রাজশাহীতে গ্রেপ্তারের পর স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে বহিষ্কার, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ
Published: 17th, November 2025 GMT
রাজশাহীতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রফিকুল ইসলামকে (৩০) দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল রোববার জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের পক্ষ থেকে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
রফিকুল রাজশাহী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তাঁর বাড়ি জেলার পবা উপজেলার ভূগরইল এলাকায়। ১১ নভেম্বর রাতে নগরের আমচত্বর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে শাহ মখদুম থানা-পুলিশ।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান (লিটন) প্রথম আলোকে বলেন, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ১৩ নভেম্বর রফিকুলকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর কাছ থেকে জবাব চাওয়া হয়। জবাব না পেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। কোনো দখলবাজ-চাঁদাবাজকে দলে বরদাশত করা হবে না।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নগরের এয়ারপোর্ট থানায় দুটি মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। আর শাহ মখদুম থানায় করা তিনটি মামলায় তিনি এজাহারভুক্ত আসামি।
ভয়ভীতি প্রদর্শন ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ১১ নভেম্বর রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই মামলার বাদী সৈয়দা রেহানা আশরাফী। তিনি বলেন, ‘২০১১ সালে ভূগরইল মৌজার ৫৫১ নম্বর দাগে সোয়া দুই কাঠা জমি কেনার পর সীমানাপ্রাচীর দিয়ে ঘিরে দিই। কিন্তু এই আসামি চক্রের সদস্যরা আমার প্রাচীর ভেঙে ফেলে। আমি এ বিষয়ে আদালতে অভিযোগ করেছিলাম। পরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রফিকুল ইসলাম আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে জমির প্রাচীর পুনরায় গেঁথে দেওয়ার মৌখিক চুক্তি করে ৩২ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি টাকা পরিশোধ করলেও তাঁরা কাজ করেননি। ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।’
এর আগে ২৩ অক্টোবর রফিকুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে শাহ মখদুম থানায় একটি মামলা করেন জাফর ইকবাল (৫০) নামের এক ব্যক্তি। তাঁর বাড়ি রাজশাহী নগরের শালবাগান এলাকায়। মামলার এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, ভূগরইল এলাকায় তাঁর নিজের জমিতে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করছিলেন। ২০ অক্টোবর সকালে রফিকুল ও লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গিয়ে তাঁর ব্যবস্থাপক বাবুল রহমানের কাছে ৫০ হাজার ও টাকা একটি টেলিভিশন দাবি করেন। টাকা না দিতে চাইলে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন। ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশ ডাকলে তাঁরা চলে যান। কিন্তু পুলিশ চলে যাওয়ার প্রায় ২০ মিনিট পর তাঁরা ফিরে আসেন। পুলিশ ডাকার অভিযোগে ব্যবস্থাপককে তাঁরা মারধর করেন।
গত মাসে রফিকুল, বশিরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে নগরের শাহ মখদুম থানায় একটি অভিযোগ করেন পবা উপজেলার উত্তর নওদাপাড়া এলাকার কালুর মোড়ের বাসিন্দা আবদুল্লাহ (২৩)। এতে তিনি বলেছেন, তাঁর নামে ইস্যু করা একটি গভীর নলকূপ তাঁরা জোর করে ভোগদখল করছেন। তবে ওই অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি।
এ ছাড়া রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নির্মাণাধীন বাড়ির মালিকের কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। রাজশাহীর পবা উপজেলার ভূগরইল শিহাবের মোড় এলাকায় আইনুল হক নামের এক ব্যক্তি তিনতলা বাড়ি নির্মাণ করছেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নওগাঁয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাস তিনেক আগে এই বাড়ির মালিকের কাছে রফিকুল ও তাঁর সহযোগীরা এসে চাঁদা দাবি করেন। তখন বাড়ির মালিক তাঁদের ৩০ হাজার টাকা দেন। এতে তাঁরা সন্তুষ্ট হননি। পরে তাঁরা প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকার দরজা নিয়ে চলে যান। তবে ওই ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি।
১২ নভেম্বর বিকেলে নির্মাণাধীন ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কেউ নেই। বাইরের দরজা বন্ধ। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে আইনুল হকের ছেলে পরিচয় দিয়ে একজন বলেন, তাঁদের কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। রাজশাহীর ওই বাড়ি বিক্রি করে দেওয়ার জন্য ক্রেতা খুঁজছেন। আর শহরে যাবেন না। কোনো মামলাও করবেন না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ হ মখদ ম থ ন ব যবস থ এল ক য় নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজশাহীতে গ্রেপ্তারের পর স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে বহিষ্কার, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ
রাজশাহীতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা রফিকুল ইসলামকে (৩০) দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল রোববার জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের পক্ষ থেকে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
রফিকুল রাজশাহী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তাঁর বাড়ি জেলার পবা উপজেলার ভূগরইল এলাকায়। ১১ নভেম্বর রাতে নগরের আমচত্বর এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে শাহ মখদুম থানা-পুলিশ।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাসুদুর রহমান (লিটন) প্রথম আলোকে বলেন, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ১৩ নভেম্বর রফিকুলকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর কাছ থেকে জবাব চাওয়া হয়। জবাব না পেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। কোনো দখলবাজ-চাঁদাবাজকে দলে বরদাশত করা হবে না।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নগরের এয়ারপোর্ট থানায় দুটি মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। আর শাহ মখদুম থানায় করা তিনটি মামলায় তিনি এজাহারভুক্ত আসামি।
ভয়ভীতি প্রদর্শন ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ১১ নভেম্বর রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই মামলার বাদী সৈয়দা রেহানা আশরাফী। তিনি বলেন, ‘২০১১ সালে ভূগরইল মৌজার ৫৫১ নম্বর দাগে সোয়া দুই কাঠা জমি কেনার পর সীমানাপ্রাচীর দিয়ে ঘিরে দিই। কিন্তু এই আসামি চক্রের সদস্যরা আমার প্রাচীর ভেঙে ফেলে। আমি এ বিষয়ে আদালতে অভিযোগ করেছিলাম। পরে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রফিকুল ইসলাম আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে জমির প্রাচীর পুনরায় গেঁথে দেওয়ার মৌখিক চুক্তি করে ৩২ হাজার টাকা দাবি করেন। আমি টাকা পরিশোধ করলেও তাঁরা কাজ করেননি। ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।’
এর আগে ২৩ অক্টোবর রফিকুল ইসলাম ও তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে শাহ মখদুম থানায় একটি মামলা করেন জাফর ইকবাল (৫০) নামের এক ব্যক্তি। তাঁর বাড়ি রাজশাহী নগরের শালবাগান এলাকায়। মামলার এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, ভূগরইল এলাকায় তাঁর নিজের জমিতে সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করছিলেন। ২০ অক্টোবর সকালে রফিকুল ও লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে গিয়ে তাঁর ব্যবস্থাপক বাবুল রহমানের কাছে ৫০ হাজার ও টাকা একটি টেলিভিশন দাবি করেন। টাকা না দিতে চাইলে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেন। ৯৯৯-এ কল দিয়ে পুলিশ ডাকলে তাঁরা চলে যান। কিন্তু পুলিশ চলে যাওয়ার প্রায় ২০ মিনিট পর তাঁরা ফিরে আসেন। পুলিশ ডাকার অভিযোগে ব্যবস্থাপককে তাঁরা মারধর করেন।
গত মাসে রফিকুল, বশিরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে নগরের শাহ মখদুম থানায় একটি অভিযোগ করেন পবা উপজেলার উত্তর নওদাপাড়া এলাকার কালুর মোড়ের বাসিন্দা আবদুল্লাহ (২৩)। এতে তিনি বলেছেন, তাঁর নামে ইস্যু করা একটি গভীর নলকূপ তাঁরা জোর করে ভোগদখল করছেন। তবে ওই অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি।
এ ছাড়া রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নির্মাণাধীন বাড়ির মালিকের কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। রাজশাহীর পবা উপজেলার ভূগরইল শিহাবের মোড় এলাকায় আইনুল হক নামের এক ব্যক্তি তিনতলা বাড়ি নির্মাণ করছেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি নওগাঁয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাস তিনেক আগে এই বাড়ির মালিকের কাছে রফিকুল ও তাঁর সহযোগীরা এসে চাঁদা দাবি করেন। তখন বাড়ির মালিক তাঁদের ৩০ হাজার টাকা দেন। এতে তাঁরা সন্তুষ্ট হননি। পরে তাঁরা প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকার দরজা নিয়ে চলে যান। তবে ওই ঘটনায় থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি।
১২ নভেম্বর বিকেলে নির্মাণাধীন ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কেউ নেই। বাইরের দরজা বন্ধ। মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে আইনুল হকের ছেলে পরিচয় দিয়ে একজন বলেন, তাঁদের কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। রাজশাহীর ওই বাড়ি বিক্রি করে দেওয়ার জন্য ক্রেতা খুঁজছেন। আর শহরে যাবেন না। কোনো মামলাও করবেন না।