উচিত।প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামালএনবিআরের তথ্যে দেখা যায়, ভারতের বিধিনিষেধের দেড় মাস পর গত জুলাই মাসে বাংলাদেশের ৩২৪ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান দেশটিতে ৫ কোটি ২৮ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছিল। এ বছর একই সময়ে ৩৮৮ প্রতিষ্ঠান রপ্তানি করেছে ৬ কোটি ২৮ লাখ ডলারের তৈরি পোশাক। এ হিসাবে রপ্তানি বেড়েছে ১৯ শতাংশ।
ভারতে বাংলাদেশি পোশাকের বেশির ভাগ কিনেছে এইচঅ্যান্ডএম, এমঅ্যান্ডএস, পুমা, ইউনিক্লো, ডিক্যাথেলন, পেপে জিন্স, ম্যাঙ্গে ফ্যাশন, বেস্টসেলারের মতো অন্তত ১৫টি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ থেকে পোশাক রপ্তানিতে ভালো করা ক্লিফটন গ্রুপের পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এম ডি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিযোগিতামূলক দামে পোশাক সরবরাহের কারণে দেশটিতে রপ্তানি বেড়েছে।
এনবিআরের তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের জুলাই মাসের তুলনায় এ বছরের জুলাইয়ে প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব ও তুলার বর্জ্য রপ্তানিও প্রায় ৫৩ লাখ ডলারের, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯৫ শতাংশ বেশি।
এনবিআরের তথ্যে দেখা যায়, বিধিনিষেধের আগে গত বছরের জুলাই মাসে বিস্কুট ও পানীয় রপ্তানি করেছিল ১৯টি প্রতিষ্ঠান। রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪১ লাখ ডলার। বিধিনিষেধের পর রপ্তানি করতে পেরেছে ১৪টি প্রতিষ্ঠান। রপ্তানিও ১৭ শতাংশ কমে নেমেছে প্রায় ৩৪ লাখ ডলারে।ভারতে পাটপণ্য রপ্তানিতে বিপর্যয়ভারতে বাংলাদেশি পাটপণ্য রপ্তানি হতো মূলত স্থলবন্দর দিয়ে। দু-একটি চালান যেত চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন পাটপণ্য শুধু সমুদ্রপথে ভারতের মুম্বাইয়ের নভোসেবা বন্দর দিয়ে রপ্তানি করতে হবে।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, বিধিনিষেধের আগে গত বছরের জুলাইয়ে ভারতে পাটপণ্য রপ্তানি হয়েছিল ১ কোটি ২৯ লাখ ডলারের, যা ৭৪ শতাংশ কমে নেমেছে প্রায় ৩৪ লাখ ডলারে।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিধিনিষেধের পর ৪৭টি প্রতিষ্ঠান একটি চালানও রপ্তানি করতে পারেনি। তিনটি প্রতিষ্ঠান নতুন করে রপ্তানি করেছে। কোনো চালান রপ্তানি করতে না পারা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি বগুড়ার কাহালুর হাসান জুট অ্যান্ড স্পিনিং মিলস লিমিটেড। একই মালিকানায় থাকা হাসান জুট মিলস কিছু পণ্য রপ্তানি করেছে।
এই দুই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ টি এম শফিকুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভারতের বিধিনিষেধের পর পরীক্ষামূলকভাবে তিনটি চালান চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে রপ্তানি করেছি। এক মাস পরও চালানগুলো দেশটির নভোসেবা বন্দরে পৌঁছেনি।’
খাদ্যপণ্য এখন শুধু ভোমরা ও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানির সুযোগ রেখেছে ভারত। সমুদ্রপথেও রপ্তানি করা যাবে। বাকি সব স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এনবিআরের তথ্যে দেখা যায়, বিধিনিষেধের আগে গত বছরের জুলাই মাসে বিস্কুট ও পানীয় রপ্তানি করেছিল ১৯টি প্রতিষ্ঠান। রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৪১ লাখ ডলার। বিধিনিষেধের পর রপ্তানি করতে পেরেছে ১৪টি প্রতিষ্ঠান। রপ্তানিও ১৭ শতাংশ কমে নেমেছে প্রায় ৩৪ লাখ ডলারে।
চট্টগ্রামের বিএসপি ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেডের প্রধান বাজার ছিল আসাম ও ত্রিপুরা। এই দুই স্থলবন্দর দিয়ে এসব পণ্য রপ্তানির সুযোগ না থাকায় তারা একটি চালানও রপ্তানি করতে পারেনি। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অজিত কুমার দাস বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, কারখানার কর্মী সংখ্যা দেড় শ থেকে কমে এখন ৬০ জনে নেমেছে।
খাদ্যপণ্যের বড় রপ্তানিকারক প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। গ্রুপটি গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় এবার ভারতে ১৪ শতাংশ কম রপ্তানি করেছে (৩১ লাখ ৪৫ হাজার ডলার)। আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজ, ইফাদ মাল্টি প্রোডাক্টস, টি কে ফুড প্রোডাক্টস, হাশেম ফুডস লিমিটেডের মতো প্রতিষ্ঠানেরও রপ্তানি কমেছে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ঘুরপথে পণ্য পাঠাতে ৮ থেকে ৯ শতাংশ খরচ বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে এটা সমাধান করা উচিত।
চাপ বেড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরেগত অর্থবছরে ভারতে মোট রপ্তানির ৮৩ শতাংশই করা হয় স্থলবন্দর দিয়ে। বাকি সাড়ে ১৬ শতাংশ নেওয়া হয় সমুদ্রবন্দর দিয়ে। বিধিনিষেধের পর চট্টগ্রাম বন্দরে চাপ বেড়েছে।
স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতের বিধিনিষেধভুক্ত পণ্য যতটুকু রপ্তানি হয়েছে, জুলাইয়ে তার ৮৯ শতাংশ নেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে। সমুদ্রবন্দর দিয়ে রপ্তানি বাড়তে থাকায় গত মাস থেকে বন্দরে কনটেইনারের চাপ বেড়েছে।
বিধিনিষেধের আওতায় থাকা পণ্য স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়েছে ১১ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্যপণ্য শুধু ভোমরা ও হিলি স্থলবন্দর দিয়ে যাচ্ছে। বেনাপোল ও সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে প্লাস্টিক, আসবাব ও তুলার উপজাত রপ্তানি হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে নীলফামারীর চিলাহাটি, চুয়াডাঙ্গার দৌলতগঞ্জ ও রাঙামাটির তেগামুখ স্থলবন্দর বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। হবিগঞ্জের বাল্লা স্থলবন্দরের কার্যক্রম স্থগিত করার কথা বলা হয়েছে। গত ২৮ জুলাই পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয় সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বাণিজ্যের ‘বাধা দূর করতে হবে’বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ প্রথম আরোপ করে ভারত। গত ৮ এপ্রিল বাতিল করা হয় বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা, যার আওতায় ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে পণ্য রপ্তানির সুবিধা পেত বাংলাদেশ। ১৫ এপ্রিল ভারত থেকে স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানি বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে বাণিজ্যের বাধা দূর করা উচিত। দুই দেশের জন্যই এটা লাভজনক। তিনি বলেন, এক মাসের চিত্র দিয়ে বাণিজ্য পরিস্থিতি ভবিষ্যতে কোথায় দাঁড়াবে, তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গত বছর র জ ল ই ব ধ ন ষ ধ র আগ ব ধ ন ষ ধ র পর প রথম আল ক খ দ যপণ য পর স থ ত প টপণ য দ শট ত কর ছ ল আসব ব
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে পরামর্শ সভা
সাতক্ষীরায় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের নিয়ে স্থানীয়দের চাহিদা নিরুপনে নির্বাচনী ইশতেহার-২০২৫ শীর্ষক উপজেলা পর্যায়ে পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সিডো এর আয়োজনে এবং একশনএইড বাংলাদেশ এর সহযোগিতায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদ হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
পূজার ছুটির পর গকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অভিষেক
নিবন্ধন পাচ্ছে এনসিপিসহ ২ দল
সিডো সাতক্ষীরার প্রধান নির্বাহী শ্যামল কুমার বিশ্বাসের সভাপতিত্বে কর্মসূচির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন, প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. তহিদুজ্জামান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা পৌরসভার কাউন্সিলর শফিক-উ-দ্দৌলা সাগর, টিআইবি সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি হেনরী সরদার, একশনএইড প্রতিনিধি সুইট খান, ইয়ূথ সভাপতি সাকিব হাসান, প্রোগ্রাম অফিসার চন্দ্র শেখর হালদার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাতক্ষীরায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন সাতক্ষীরা জেলার রাস্তা-ঘাটের অবস্থা অনেক শোচনীয়। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করতে রাস্তা-ঘাটের সংস্কার খুব জরুরি। সুন্দরবন কেন্দ্রিক টেকসই ইকোটুরিজম প্রতিষ্ঠা, সুন্দরবনের পরিবেশ ও সম্পদ সংরক্ষণ ও পর্যটন বৃদ্ধির মাধ্যমে টেকসই ইকোটুরিজম ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সাতক্ষীরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যা জেলার শিক্ষার্থীদের আধুনিক শিক্ষা সুবিধা দেবে।
তারা বলেন, রেল সংযোজন সাতক্ষীরা জেলা দীর্ঘদিন ধরে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে বৈষম্যের শিকার। সাতক্ষীরাকে দেশের রেল নেটওয়ার্কে অন্তভুক্ত করতে হবে, যা জেলা ও দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় উপকূলীয় এলাকায় দীর্ঘমেয়াদী স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা করতে হবে।
এছাড়া সাতক্ষীরায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম ও ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ, সীমান্তে মাদক প্রতিরোধে প্রযুক্তি নির্ভর নজরদারী ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি, স্থলবন্দরকে পূর্নাঙ্গ বন্দরে রুপান্তর, সাতক্ষীরার ভোমরাকে একটি আধুনিক আন্তর্জাতিক মানের স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠা করে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি, নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতে কার্যকর পৌরসভার ব্যবস্থাপনা, সুন্দরবন বাঁচাতে জীবশ্ম জ্বালানীকে পরিবর্তে নবায়ন যোগ্য জ্বালানী সংযোজন, জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল কৃষি ব্যবস্থাপনা, সবুজ উদ্যোক্তা তৈরির জন্য যথাযথ প্রশিক্ষণাগার তৈরি, প্রাণ সায়ের খালের দুই ধার সৌন্দর্যবর্ধন, যুবদের মুক্ত চিন্তা, উন্নয়ন ভাবনা ও নিজস্ব সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য শিক্ষালয় কেন্দ্রিক যুববান্ধব স্পেস তৈরি ও কার্যকর করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও বলেন বক্তারা।
ঢাকা/শাহীন/মেহেদী