ঢাকার সাত কলেজকে নিয়ে প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির নামে ভর্তি ও ক্লাস শুরু করা নিয়ে যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে, সেটি আইনসিদ্ধ নয় বলে মনে করেন এসব কলেজের শিক্ষকেরা। এ নিয়ে সৃষ্ট জটিল পরিস্থিতির কারণে এসব কলেজের শিক্ষকেরা আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনের পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলমান পরীক্ষাগুলো এই কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।

সাত কলেজের শিক্ষকেরা আজ সোমবার ঢাকা কলেজ মিলনায়তনে এক জরুরি সভায় এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রস্তাবিত ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি (বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন) বা সমকক্ষ প্রতিষ্ঠানের অন্তর্বর্তী প্রশাসক ১৬ নভেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। তাতে বলা হয়, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক পর্যায়ের ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের নিশ্চায়ন প্রক্রিয়া ১৭ থেকে ২০ নভেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করে ২৩ নভেম্বরের মধ্যে ক্লাস শুরু করতে হবে।

কিন্তু আজকের সভায় শিক্ষকেরা বলেছেন, প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ার আগেই এই বিজ্ঞপ্তি আইনি জটিলতা তৈরি করতে পারে। শিক্ষকেরা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা হিসেবে বিধিবদ্ধভাবে সরকারি কলেজে শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাই প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিশ্চায়ন ও ক্লাস শুরুর প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের সুযোগ নেই। তাঁরা দ্রুততম সময়ে সাত কলেজের স্বতন্ত্র কাঠামো অক্ষুণ্ন রেখে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ জারি করে সমস্যার সন্তোষজনক সমাধানের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।

ঢাকার এই সাত কলেজ ঘিরে অনেক দিন ধরেই সংকট চলছে। ২০১৭ সালে যথেষ্ট প্রস্তুতি ছাড়াই এই সাত কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল। সরকারি এই কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও তিতুমীর কলেজ। তখন থেকেই সংকট ছিল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে সাত কলেজকে আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু নতুন বিশ্ববিদ্যালয় চূড়ান্ত করার আগেই অধিভুক্তি বাতিল করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। এখন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষকে প্রশাসক করে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থায় সাত কলেজের কার্যক্রম চলছে। সম্প্রতি এসব কলেজ একীভূত করে সরকার যে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা করছে, তার কাঠামো নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন। এ নিয়ে নতুন যে সংকট তৈরি হয়েছে, তা কাটেনি। বরং নতুন নতুন সংকট সামনে আসছে। প্রস্তাবিত কাঠামোর বিরোধিতা করে শিক্ষকেরা এর আগে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছিলেন। এখন টানা তিন দিনের কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুনসাত কলেজ ঘিরে নতুন সংকট২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এসব কলেজের মধ্যে বর্তমানে ইডেন ও তিতুমীরে শুধু স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়ানো হয়। বাকি পাঁচটি কলেজে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের পাশাপাশি উচ্চমাধ্যমিকও পড়ানো হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত ব ত স ত কল জ ব কল জ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে চাষাঢ়ায় এনসিপি’র মিষ্টি বিতরণ

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ফাঁসির রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সোমবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্যোগে শহরের চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় এ মিষ্টি বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। রায় ঘোষণার পর নেতাকর্মীরা উল্লাস প্রকাশ করেন এবং পথচারীদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করেন।

এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক (দক্ষিণ অঞ্চল) শওকত আলী বলেন, আমরা এই রায়কে স্বাগত জানাই। খুনি হাসিনার নির্দেশে ও আসাদুজ্জামান খান কামালের ভূমিকার কারণে প্রায় ১৪০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছে। আজ আদালত ন্যায়বিচার করেছে।

শওকত আলী আরও বলেন, আগামী দিনে যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেবেন, তাদের জন্যও এটি শিক্ষা হওয়া উচিত—জনগণের বিপক্ষে গেলে জনগণই প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ইতিহাস যেন আর কখনো পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

মিষ্টি বিতরণ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির জেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী আহমেদুর রহমান তনু, জেলা সংগঠক সোনিয়া আক্তার (লুবনা), ফজলে রাব্বি, রাইসুল ইসলাম, ফারদিন শেখ ও আবুল খায়ের প্রমুখ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ