পেশী হল অত্যন্ত বিশেষায়িত সংকোচনশীল কোষ। যা পানি এবং এক-পঞ্চমাংশ প্রোটিন দিয়ে তৈরি। তাই পেশীর আকার ঠিক রাখতে এবং পেশী মেরামত করতে, নিয়মিত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ।

পেশীর শক্তি বাড়ানোর জন্য প্রোটিন, শর্করা এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ খাবার অপরিহার্য। এই উপাদানগুলো পেশী মেরামত এবং গঠনে সহায়তা করে, পাশাপাশি শরীরকে প্রয়োজনীয় শক্তি জোগায়। কোন কোন খাবার পেশীর শক্তি বাড়াতে সহায়তা দিতে পারে, চলুন জানা যাক। 

মুরগির মাংস
একশো গ্রাম মুরগির মাংস শরীরে ত্রিশ গ্রাম প্রোটিন এবং চার গ্রাম চর্বি সরবরাহ করতে পারে। যার কারণে অনেক ক্রীড়াবিদ নিয়মিত তাদের খাবার তালিকায় মুরগির মাংস অন্তর্ভুক্ত করেন। আপনিও খাবারে মুরগির মাংস যোগ করতে পারেন।

ডিম
ডিমে উচ্চ মানের প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং বি ভিটামিন রয়েছে। যা পেশী গঠনে সহায়তা করে।

মাছ
স্যামন এবং টুনা মাছ প্রোটিন এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পেশীর ব্যথা কমাতে এবং পেশী বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে।

দই
দইতে প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট থাকে যা ব্যায়ামের পরে পেশী পুনরুদ্ধার এবং বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে। দইতে কনজুগেটেড লিনোলিক অ্যাসিড থাকে যা একটি বিশেষ ধরণের চর্বি। 

ডাল এবং বিনস
মটরশুঁটি, মসুর ডাল এবং অন্যান্য ডাল উদ্ভিদ-ভিত্তিক প্রোটিন এবং ফাইবারের ভালো উৎস।

টোফু
সয়াবিন থেকে তৈরি টোফু নিরামিষাশীদের জন্য প্রোটিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। 

সূত্র: ফিচারফিট

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রগ র ম

এছাড়াও পড়ুন:

জাহানারার পাশে বাংলাদেশ, কিন্তু…

বাংলাদেশ সরকার, ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (কোয়াব) এবং জাতীয় পুরুষ দলের সাবেক সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা, তামিম ইকবালসহ আরো অনেকেই জাতীয় নারী দলের সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলমের উত্থাপিত যৌন হয়রানি এবং মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং দ্রুত, সুষ্ঠু এবং স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। 

কিন্তু একই ইসু‌্যতে আশ্চর্যজনকভাবে বর্তমান নারী দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ‌্যোতিসহ বাকিরা একেবারেই নিশ্চুপ। বিস্ময়কর হচ্ছে পুরুষ ক্রিকেটাররাও বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন। অথচ স্পর্শকাতর ইসু‌্যটিতে তারা সঠিক তদন্ত, সুষ্ঠু বিচার চাইতেই পারেন। যা বিসিবির সঙ্গে তাদের চুক্তির সাংঘর্ষিক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিসিবি যেখানে তদন্ত কমিটি তৈরি করেছে এবং সরকারও সহায়তার আশ্বাস দিচ্ছে সেখানে ক্রিকেটারদের নিরাবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। 

এক সাক্ষাৎকারে জাতীয় দলের পেসার জাহানারা আলম বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাবেক নির্বাচক ও টিম ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। পিরিয়ডের কথা জানতে চেয়ে বাজে প্রস্তাব দেওয়া, হ্যান্ডশেকের বদলে জড়িয়ে ধরার অভিযোগ এনেছেন তিনি। জাহানারা দাবি করেছেন, অসংখ্যবার বিসিবিকে এসব যৌন নির্যাতনের কথা অভিযোগ আকারে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু কোন প্রতিকার পাননি।

জাহানারার অভিযোগ আমলে নিয়ে তার পাশে থাকার কথা বলেছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের দপ্তর থেকে ইতিমধ্যে ভুক্তভোগীর (জাহানারা আলম) সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এটা যেহেতু ফৌজদারি অপরাধ। তাই তিনি যদি আইনি ব্যবস্থা নিতে চান, তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হবে। যেন দোষীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পান—আমরা সেটা নিশ্চিত করব।’’

এ ধরনের ন্যক্কারজনক কাজ করে কেউ ছাড় পাবেন না বলেও জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা, ‘এসব কথা এবারই প্রথম শুনতে পেলাম—বিষয়টি এমন নয়। অন্যান্য খেলা থেকেও এমন অনেক অভিযোগ আসে। এই ধরনের কাজ করে কেউ যেন পার পেয়ে না যায়, সেটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে।’’

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘বাংলাদেশের ক্রিকেট ও গোটা ক্রীড়াঙ্গনের স্বার্থে জাহানারা আলমের প্রতিটি অভিযোগ বিসিবি গুরুত্ব দিয়ে দেখবে আশা করি। আশা করি, বিসিবির তদন্ত কমিটি পুরোপুরি প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করবে এবং অভিযোগের সত্যতা পেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে, যেন এসবের পুনরাবৃত্তি আর কখনো না হয়। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন নিরাপদ হোক সবার জন্য।’’

তামিম ইকবাল লিখেছেন, ‘‘জাহানারা আলম যে অভিযোগগুলো তুলেছেন, সবগুলোই গুরুতর এবং সেসব সত্যি হলে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। শুধু একজন জাতীয় ক্রিকেটার বা সাবেক অধিনায়ক বলেই নয়, যে কোনো পর্যায়ের ক্রিকেটার হোক বা যে কোনো খেলার ক্রীড়াবিদ কিংবা যে কোনো নারী, কারো প্রতিই এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। জাহানারার অভিযোগগুলোর প্রেক্ষিতে যথাযথ ব্যবস্থা যদি না নেওয়া যায়, যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে কোনো মেয়ে ক্রিকেট বা যে কোনো খেলায় আসতে ভয় পাবে, খেলাকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে পিছপা হবে। আমরা সেটা হতে দিতে পারি না।’’

কোয়াব বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘‘একজন জাতীয় ক্রিকেটার ও সাবেক জাতীয় অধিনায়ক যৌন হয়রানি ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, কান্নাভেজা চোখে তিনি হৃদয়ের ক্ষত তুলে ধরেছেন, আমাদের পুরো ক্রিকেট সমাজকে তা নাড়িয়ে দিয়েছে। জাহানারা আলমের প্রতিটি অভিযোগ গুরুতর এবং কোনোভাবেই এসব উপেক্ষা করার মতো নয়।’’

নারী ক্রিকেটারদের মধ‌্যে কেবল রুমানা আহমেদ নিজের ফেসবুকে স্ট‌্যাটাস দিয়েছেন, ‘‘বাকরুদ্ধ।’’ অথচ বাকিরা একেবারেই নিরব। ব‌্যক্তি পর্যায়ে জাহানারার সঙ্গে অধিনায়ক জ‌্যোতির সম্পর্ক ভালো না তা আগেই সামনে এসেছে। কিছুদিন আগেই নিজের ক‌্যারিয়ার থেমে যাওয়ার পেছনে জাহানারা জ‌্যোতিকে দায়ী করে জ্বালাময়ী বক্তব‌্য দেন। পাল্টা জবাব দিয়েছেন জ‌্যোতিও। কিন্তু যৌন নির্যাচনের যে ইসু‌্যটি সামনে এসেছে তা নিয়ে সোচ্চার হওয়ার দরকার ছিল সর্বমহলেই. এমনটাই মনে করেন ক্রীড়াঙ্গনের সমর্থক, নীতি নির্ধারকরা।

বাংলাদেশ নারী দলের হয়ে ১৩৫টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন জাহানারা। নারী ক্রিকেটারদের প্রথম সারির সেনানিদের একজন তিনি। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়াতে আছেন। সেখানে ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি লেভেল-২ কোচিং কোর্স সম্পন্ন করেছেন।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ