রাজধানীর মিরপুরে প্রকাশ্যে যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়াকে হত্যা করে পানানোর সময় দুর্বৃত্তদের গুলিতে মো. আরিফ (২০) নামে এক অটোরিকশাচালক আহত হয়েছেন।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

আরিফকে হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী মো. পিয়বরুল ইসলাম জানান, আরিফ পেশায় অটোরিকশাচালক। ঘটনার সময় সে মিরপুর-১১ নম্বরের ‘সি’ ও ‘এ’ ব্লকের মাঝামাঝি রাস্তায় ছিলেন। ওই সময় হঠাৎ দুজন হেলমেট পরিহিত ব্যক্তি দ্রুত এসে তার রিকশায় উঠেন এবং তাকে দ্রুত যেতে বলেন। এমনকি দ্রুত না গেলে তাকে গুলি করার হুমকিও দেন তারা।

পরে আরিফ অটোরিকশা চালানো শুরু করতেই তার পিঠে এক রাউন্ড গুলি করে রিকশা থেকে নেমে পালিয়ে যায় ওই দুই ব্যক্তি। আহত আরিফের বাসা মিরপুর-১২ নম্বর এলাকায়।

ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মোহাম্মদ ফারুক বলেন, “পল্লবী থেকে গুলিতে আহত এক আটোরিকশা চালকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। তার পিঠে একটি গুলি বৃদ্ধ হয়েছে। জরুরি বিভাগে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”

এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় মিরপুর পুরনো পল্লবী থানার পেছনের সি ব্লক এলাকায় পল্লবী থানা যুবদলের সদস্য সচিব গোলাম কিবরিয়াকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে মিরপুর ১২ পল্লবীর বিক্রমপুর হার্ডওয়্যার অ্যান্ড স্যানিটারি নামের একটি দোকানে ছিলেন যুবদল নেতা গোলাম কিবরিয়া।

ওই সময় হঠাৎই নীল রঙের পাঞ্জাবি ও হেলমেট পরিহিত এক যুবক বন্দুক তাক করে গোলাম কিবরিয়ার দিকে ছুটে আসেন। তার পেছনে সাদা রঙের চাদর গায়ে দেওয়া হেলমেট পরিহিত আরো এক যুবক দোকানে ঢুকেন।

নীল পাঞ্জাবি পরিহিত যুবক দোকানে ঢোকামাত্রই এক হাত দূর থেকে গোলাম কিবরিয়াকে লক্ষ্য করে মাথা, বুকে ও পিঠে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়েন। এরপর গোলাম কিবরিয়া লুটিয়ে পড়লে ওই যুবক চলে যেতে লাগলে সাদা চাদর পরিহিত আরেক যুবক এসে আরো কয়েক রাউন্ড গুলি করেন। সবমিলিয়ে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ৭ থেকে ৮ রাউন্ড গুলি করে ওই দুই যুবক দ্রুত পালিয়ে যান।

এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল থেকে ৭ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আটক ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক যুবদল নেতাকে গুলি করে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বিএনপির এই নেতা জানান, গুলিবিদ্ধ কিবরিয়াকে মুমূর্ষু অবস্থায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে নেওয়া হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মফিজুর রহমান জানিয়েছেন, গোলাম কিবরিয়ার পল্লবী থানা যুবদলের নেতা ছিলেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ঢাকা/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ ল ম ক বর য় র উন ড গ ল য বদল ন ত ক বর য় ক পর হ ত

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আল্লাহর সেনাবাহিনী: ফিল্ড মার্শাল মুনির

আইন-আদালতের ঊর্ধ্বে স্থান পাওয়া পাকিস্তানের সেনাপ্রধান চিফ অব স্টাফ ও ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির বলেছেন, “পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আল্লাহর সেনাবাহিনী। এই বাহিনীর সেনারা আল্লাহর নামে লড়াই করে।”

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের বাসভবনে জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ ইবন আল হুসেইনের সম্মানে আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজের সময় দেশটির ‘ডেইলি জং’ নামে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

১৩ নভেম্বরকে ঘিরে কক্সবাজারে সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

নির্বাচন পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা বাড়ল

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে কোনো আগ্রাসন এলে তার কঠোর জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন আসিম মুনির। তিনি বলেন, “পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে কোনো রকম আগ্রাসন হলে ক্ষিপ্রতা ও কঠোরতার সঙ্গে দাঁতভাঙা উত্তর দেওয়া হবে।”

ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক যুদ্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে আকাশের দিকে আঙুল উঁচিয়ে ইশারা করেন ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। 

তিনি বলেন, “পাকিস্তানের বিজয়ের পথে আমি নেতৃত্ব দিইনি; আল্লাহ দিয়েছেন। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে গত মে মাসে পাকিস্তানের শত্রুরা নিহত হয়েছিল। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আল্লাহর সেনাবাহিনী।  আল্লাহর নামে লড়াই করে এই বাহিনীর সেনারা।”

গত মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হয়। ভারত শুরু করে হামলা। ৫ ও ৬ মে রাতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ভারত। তবে সমানে সমান জবাব দেয় পাকিস্তান। ভারতের সাতটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ছয় দিনের লড়াইয়ের পর ১০ মে ভারত-পাকিস্তানে যুদ্ধবিরতি হয়। 

এই যুদ্ধে পাকিস্তান নিজেদের বিজয়ী দাবি করে। জয়ের পুরস্কার হিসেবে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে সর্বোচ্চ সামরিক সম্মান ‘ফিল্ড মার্শাল’ খেতাব দেয় দেশটির সরকার।

এই যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতাকারীর কৃতিত্ব দাবি করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ভারত তা প্রত্যাখ্যান করে। অবশ্য পাকিস্তান পুরো কৃতিত্ব ট্রাম্পকে দেয়। শুধু তাই নয়, কৃতজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ট্রাম্পের নাম প্রস্তাব করে পাকিস্তান সরকার। 

সেই থেকে ট্রাম্প ও ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের মধ্যে সখ্য তৈরি হয়। দুইবার ট্রাম্প তাকে হোয়াইট হাউসে ডেকে নিয়ে একসঙ্গে খেয়েছেন, রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেছেন। বিদেশি একজন সেনাপ্রধানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের এমন বৈঠক সাধারণত বিরল। 

ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ এবং ট্রাম্পের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠা আসিম মুনির পাকিস্তানের ক্ষমতার কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে উঠেছেন। সংবিধান সংশোধন করে তাকে আমৃত্যু আইন-আদালতের ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ইচ্ছামতো মেয়াদে পাকিস্তানের তিন বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনের অসীম ও নজিরবিহীন সুযোগ দেওয়া হয়েছে। 

পাকিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেল জিও নিউজের অনলাইন সংস্করণে লেখা হয়েছে, প্রেসিডেন্টের বাসভবনে রবিবার (১৬ নভেম্বর) পবিত্র কোরআনের আয়াত মনে করিয়ে দিয়ে আসিম মুনির বলেন, “আল্লাহ ইমানদারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, বিশ্বাসের সঙ্গে লড়লে তারা যেকোনো শত্রুকে পরাজিত করতে পারবে, সেখানে শত্রুরা যত শক্তিশালীই হোক না কেন। পাকিস্তান এই দৃষ্টান্ত গত মে মাসেই দেখিয়ে দিয়েছে।”

পাকিস্তানের সংবিধানের ২৭তম সংশোধনীর পর নতুন আইন অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান হিসেবে যেকোনো অপরাধ বা অভিযোগের ক্ষেত্রে আজীবন আইনগত দায়মুক্তি ভোগ করবেন তিনি। নজিরবিহীন এই ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার পর তিনি বললেন, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আল্লাহর সেনাবাহিনী।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ