যুক্তরাষ্ট্রের অবসরপ্রাপ্ত গাড়ি নির্মাতা শ্রমিক রিচার্ড গিলফোর্ড এক মধ্যরাতে ফেসবুকে অচেনা এক ব্যক্তির খুদে বার্তা পেয়ে অবাক হয়ে যান। বার্তায় লেখা ছিল, ‘আপনি কি কয়েক বছর আগে আপনার মানিব্যাগ হারিয়েছেন? এটি একটি গাড়ির ইঞ্জিনে ছিল।’

রিচার্ডের কাছে এই খবর একেবারেই অবিশ্বাস্য ছিল। কারণ, প্রায় ১১ বছর আগে মিশিগানে মানিব্যাগটি হারিয়েছিলেন তিনি। এত বছর পর সেটি উদ্ধার হলো মিনিসোটার লেক ক্রিস্টালের একটি গাড়ি মেরামতের দোকানে। গত জুন মাসে গাড়ি মেরামতকারী চ্যাড ভল্ক এটি খুঁজে পেয়ে রিচার্ডকে ফেসবুকে বার্তা পাঠান।

মানিব্যাগটিতে ছিল ১৫ ডলার, ড্রাইভার লাইসেন্স, কর্মপরিচয়পত্র, ২৭৫ ডলারের গিফট কার্ড এবং একটি লটারি টিকিট।

বিখ্যাত গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফোর্ডের একটি কারখানায় কাজ করতেন রিচার্ড। ২০১৪ সালে বড়দিনে ওই কারখানায় কাজ করার সময় তাঁর মানিব্যাগটি শার্টের পকেট থেকে পড়ে যায়। সে সময় তিনি কারখানায় থাকা ৩০ থেকে ৪০টি গাড়িতে তন্ন তন্ন করে খুঁজেও মানিব্যাগটি পাননি। পরে হাল ছেড়ে দেন।

এখন রিচার্ড গিলফোর্ডের বয়স ৫৬ বছর। ৩৫ বছরের কর্মজীবন শেষে ২০২৪ সালে তিনি অবসর নেন। মানিব্যাগটির কথা তিনি অনেক বছর আগেই ভুলে গিয়েছিলেন। চ্যাড ভল্কের বার্তা পাওয়ার পর সেটির কথা আবার মনে পড়ে তাঁর। চ্যাড তাঁকে মানিব্যাগ এবং রিচার্ডের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাঠান। ওই লাইসেন্সে নিজের কম বয়সের ছবি দেখে আপ্লুত হয়ে পড়েন রিচার্ড।

চ্যাড ভল্ক জানান, ২০১৫ সালের ফোর্ড এজ সিরিজের একটি গাড়ির ইঞ্জিন বে-তে ট্রান্সমিশন ও এয়ার ফিল্টার বক্সের মধ্যে আটকে থাকা অবস্থায় মানিব্যাগটি খুঁজে পান তিনি। তখন পর্যন্ত গাড়িটি ১ লাখ ৫১ হাজার মাইল চলেছে। চ্যাড বলেন, ‘গাড়িটি মেরামতের পর ফিল্টার বক্স ঠিকমতো বসছিল না। পরে আমি দেখতে পাই, সেখানে একটি মানিব্যাগ পড়ে আছে।

রিচার্ড বলেন, ‘এত বছর ধরে মানিব্যাগটি ঠিক আছে। এটি অত্যন্ত আশ্চর্যজনক। তিনি আরও বলেন, মানিব্যাগে যা যা ছিল, সবকিছু সেভাবেই রেখে দেব। এটি আমাদের ঘরের ক্যাবিনেটে সংরক্ষণ করে রাখা হবে। আমার সন্তানেরা ভবিষ্যতে এটির গল্প তাদের সন্তানদের বলবে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কষ্ট পুষে রাখা মানুষটির আজ জন্মদিন

১৮ অক্টোবর ২০১৮। সকাল থেকেই ছড়িয়ে পড়ল খবরটা—আইয়ুব বাচ্চু নেই! বেলা বাড়তেই হাসপাতাল লোকারণ্য। চট্টগ্রামের শেষযাত্রার আয়োজনে জনসমুদ্র। এত বিষণ্নতা নিকট অতীতে দেখেনি ব্যান্ড সংগীতের সাম্রাজ্য। শুধু কি সাম্রাজ্য? ফিকে হয়ে গেল এ প্রজন্মের ব্যান্ড সংগীত অনুরাগীদের ছেলেবেলা! চলে গেলেন ‘গিটারের জাদুকর’! এই শোক কতটা কাটিয়ে উঠতে পারবে দেশের ব্যান্ড সংগীতাঙ্গন? আপামর সংগীতপ্রেমীর দল? মাত্র ছাপ্পান্নতেই সব শেষ! ক্যালেন্ডারের পাতায় যদি সেই দিনটি না থাকত, ১৮ অক্টোবর ২০১৮? তাহলে আজ তিনি পূর্ণ করতেন ৬৩, পড়তেন ৬৪তম বছরে। ১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রাম শহরে মাত্র ছাপ্পান্ন বছরের সময় হাতে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। বাবা চেয়েছিলেন ছেলের এমন একটা নাম হবে, যা অন্য কারও নেই। যেমন আইয়ুব আলী, আইয়ুব হোসেন—এমন তো হয়-ই। দুটি নাম থেকে আলাদা অংশ নিয়ে রাখা হলো, আইয়ুব বাচ্চু। সেই থেকে তিনি হলেন ‘ওয়ান অ্যান্ড অনলি’।

মা-বাবার আদরের ছেলে। তাই বলে যে সংগীতচর্চার জন্য খুব একটা অনুকূল পরিবেশ তিনি পেয়েছিলেন, তা কিন্তু নয়। সেই ছোটবেলা থেকেই সংসারে থেকেও বোহেমিয়ান আইয়ুব বাচ্চু। বাউন্ডুলে স্বভাবের জন্য সংসারের কিছুই যেন স্পর্শ করতে পারছিল না তাঁকে। বাবার ব্যবসায় মন বসে না, লেখাপড়ায় মন বসে না। অনিশ্চিত এক ভবিষ্যৎ ছিল তাঁর।

সব ছাপিয়ে আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন গিটারের জাদুকর

সম্পর্কিত নিবন্ধ