চোখের সামনে আমার স্বামীর হেডের মইধ্যে ছুরি ঢুকাই দিছে গো। স্বামী আমার মুরগার মতো ধড়ফড় করতে করতে মরি গেছে। আমি এখন দুই মাইয়্যা লইয়া কই যামু। কে আঁর মাইয়্যাগোরে দেখি রাইখব’।

স্বামী রাকিব উদ্দিনের (৩২) জন্য বিলাপ করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন নোয়াখালীর হাতিয়ার সোনাদিয়া ইউনিয়নের পূর্ব লক্ষ্মীদিয়া কাজিরবাজার এলাকার গৃহবধূ তাজমা বেগম। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ছুরিকাঘাতে নিহত হন রাকিব। তাঁর ছোট ভাই সাকিব হোসেনের (২৩) বিরুদ্ধে ছুরিকাঘাতের অভিযোগ উঠেছে। সাকিব হোসেনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন এলাকাবাসী।

নিহত রাকিব উদ্দিনের স্ত্রী তাজমা বেগম বলেন, তাঁর দেবর সাকিব উদ্দিন গতকাল উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের আলাদিগ্রাম থেকে বিয়ে করেন। সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি মসজিদে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। সেখানে তাঁর স্বামী রাকিবও ছিলেন।

বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পর রাতে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। এর একপর্যায়ে তাঁর স্বামীর পেটে ছুরিকাঘাত করেন সাকিব। এ সময় ঘটনাস্থলেই রাকিব উদ্দিনের মৃত্যু হয়।

তাজমা বেগম আরও বলেন, সাকিব আগেও তিনটি বিয়ে করেছেন। পরে স্ত্রীদের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়। এসব বিয়ের কথা গোপন রেখে গতকাল চতুর্থ বিয়ে করেছেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে বিষয়টি বুঝতে পেরে বাড়ি ফেরার পর ভাইকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাঁর স্বামী রাকিব। এ সময় তর্কাতর্কির মধ্যে রাকিব তাঁর ছোট ভাই সাকিবকে কয়েকটি চড়থাপ্পড় দেন ও তাঁর দিকে জুতা নিক্ষেপ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সাকিব ঘরে থাকা ছুরি দিয়ে তাঁর স্বামীর পেটে আঘাত করেন।

হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আজমল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সাকিব হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছে। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা একটি ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি খুন

ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় পারিবারিক কলহের জেরে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শাশুড়ি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন একজন। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ফজিলা খাতুন (৪৫) উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামের বাসিন্দা মৃত জালাল উদ্দিনের স্ত্রী। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনির মিয়া (৩০) উপজেলার হরিরামপুর ব্যাপারী গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে। ঘটনার রাতে স্ত্রী রুমা আক্তারের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান মনির। পরে রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন এবং চার বছরের ছেলে রোহানকে নিয়ে চলে যেতে চান। এতে স্ত্রীর সঙ্গে তার আবারও বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে মনির হাতে থাকা ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে আঘাত করতে গেলে শাশুড়ি ফজিলা খাতুন বাধা দেন। তখন মনির শাশুড়িকে ছুরিকাঘাত করেন। পাশাপাশি স্ত্রীকেও আঘাত করেন তিনি। পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ফজিলা খাতুনের মৃত্যু হয়।

মুক্তাগাছা থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো। তবে অভিযুক্ত পালিয়েছে। তাকে ধরার চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ