খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের অপসারণ দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচির প্রায় ৫৮ ঘণ্টা পর খবর আসে আন্দোলনকারীদের দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে। এরপর গতকাল বুধবার মধ্যরাতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা, বের করেন আনন্দমিছিল।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সেই আনন্দের রেশ এখনো কাটেনি। অনশনে অংশ নেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে দল বেঁধে ক্যাম্পাসে ঘুরতে দেখা যায়। এ সময় তাঁদের হাতে শোভা পাচ্ছিল জাতীয় পতাকা। ক্যাম্পাসের ‘দুর্বার বাংলা’ ভাস্কর্যের পাদদেশে দাঁড়িয়ে উল্লাস করছিলেন তাঁরা।

আরও পড়ুনঅনশন ভাঙলেন কুয়েটের শিক্ষার্থীরা, ক্যাম্পাসে উল্লাস৭ ঘণ্টা আগে

ওই দলের গালিব রাহাত নামের এক সদস্য বলেন, ‘আমার জীবনে আজ সবচেয়ে আনন্দের দিন। আমরা এতগুলো ছেলে আমরণ অনশনে গিয়েছিলাম। আমরা প্রায় মৃত্যুর মুখোমুখি চলে গিয়েছিলাম। আমরা আজ ক্যাম্পাসে বিজয় মিছিল করব। মিছিলটা প্রথমে সকাল ১০টায় হওয়ার কথা ছিল। পরে আমরা বিকেল চারটায় বিজয় মিছিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

কুয়েট শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয় ‘কুয়েট ১৯’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে। ওই পেজেও থেকে আজ বিকেল চারটায় বিজয় মিছিল করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনকুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবিতে জিরো পয়েন্ট খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ‘ব্লকেড’১৪ ঘণ্টা আগে

কুয়েট স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের নিচতলায় যেখানে অনশন কর্মসূচি চলছিল, সেখানে কয়েকটি তোশক এখনো আছে। বালিশ, স্ট্যান্ড ফ্যান আর কয়েকটি চেয়ার এখানে সেখানে ছড়িয়ে আছে। কথা হয় পুরকৌশল ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি আজ সকালে বলেন, ‘ভিসিকে সরকারের পক্ষ থেকে অপসারণ করা হচ্ছে বলে আমরা জানতে পারি। তখন থেকে ক্যাম্পাসে আনন্দের বন্যা বইতে শুরু করে। দীর্ঘ ৬৫ দিনের আন্দোলন ও ৫৮ ঘণ্টা কোনো ধরনের আপস মীমাংসায় না টলে আমরা আমরণ অনশনে ছিলাম।’

এমন অর্জনে অবদান রাখা সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রাহাতুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যাঁরা অনশনে বসেছিলেন, রাজপথে নেমেছেন, সংহতি প্রকাশ করেছেন—সবাইকে এই বিজয়ে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। আগামী দিনেও কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো স্বৈরাচার যদি আবার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে, আমরা দেশের শিক্ষার্থীরা ওই স্বৈরাচারকে প্রতিরোধ করব।’

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এরপর ১৪ এপ্রিল রাতে সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই ঘটনার জেরে গত রোববার উপাচার্যের পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়।

গতকাল দুপুরে আরেকটি সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। এ ছাড়া সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গতকাল বিকেল থেকে ছাত্রদের ছয়টি ও ছাত্রীদের একটি হল আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়। সভায় আগামী ৪ মে থেকে ক্লাস শুরু করার আগের সিদ্ধান্তটি বহাল রাখা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব জয় ম ছ ল আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 

মেঘ রোদের লুকোচুরির সকালে শিল্পী সোহানী মজমুদার সেতার বাদনে ‘রাগ আহীর ভৈরব’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বর্ষাকাল উদযাপনের আয়োজন। রোববার সকাল সোয়া ৭টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায় বর্ষা উৎসব উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে ‘বর্ষা উৎসব’ অনুষ্ঠিত হয়।

আষাঢ়ের প্রথম দিন এই আয়োজনটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় সম্পন্ন হয়। গানে, কথনে, আবৃত্তিতে বর্ষা বন্দনা করা হয়। 

আয়োজনে রাগ ভৈরবীর পর বর্ষা কথন পর্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদের সভাপতি শিল্পী কাজী মিজানুর রহমান। ঘোষণা পাঠ করেন- সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট। আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিগার চৌধুরী।

কথনের পর মূল আয়োজনে সঙ্গীত পরিবেশন করেন- ইয়াসমিন মুশতারী, সালাউদ্দিন আহমেদ, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রী, অনিমা রায়, শামা রহমান, মকবুল হোসেন, ফেরদৌসী কাকলি, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, শ্রাবনী গুহ রায়সহ আরও অনেকেই।

এছাড়াও আবৃত্তি পরিবেশন করেন নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি, আসান উল্লাহ তমালসহ অনেকেই।

দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন ধৃতি নর্তনালয়, নৃত্যাক্ষ, স্পন্দন, বেমুকা ললিতকলা কেন্দ্র, সিনথিয়া একাডেমি অফ আর্টস ও নৃত্যম।

এছাড়া ধরিত্রীকে সবুজ করার লক্ষ্যে প্রতীকীভাবে শিশু-কিশোরদের মাঝে বনজ, ফলদ ও ওষুধি গাছের চারা বিতরণ করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • কলকাতায় নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া
  • বর্ষা উৎসবে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদ, পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ কয়েকটি দাবি
  • ডাকসু নির্বাচন কমিশন ও তফসিল ঘোষণা দাবিতে প্রশাসনকে ‘সালাম’
  • নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশনে নারী
  • সাহেবগঞ্জ এলাকায় ইপিজেড নির্মাণের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে গণ–অনশন
  • ভালোবাসার ফ্রেমে মেহজাবীন-রাজীব, পেছনে আইফেল টাওয়ার