তবে কি ভুট্টা নিয়ে টানাপোড়েনের অবসান ঘটতে চলেছে? বিহার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য চুক্তি আলোচনা ‘ইতিবাচক’ ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্নটা উঠতে শুরু করেছে।

ভুট্টার সঙ্গে বিহার জড়িয়ে পড়ছে, কারণ, ভারতে যত রাজ্যে ভুট্টা উৎপাদিত হয়, বিহার তাদের মধ্যে তৃতীয়। প্রথম কর্নাটক, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভুট্টা আমদানিতে ভারত রাজি হলে বিহারের ভুট্টাচাষিদের প্রমাদ গুণতে হতে পারে। সেই ঝুঁকি কি নরেন্দ্র মোদি নেবেন? বিশেষ করে বিহারে জেডিইউয়ের সঙ্গে বিজেপিও যখন ক্ষমতায়?

গতকাল মঙ্গলবার দিনভর ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বন্ধ থাকা বাণিজ্য আলোচনা চলেছে। আলোচনায় অংশ নিতে দিল্লি এসেছিলেন মার্কিন সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডন লিঞ্চ। তাঁর সঙ্গে আলোচনায় ভারতের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সচিব রাজেশ আগারওয়াল।

আলোচনার পর দুই দেশই বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, কথাবার্তা হয়েছে খুবই ইতিবাচক। দুই দেশই চাইছে উভয়ের লাভের দিকে তাকিয়ে ভবিষ্যতের উপযুক্ত চুক্তি করতে। দুই দেশই আপাতত পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে তাকিয়ে।

বিবৃতিতে বলা কথাগুলো শুনতে ভালো হলেও এই বাণিজ্য আলোচনা সেই দশ হাতি শাড়ির মতো, যা দিয়ে মাথা ও পেছন দুই অঙ্গ ঢাকা দেওয়া যায় না। একটা ঢাকতে গেলে অন্যটা উন্মুক্ত হয়। ভারতের পক্ষে মার্কিন প্রস্তাব তাই ‘দো ধারি তরোয়ালের’ মতো। মেনে নিলে ঘরে বিপদের মুখোমুখি হতে হবে, না মানলে করতে হবে বাইরের বিপদের মোকাবিলা। কী করবেন নরেন্দ্র মোদি?

এই পরিস্থিতিতে লড়াইটা এখন হচ্ছে ভুট্টা নিয়ে।

এটা এখন আর গোপন নয় যে ডোনাল্ড ট্রাম্প চাইছেন ভারতের কৃষি ও দুগ্ধজাত শিল্প তাঁদের জন্য উন্মুক্ত করা হোক। মোদি তা হতে দিতে চান না। কৃষিক্ষেত্রে মার্কিন রপ্তানি মেনে নিলে দেশের ৭০ কোটি কৃষিজীবীর রোষে গদি উল্টে যাবে। তা যে তিনি হতে দেবেন না, লালকেল্লা থেকে দেওয়া ভাষণে স্পষ্ট করে দিয়েছেন। ভুট্টা ওই কৃষিক্ষেত্রেরই একটা অঙ্গ।

যুক্তরাষ্ট্র চাইছে, মার্কিন মুলুকে উৎপাদিত ভুট্টার কিছুটা অন্তত ভারতে রপ্তানি করার অনুমতি মোদি সরকার দিক। ট্রাম্পের বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘ভারত ১৪০ কোটি মানুষের দেশ বলে বড়াই করে বেড়ায় অথচ আমাদের কাছ থেকে এক বুশেল (ব্যারেলের মতো আরেক পরিমাপ, এক বুশেল প্রায় সাড়ে ২৪ কেজি) ভুট্টা কিনতে পারে না? ওরা আমাদের কাছে সব বেচবে, অথচ সামান্য ভুট্টাও কিনবে না!’

বোঝাই যাচ্ছে, এই মুহূর্তে ট্রাম্প প্রশাসনের তালিকার ১ নম্বরে রয়েছে ভুট্টা।

ভুট্টা নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মাথাব্যথার যথেষ্ট কারণও আছে।

পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভুট্টা উৎপাদিত হয় যুক্তরাষ্ট্রে। ২০২৪-২৫ সালে তারা উৎপাদন করেছে প্রায় ৩৭ কোটি ৮০ লাখ টন। এর মধ্যে রপ্তানি করেছে প্রায় ৭ কোটি ২০ লাখ টন।

২০২৫-২৬ সালে তাদের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে ৪২ কোটি ৭০ লাখ টন। রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ৭ কোটি ৫০ লাখ টন। এ অবস্থায় গোল বাধিয়েছে ট্রাম্পের বাণিজ্য শুল্কনীতি। তাতে যুক্তরাষ্ট্রের ভুট্টাচাষিদের মাথায় বজ্রাঘাত।

ডোনাল্ড ট্রাম্প, নরেন্দ্র মোদি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ল খ টন উৎপ দ

এছাড়াও পড়ুন:

আফ্রিদির অলরাউন্ড নৈপুণ্যে আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

বিকেলে ছিল ম্যাচ হবে কি না অনিশ্চয়তা। নানা নাটকীয়তার পর অনিশ্চয়তা কেটে ম্যাচ শুরু হলো এক ঘণ্টা দেরিতে। তবে বিলম্বিত ম্যাচে আর খুব বেশি অনিশ্চয়তা–নাটকীয়তার দেখা মিলল না। দুবাইয়ে ফেবারিট হিসেবে মাঠে নেমে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ৪১ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান।

এই জয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে জায়গা করেছে সালমান আগার দল। ‘এ’ গ্রুপ থেকে সেরা চারে জায়গা করেছে ভারতও। যার অর্থ, ২১ সেপ্টেম্বর আবারও মুখোমুখি হতে চলেছে ভারত–পাকিস্তান।

গতকাল দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাকিস্তান–আরব আমিরাত ম্যাচ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত–পাকিস্তান গ্রুপ ম্যাচের ঘটনার জেরে। সেদিন ভারতের খেলোয়াড়েরা পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের সঙ্গে ম্যাচের শুরু ও শেষে হাত না মেলানোয় ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।

পাইক্রফট টসের সময় অধিনায়ককে হাত না মেলানোর পরামর্শ দিয়ে নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন অভিযোগ তুলে তাঁর অপসারণ চেয়ে রীতিমতো এশিয়া কাপ বর্জনের আবহ তৈরি করে পিসিবি।

শেষ পর্যন্ত পাইক্রফটের ক্ষমা প্রার্থনায় গতকাল তাঁর পরিচালনায় আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামে পাকিস্তান। তবে খেলতে নামার সিদ্ধান্ত নিতে আলোচনার জন্য এক ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হয় ম্যাচ শুরুর সময়।

আরও পড়ুনপাকিস্তান অধিনায়কের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ম্যাচ রেফারি পাইক্রফট, দাবি পিসিবির৬ ঘণ্টা আগে

দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচে আমিরাত অধিনায়ক টসে জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠান। ফখর জামানের ৩৬ বলে ৫০ আর শেষ দিকে শাহিন আফ্রিদির ১৪ বলে ২৯ রানের অপরাজিত ইনিংসে ভর করে পাকিস্তান করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৬। মূলত আফ্রিদির শেষ দিকের ঝোড়ো ব্যাটিংই পাকিস্তানের রান দেড় শর কাছাকাছি নিয়ে যায়।

নানা নাটকীয়তার পর অ্যান্ডি পাইক্রফটই পাকিস্তান–আমিরাত ম্যাচে রেফারির দায়িত্বে ছিলেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ