জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তিনি জানান, সপ্তাহখানেক আগে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে বিষয়টি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানান আসিফ মাহমুদ।

এর আগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠনের দাবির মুখে গত বছরের ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ও সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মুখসারির অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া এখন অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্বে আছেন। তিনি আজ রাতে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ। সপ্তাহখানেক আগে থেকেই প্রসেস করে সব ফর্মালিটি শেষ করে এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনগুলোর নিষিদ্ধ এবং রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্নকরণ নিশ্চিত করাই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অঙ্গীকার।’

আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণার দাবিতে আজ রাত ১০টার পর থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। সেখানে হাসনাতের সঙ্গে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা যোগ দিয়েছেন। অবস্থান কর্মসূচিতে ‘ব্যান করো ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘গোলামি না আজাদী, আজাদী আজাদী’ প্রভৃতি বলে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে। এই কর্মসূচির কারণে যমুনার সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এই কর্মসূচি চলার মধ্যেই রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, ফ্যাসিস্ট ও খুনি আওয়ামী লীগের বিচার নিয়ে টালবাহানা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও নিষিদ্ধের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না।’

জুলাইয়ের সব শক্তি, শহীদ পরিবারের সদস্যদের ও আহতদের রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়ে নাহিদ ইসলাম লিখেছেন, ‘বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চলবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স গঠন আওয় ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ধামাকা শপিংয়ের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামের ৬২ কোটি টাকার সম্পত্তি ক্রোক করেছে সিআইডি

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘ধামাকা শপিং’–এর বিরুদ্ধে গ্রাহকের প্রায় ১১৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে প্রায় ৬২ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বৃহস্পতিবার আদালতের নির্দেশে এসব সম্পত্তি ক্রোক করা হয়।

সিআইডি জানায়, ধামাকা শপিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এস এম ডি জসীম উদ্দিন চিশতীর স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে গ্রাহকদের অর্থ হস্তান্তর করা হয়। এমনকি মাইক্রোটেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজের অ্যাকাউন্টেও এই অর্থ স্থানান্তর করা হয়, যা মানি লন্ডারিংয়ের আওতায় পড়ে। এ বিষয়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর আওতায় বনানী মডেল থানায় ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর একটি মামলা  করা হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বর্তমানে সবাই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন এবং অর্থের একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার হয়েছে বলে তদন্তে উঠে এসেছে।

সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, ক্রোক করা সম্পদের মধ্যে রয়েছে রাজধানীর বনানী মডেল টাউনে ৫ কাঠা জমির ওপর নির্মিত একটি বহুতল ভবন, যার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। পাশাপাশি গাজীপুরের কাশিমপুর পূর্ব বাগাবাড়ী এলাকায় মাইক্রো ট্রেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের নামে থাকা ৪১ শতাংশ জমিও (মূল্য প্রায় ১২ কোটি টাকা) ক্রোক করা হয়েছে। ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত ১৬ জুন এই সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন।

তদন্তে আরও উঠে এসেছে, ধামাকা শপিং নামে অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি বৈধ কোনো নিবন্ধন ছাড়াই ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেডের ছত্রচ্ছায়ায় পরিচালিত হচ্ছিল। স্বল্প মূল্যে পণ্য সরবরাহের লোভ দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটি হাজার হাজার গ্রাহক ও বিক্রেতার কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। তাদের নিজস্ব কোনো ব্যাংক হিসাব না থাকলেও ইনভ্যারিয়েন্ট টেলিকমের সাউথইস্ট ব্যাংক, সিটি ব্যাংক ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে তারা লেনদেন করত। সাউথইস্ট ব্যাংকের একটি হিসাব বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেখানে ৫৮৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার লেনদেন হলেও ২০২১ সালের ২৭ জুন মাত্র ৯৩ হাজার ৭৩১ টাকা স্থিতি ছিল, যা আর্থিক জালিয়াতির সুস্পষ্ট প্রমাণ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ