কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে চোরাই ওষুধসহ দুজনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। এ সময় ওষুধ চুরিতে সহায়তার অভিযোগে এক চিকিৎসককে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

আজ শনিবার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়। তাঁরা হলেন জেলার উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লারহাট এলাকার হামিদুল হক ও সদর উপজেলার পাটেশ্বরী এলাকার হামিদা বেগম।

অভিযানে হাসপাতাল থেকে ৫০টি স্লিপের মাধ্যমে নেওয়া ১৪ ধরনের ৯৬৫টি বড়ি জব্দ করা হয়। এ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে স্লিপ দেওয়ার অভিযোগে হাসপাতালের (ইউনানি) চিকিৎসক ওবায়দুল হককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ক্যাম্পে নিয়ে যায় সেনাবাহিনী।

সেনাবাহিনীর কুড়িগ্রাম ক্যাম্পের কমান্ডার ক্যাপ্টেন সাফায়েত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গোপনে অভিযান চালানোর সময় হাসপাতাল চত্বর থেকে সরকারি ওষুধসহ এক পুরুষ ও এক নারীকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের কাছে হাসপাতালের বিভিন্ন ধরনের ৯৬৫টি বড়িসহ ওষুধ নেওয়ার ৫০টি স্লিপ জব্দ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁদের সদর থানার পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে। আর এক চিকিৎসককে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক মো.

শহিদুল্লাহ বলেন, জনবলসংকটের কারণে হাসপাতাল থেকে সরকারি ওষুধ চুরির ঘটনা ঘটেছে। তবে এ ঘটনায় হাসপাতালের কারও সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে হাসপাতালে রোগীর স্বজনকে চিকিৎসকের লাথি মারার ভিডিও ভাইরাল, তদন্তে কমিটি

হাসপাতালে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েছেন এক ব্যক্তি। তাঁদের পাশে আরও কয়েকজন লোক দাঁড়িয়ে। দুজনের বাগ্‌বিতণ্ডায় এক পর্যায়ে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এ সময় ওই চিকিৎসককে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন আরেকজন। তখন চিকিৎসকের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়ানো ব্যক্তি কিছু একটা বলেন। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে লাথি দিয়ে বসেন ওই চিকিৎসক।

এমন একটি ভিডিও গতকাল রোববার রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভিডিওটির ঘটনাস্থল সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিচতলার ৩১ নম্বর ওয়ার্ড। গতকাল দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে জুবায়ের আহমদ (২২) নামের এক রোগীকে নিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত। সুনামগঞ্জের গোবিন্দগঞ্জের কলাগাঁও এলাকার বাসিন্দা জুবায়ের শুক্রবার থেকে পেটের নিচে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। গতকাল দুপুরে জুবায়েরের পাশে তাঁর বন্ধু মিজান আহমদ (২২) ছিলেন। মিজানের সঙ্গেই তন্ময় দেবনাথ নামের ওই চিকিৎসকের বাগ্‌বিতণ্ডা এবং লাথি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তন্ময় দেবনাথ নামের ওই চিকিৎসক স্নাতকোত্তর ‘ফেজ-বি’–এর আবাসিক শিক্ষার্থী। রোগীর স্বজনের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে কোনো কথার জেরে মেজাজ হারিয়ে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন। রোববারের ঘটনায় হাসপাতালের পরিচালক পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জুবায়েরের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিজান আহমদ ওই চিকিৎসককে ডাক দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সাড়া দেননি। পরে মিজানকে ডেকে নিয়ে ব্যবহার ঠিক করার কথা বলেছেন ওই চিকিৎসক। একপর্যায়ে চিকিৎসকের সঙ্গে মিজানের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এতে ওই চিকিৎসক লাথি দিয়েছেন।

জুবায়ের জানান, তিনি বাড়িতে কৃষিকাজ করেন। তাঁর বন্ধু মিজান আহমদ তাঁদের পার্শ্ববর্তী আনন্দনগর গ্রামের বাসিন্দা। মিজান মিস্ত্রির কাজ করেন। ওই ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা বিষয়টি জানার জন্য তাঁর কাছে গিয়েছিলেন। জুবায়ের এখন অনেকটা সুস্থ আছেন চিকিৎসকেরা তাঁকে আজ–কালকের মধ্যেই ছাড়পত্র দিয়ে দেবেন বলে জানান তিনি।

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, তদন্ত কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ওই চিকিৎসককে আপাতত দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বরিশালের উজিরপুরে ‘ভুয়া’ চিকিৎসককে কারাদণ্ড
  • সিলেটে হাসপাতালে রোগীর স্বজনকে চিকিৎসকের লাথি মারার ভিডিও ভাইরাল, তদন্তে কমিটি