কুয়েটে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ, বিকেলে বিজয় মিছিল
Published: 24th, April 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের অপসারণ দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচির প্রায় ৫৮ ঘণ্টা পর খবর আসে আন্দোলনকারীদের দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে। এরপর গতকাল বুধবার মধ্যরাতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা, বের করেন আনন্দমিছিল।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সেই আনন্দের রেশ এখনো কাটেনি। অনশনে অংশ নেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে দল বেঁধে ক্যাম্পাসে ঘুরতে দেখা যায়। এ সময় তাঁদের হাতে শোভা পাচ্ছিল জাতীয় পতাকা। ক্যাম্পাসের ‘দুর্বার বাংলা’ ভাস্কর্যের পাদদেশে দাঁড়িয়ে উল্লাস করছিলেন তাঁরা।
আরও পড়ুনঅনশন ভাঙলেন কুয়েটের শিক্ষার্থীরা, ক্যাম্পাসে উল্লাস৭ ঘণ্টা আগেওই দলের গালিব রাহাত নামের এক সদস্য বলেন, ‘আমার জীবনে আজ সবচেয়ে আনন্দের দিন। আমরা এতগুলো ছেলে আমরণ অনশনে গিয়েছিলাম। আমরা প্রায় মৃত্যুর মুখোমুখি চলে গিয়েছিলাম। আমরা আজ ক্যাম্পাসে বিজয় মিছিল করব। মিছিলটা প্রথমে সকাল ১০টায় হওয়ার কথা ছিল। পরে আমরা বিকেল চারটায় বিজয় মিছিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
কুয়েট শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয় ‘কুয়েট ১৯’ নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে। ওই পেজেও থেকে আজ বিকেল চারটায় বিজয় মিছিল করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনকুয়েট ভিসির পদত্যাগের দাবিতে জিরো পয়েন্ট খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ‘ব্লকেড’১৪ ঘণ্টা আগেকুয়েট স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের নিচতলায় যেখানে অনশন কর্মসূচি চলছিল, সেখানে কয়েকটি তোশক এখনো আছে। বালিশ, স্ট্যান্ড ফ্যান আর কয়েকটি চেয়ার এখানে সেখানে ছড়িয়ে আছে। কথা হয় পুরকৌশল ২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি আজ সকালে বলেন, ‘ভিসিকে সরকারের পক্ষ থেকে অপসারণ করা হচ্ছে বলে আমরা জানতে পারি। তখন থেকে ক্যাম্পাসে আনন্দের বন্যা বইতে শুরু করে। দীর্ঘ ৬৫ দিনের আন্দোলন ও ৫৮ ঘণ্টা কোনো ধরনের আপস মীমাংসায় না টলে আমরা আমরণ অনশনে ছিলাম।’
এমন অর্জনে অবদান রাখা সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক রাহাতুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যাঁরা অনশনে বসেছিলেন, রাজপথে নেমেছেন, সংহতি প্রকাশ করেছেন—সবাইকে এই বিজয়ে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। আগামী দিনেও কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো স্বৈরাচার যদি আবার মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে, আমরা দেশের শিক্ষার্থীরা ওই স্বৈরাচারকে প্রতিরোধ করব।’
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওই দিন দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এরপর ১৪ এপ্রিল রাতে সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই ঘটনার জেরে গত রোববার উপাচার্যের পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়।
গতকাল দুপুরে আরেকটি সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। এ ছাড়া সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গতকাল বিকেল থেকে ছাত্রদের ছয়টি ও ছাত্রীদের একটি হল আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেওয়া হয়। সভায় আগামী ৪ মে থেকে ক্লাস শুরু করার আগের সিদ্ধান্তটি বহাল রাখা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব জয় ম ছ ল আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
এবার লন্ডনে পুরস্কার জিতল ‘প্রিয় মালতি’
শঙ্খ দাশগুপ্তের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘প্রিয় মালতি’। এটি অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীরও প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা। গত ডিসেম্বরে ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশ প্যানোরামা সেকশনে সেরা সিনেমার পুরস্কার পায় সিনেমাটি। এবার লন্ডন বাঙালি চলচ্চিত্র উৎসবের অষ্টম আসরে দর্শক পুরস্কার অর্জন করেছে ‘প্রিয় মালতি’।
গত ২২ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়া এই উৎসবে ‘প্রিয় মালতি’ দর্শকদের কাছ থেকে দারুণ সাড়া পায়।
সামাজিক মাধ্যমে খবরটি জানিয়ে শঙ্খ দাসগুপ্ত লিখেছেন, “আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ‘প্রিয় মালতি’ লন্ডন বাঙালি চলচ্চিত্র উৎসবের দর্শক পুরস্কার জিতেছে। আমাদের গল্পে যারা বিশ্বাস রেখেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আপনাদের ভালোবাসা আর সমর্থনেই এটা সম্ভব হয়েছে। চলুন আরও এমন গল্প তৈরি করি, যা সীমানার গণ্ডি পেরিয়ে মানুষের হৃদয়কে যুক্ত করে।”
‘প্রিয় মালতী’ নির্মাণের পাশাপাশি এর গল্পকার ও চিত্রনাট্যকার শঙ্খ দাশগুপ্ত নিজেই। সিনেমায় বাস্তব জীবনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্মিত ‘প্রিয় মালতি’ একটি গভীর আবেগঘন নাটকীয় চলচ্চিত্র, যেখানে এক গর্ভবতী নারীর হঠাৎ ঘটে যাওয়া নাটকীয় জীবনের মোড়ের গল্প তুলে ধরা হয়েছে।
অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর পাশাপাশি এতে অভিনয়ে করেছেন নাদির চৌধুরী, আজাদ আবুল কালাম, মোমেনা চৌধুরী, সমু চৌধুরী, আনিসুল হক বোরুন, শাহজাহান সম্রাট এবং রিজভী রিজুসহ আরও অনেকে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২২ এপ্রিল বার্বিকান সিনেমায় উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছবিটি প্রদর্শিত হয়। এছাড়া ‘কায়রো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’ ও ভারতের ‘গোয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’-এ অফিসিয়ালি প্রদর্শিত হয়। আন্তর্জাতিক উৎসবে ঘুরে আসার পর গত ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে মুক্তি পায় সিনেমাটি।