ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাতে বলা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ঘোষিত রায়ের বিষয়ে ভারত অবগত হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘একটি নিকট প্রতিবেশী হিসেবে ভারত বাংলাদেশে শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি, স্থিতিশীলতাসহ বাংলাদেশের জনগণের সর্বোত্তম স্বার্থের বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ রয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জনে আমরা সব সময় সব অংশীজনের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে যুক্ত থাকব।’

আরও পড়ুনশেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালকে হস্তান্তরের জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান১ ঘণ্টা আগে

গত বছর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আজ শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আরেক আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দেওয়া হয়েছে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড।

এই রায় ঘোষণার পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানকে হস্তান্তরের জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত এই ব্যক্তিদের দ্বিতীয় কোনো দেশ আশ্রয় দিলে তা হবে অত্যন্ত অবন্ধুসুলভ আচরণ এবং ন্যায়বিচারের প্রতি অবজ্ঞার শামিল। আমরা ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন অনতিবিলম্বে দণ্ডপ্রাপ্ত এই দুই ব্যক্তিকে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে।’

আরও পড়ুনআড়াই ঘণ্টা ধরে পড়া হলো রায়, এরপর এল মৃত্যুদণ্ডের আদেশ৪ ঘণ্টা আগে

দুই দেশের মধ্যে থাকা প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে দুজনকে হস্তান্তর করাটা ‘ভারতের জন্য অবশ্যপালনীয় দায়িত্বও বটে’ বলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। অন্তর্বর্তী সরকার এর আগেও শেখ হাসিনাকে হস্তান্তর করার জন্য ভারতের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কিছু বলেনি ভারত সরকার।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

আমাকে কোথাও পাবে না, হে স্মৃতির দুরবিন

স্মৃতির দুরবিন

সব স্মৃতিকে ঘুম পাড়িয়ে আজ শিকারে যাব
যাওয়ার কথা উঠলেই সিঁড়িতে পায়ের ছাপ
যেন সমুদ্র, যেন জলের পৃষ্ঠা এ শহর,
যেন শরীরজুড়ে বিপন্ন বুদ্‌বুদ-পারফিউম

মধ্যরাতে হাওয়া আত্মসাৎ করে দীর্ঘশ্বাসের গিলোটিন,

জলপতনের শব্দ আসে শিশিরখোয়া রাতের কবজিতে
উড়ে যাব হাওয়াই জলে, মাছের কানকোয়
ঘামের অ্যাকুয়ারিয়ামে—
যেতে যেতে আকাশ বদল করে এত দূরে চলে যাব
আমাকে কোথাও পাবে না, হে স্মৃতির দুরবিন!

দীর্ঘশ্বাসের মতো কবিতা

তোমার থাকা এবং না থাকার মাঝখানে
দাঁড়িয়ে আছে হাইওয়ে ট্রেন, স্মৃতিঘর—যাবে?

বৃক্ষেরা তুলে রেখেছে জলের সিগন্যাল, রজঃস্বলা পাতা!

আড়চোখে তাকিয়ে আছে রাত্রি, গন্তব্যের বীজপত্র—
জুতোর ভ্রমণকাহিনি পড়তে পড়তে
পায়ের সাথে ঘুমিয়ে পড়েছে নিদ্রাহীন আঙুল।

এখানে রোদের ছায়া, আলো ও আঁধারের পর্যটন
 
এখানে শ্বাসনালি বেয়ে উঠে আসে নৈঃশব্দ্যের ঢেকুর—
দীর্ঘশ্বাসের মতো সুদীর্ঘ কবিতা।

পুনর্জন্ম

প্রার্থনায় নত হলে তোমাকে পাই,
পাপে ও তাপে,
আর্দ্রতার কিনারে পাই ঘামের পালঙ্ক-অনিদ্রাসূচকে।

বাতাসে উড়ছে ভুল বারান্দার ঝুলগন্ধম সময়
ধ্যান ভাঙলে একদিন ঈশ্বরের সাথে বদলে নেব
ঘুমের সেফটিপিন, জামার বোতাম

পুনর্জন্ম হলে একবার প্রেমিক হব

হাওয়া বদলে গেলে যেমন
জোছনায় চোখ রেখে ঘুমঘোরে জেগে ওঠে কুমারী নদী,
মৃতের শহরে দেবদারুগাছ হয়ে ওঠে
প্রিয়তম পুরুষ।

রাত্রির অন্ধ কপাট

বুকের ভেতর কে যেন দাঁড় টানে জলের মতো একা
জল কি নদীর দহন? রাতের মাইগ্রেন?

মুখাগ্নি জ্বালিয়ে রেখে উড়ে গেছে সামন্ত দিনের মেঘ
ধোঁয়ার অক্ষরে—
কত মুখ ছাই হলো নিজের উত্তাপে-অনিদ্রায়

আঁধারের তলপেটে জমে আছে ব্যথার ক্যানুলা, রক্তজবা
ওখানে ঘুম নেই—খুলে রাখি রাত্রির অন্ধ কপাট,
বাতাসে উড়িয়ে পাল—ধ্বসে গেছে নিদ্রার ঘুমগাছ

নিজেকে গিলে খাওয়া রাতে, রাত আসে না সহজে।

বৃষ্টিরেখা

বৃষ্টি পড়ছে ভেতর–বাহির—
তবু জল জানে না বৃষ্টিরেখা আর কত দূর!

আলমারিতে গুছিয়ে রেখেছি নদী,
তার ঘুম চুরি করে নিদ্রার ভেতর বয়ে চলেছে
প্রিয়তম সংসার-ঝাউপাতার প্রলাপ,

আমার না থাকাজুড়ে পড়ে আছি আমিই

আঙুলে ডুবিয়ে রেখেছি ইশ্বর
স্রোতের জলে ডুবে গেছে দ্রুতগামী ট্রেনের জংশন

আমাকে খুঁজতে এসে না পেয়ে ফিরে গেছি
আমি নিজেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ