Samakal:
2025-08-17@01:09:47 GMT

দুপুর ১টা বাজলেই ছুটির ঘণ্টা

Published: 4th, May 2025 GMT

দুপুর ১টা বাজলেই ছুটির ঘণ্টা

ঘড়ির কাঁটা দুপুর ১টা পেরোলেই ঢংঢং করে বেজে ওঠে ছুটির ঘণ্টা। খানিক বাদেই স্কুলের শ্রেণিকক্ষগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। কোলাহলের পরিবর্তে নেমে আসে সুনসান নীরবতা। এটি কুষ্টিয়ার কুমারখালীর জগন্নাথপুর ইউনিয়নের হাসিমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিদিনকার চিত্র। 
শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে ক্লাস শুরু হয়ে বিকেল ৪টায় ছুটি দেওয়ার কথা। কিন্তু হাসিমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস চলে প্রধান শিক্ষকের খেয়ালখুশিমতো। সেখানে নিয়মিতভাবে দুপুর ১টা বাজলেই পড়ে ছুটির ঘণ্টা। এ নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। 
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হাসিমপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাস হয় না। শিক্ষকরা 
বিদ্যালয়ে এসে ক্লাসে না গিয়ে কার্যালয়ে বসে থাকেন। দুপুর ১টা বাজলেই ছুটি দিয়ে চলে যান যে যাঁর মতো।
অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রাহুল হোসেন জানায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নাম ডাকে। প্রতিদিন দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যে স্কুল ছুটি হয়ে যায়। 
নবম শ্রেণির ছাত্রী শাকিলা খাতুনের ভাষ্য, প্রতিদিনই একটা-দুটো ক্লাস নেন শিক্ষকরা। দুপুর ১টা বাজলেই ছুটি দেওয়া হয়। সামনে পরীক্ষা  তবুও অন্যান্য ক্লাস হয় না। একই ভাষ্য ওই শ্রেণির অনন্যা খাতুনেরও। 

অভিভাবক মোহাম্মদ আলী বলেন, ১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই স্কুলে আগের মতো লেখাপড়া হয় না। শিক্ষকরা সবাই দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। 
বিদ্যালয় থেকে প্রায় ৩০ গজ দূরে ব্যবসায়ী আব্দুর রহিমের দোকান। তাঁর মেয়ে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আব্দুর রহিম জানান, স্কুলে ঠিকমতো ক্লাস হয় না। প্রতিদিন দুপুর ১টা বাজলেই ছুটি হয়ে যায়। এসব দেখার যেন কেউ নেই। স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। 
বিদ্যালয়ের অ্যাডহক কমিটির অভিভাবক সদস্য হাসানুর রহমান জানান, বিদ্যালয়ে ঠিকমতো ক্লাস হচ্ছে না। প্রধান শিক্ষক নানা অনিয়মে জড়িত। স্কুলের বিষয়ে কিছু বলতে গেলে দুর্ব্যবহার করেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি শিগগিরই ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দেবেন। 
বিদ্যালয়ের পাশেই সহকারী শিক্ষক আবু খোকনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন দুপুর ১টার দিকে বিদ্যালয় ছুটি হয়। এটা প্রধান শিক্ষকের ব্যাপার।’
গত রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় সুনসান নীরবতা। নেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী। পরিচ্ছন্নতাকর্মী পতাকা নামাচ্ছেন। শ্রেণিকক্ষগুলোতে তালা ঝুলছে। শিক্ষক কক্ষে শূন্য চেয়ার-টেবিল। 
বিকেল ৪টার আগে ছুটি দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক আশরাফুল আলম বলেন, ‘ছুটির বিষয়ে হেড স্যারের (প্রধান শিক্ষক) সঙ্গে কথা বলেন।’
এসএসসি পরীক্ষার অজুহাত দিয়ে নির্ধারিত সময়ের আগে প্রতিদিন বিদ্যালয় ছুটি দেওয়ার কথা স্বীকার করেন প্রধান শিক্ষক মো.

নুর উদ্দিন। 
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুল হক জানান, বিকেল ৪টার আগে বিদ্যালয় ছুটি দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম জানান, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

‘হারানো দিন’ থেকে ‘আম্মাজান’—শবনমের পূর্ণতার যাত্রা

মাত্র ১৫ বছর বয়সে অভিনয় শুরু শবনমের। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান মিলিয়ে টানা চার দশকের অভিনয়জীবন তাঁর। ২৬ বছর ধরে অভিনয়ে নেই তিনি। এরপরও চলচ্চিত্রের বিভিন্ন আড্ডায় প্রাসঙ্গিক। আজ তাঁর জন্মদিন। শবনমকে নিয়ে লিখেছেন মনজুর কাদের

‘হারানো দিন’ সিনেমা দিয়েই শবনম সাড়া ফেলেন। এ সিনেমার ‘আমি রূপনগরের রাজকন্যা রূপের জাদু এনেছি, ইরান-তুরান পার হয়ে আজ তোমার দেশে এসেছি’ গানটি আজও যেন দর্শকের মুখে মুখে। গানটিতে পর্দায় ঠোঁট মিলিয়েছিলেন শবনম। অভিষেক সিনেমাই সুপারহিট। এরপর শুধুই এগিয়ে যাওয়া। মুস্তাফিজ পরিচালিত সিনেমাটি ১৯৬১ সালে মুক্তি পায়।

ষাট থেকে নব্বই দশক পর্যন্ত বাংলাদেশ আর পাকিস্তান মিলিয়ে প্রায় ১৮৫টি সিনেমায় অভিনয় করেন শবনম। তিনিই একমাত্র অভিনেত্রী, যিনি পাকিস্তানি সিনেমার সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘নিগার অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন মোট ১৬ বার। তাঁর এ রেকর্ড কেউ ভাঙতে পারেনি। এক বছর আগে পাকিস্তান সরকার দেশটির তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার সিতারা-ই-ইমতিয়াজ দেন শবনমকে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও পাকিস্তান মিলিয়ে বহু সম্মাননায় সমৃদ্ধ হয় তাঁর অর্জনের ঝুলি।

বরেণ্য অভিনয়শিল্পী শবনমের আসল নাম ঝর্ণা বসাক। ১৯৪৬ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকার নবাবপুরে জন্ম। পরিচালক এহতেশামের ‘চান্দা’ সিনেমায় ১৯৬২ সালে অভিনয় করেন তিনি। এই নির্মাতা ‘হারানো দিন’ সিনেমায় তাঁকে শবনম নামটি দেন। ১৯৬৮ সালে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের করাচিতে স্থায়ীভাবে বাস করতে থাকেন শবনম।

সত্তর দশকের শুরুতে শবনম পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় নায়িকা হিসেবে নিজের স্থান পাকাপোক্ত করেন। ১৯৮৮ সালে শবনম ঢাকা ও লাহোরের সিনেমায় একসঙ্গে অভিনয় করতে থাকেন। নব্বই দশকের শেষভাগে ঢাকায় এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। সর্বশেষ তিনি অভিনয় করেন ‘আম্মাজান’ সিনেমায়। এ সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করে সব বয়সী দর্শকের কাছে ‘আম্মাজান’ হিসেবে নতুন করে পরিচিতি পান।

শবনম বলেন, ‘ভাগ্য আমার এতটাই ভালো, আমার অভিনীত প্রথম ও শেষ সিনেমা ছিল আমার ক্যারিয়ারের সেরা ও হিট সিনেমা।’

শবনম

সম্পর্কিত নিবন্ধ