জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার অন্য দুই আসামির মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও দেওয়া হয়েছে মৃত্যুদণ্ড। পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে সাবেক পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে।

এ রায় ঘোষণার পরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। সোমবার (১৭ নভেম্বর) বেলা আড়াটার দিকে শেখ রাসেল শিশু পার্কের সামনে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। প্রায় বিশ মিনিটের মতো সড়কে অবস্থানের পর রাস্তার ওপর আগুন ধরিয়ে তারা পালিয়ে যান। তবে, বর্তমানে টুঙ্গিপাড়ার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

এছাড়া, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে মহাসড়কে কাঠ-পাটখড়ি দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে তারা পালিয়ে যান।

এর আগে, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ডুমদিয়া এলাকায় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বিক্ষোভ প্রদর্শন ও পাটখড়ি দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান। এছাড়া, সদর উপজেলার ৭ মার্চ চত্বরের উল্টো দিকে ফসলের মাঠে মধ্যে কয়েকজন লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।

সকাল পৌনে ৮ টার দিকে কাশিয়ানী উপজেলার তিলছড়া বাজার এলাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে মহাসড়কে অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে যানবাহন আটকা পড়ে।

স্থানীয়রা জানান, নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী মহাসড়কের পাশে রাখা গাছের গুড়ি ফেলে ২০ মিনিটের মতো মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে কিছু যানবাহন আটকা পড়ে। খবর পেয়ে কাশিয়ানী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারা পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ গাছের গুঁড়ি সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

এ বিষয়ে কাশিয়ানী থানার ওসি কামাল হোসেন বলেন, ‘‘নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করেছিল। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যান।’’

এদিকে, রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি জোরদার করা হয়েছে টহল।

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ের পর জেলা শহরে একপ্রকার নিস্তব্ধতা নিয়ে আসে। প্রায় ফাঁকা হয়ে যায় সড়ক। এ রায়ের বিষয়ে জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষদের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ঢাকা/বাদল/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ প লগঞ জ ন ত কর ম

এছাড়াও পড়ুন:

ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু

দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি মাসে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ৬১ জনের মৃত্যু হলো।

আজ সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, গতকাল রোববার সকাল আটটা থেকে আজ সকাল আটটা পর্যন্ত ১ হাজার ৭ জন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের হাসপাতালগুলোয় ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ৩৩৩ জন। দুই সিটির বাইরে ঢাকা বিভাগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ২৫৪। সব মিলিয়ে এবার এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ে ৮৬ হাজার ৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরের ৯ মাসে এখন পর্যন্ত ৩৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত মাসে মারা গেছেন ৮০ জন, যা চলতি বছর এখন পর্যন্ত কোনো এক মাসে ডেঙ্গুতে সর্বোচ্চ মৃত্যু। গত মাসে ডেঙ্গু নিয়ে সর্বোচ্চ ২২ হাজার ৫২০ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গুতে ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ১৫ হাজার ৮৬৬ জন। আর চলতি মাসে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার ১৪২ জন ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

২০০০ সালে ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দেয়। ওই বছর ৫ হাজার ৫৫১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এর মধ্যে মারা যান ৯৩ জন। ঘটনাটি সাধারণ মানুষের কাছে নতুন ছিল। ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত ও মারা যান ২০২৩ সালে। সে বছর আক্রান্ত হয়েছিলেন তিন লাখের বেশি মানুষ। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ