ফতুল্লায় চুরি হওয়া চার মাসের শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় চুরি করার অভিযোগে এক নিঃসন্তান দম্পতিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মাহমুদা বেগম (২৮) ও তার স্বামী আসাদুল (৩৫)।

এছাড়াও এ ঘটনায় সন্দেহভাজন আরও দুজনকে আটক করা হয়। বুধবার (১৪ মে) রাতে সদর উপজেলার পূর্ব মাসদাইর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ভুক্তভোগীরা হলেন- অটোচালক মনোয়ারুল (৩২) ও তার স্ত্রী গার্মেন্টস শ্রমিক তাহসিনা আক্তার (২৮)। তাদের ছোট কন্যা সন্তান মাসকুরা বিন তিশা।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী তাহসিনা আক্তার মাসদাইর ফারিয়া গার্মেন্টসে কাজ করেন ও তার স্বামী মনোয়ারুল অটোরিকশা চালক। তারা কর্মক্ষেত্রে চলে গেলে তাদের বড় মেয়ে মরিয়মের (১০) ও ছোট মেয়ে তিশা মাসদাইর এলাকার ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।

প্রতিদিন তার বড় মেয়ে সকাল ১০টার দিকে ছোট বোন তিশাকে দুধ পান করানোর জন্য ফারিয়া গার্মেন্টেসে তার মায়ের কাছে নিয়ে যায় এবং দুধ পান করানোর পর পুনরায় বাসায় নিয়ে আসে। প্রতিদিনের ন্যায় গত ৭ মে সকাল ১০টার দিকে মরিয়ম তার ছোট বোন তিশাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য মায়ের কাছে নিয়ে যাচ্ছিল।

এ সময় সদর উপজেলার বিসিক শিল্প এলাকায় গাইবান্ধা টেইলার্সের সামনে থেকে আসামি মাহমুদা বেগম কৌশলে তিশাকে কোলে নিয়ে মরিয়মকে চকলেট খাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে টাকা দেয়। এ সময় মরিয়ম টাকা নিয়ে চকলেট কিনতে দোকানে গেলে মাহমুদা বেগম তিশাকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
এরপর তিশাকে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে ফতুল্লা থানা পুলিশকে জানায় ভুক্তভোগী বাবা-মা।

এ ঘটনায় তিশার বাবা গত ১৩ মে বাদী হয়ে ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে র‌্যাব-১১ এর সহায়তায় ও তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে পুলিশ সদস্যরা বুধবার (১৪ মে) রাত পৌনে ১০টার দিকে সদর উপজেলার পূর্ব মাসদাইর এলাকা থেকে মাহমুদাকে গ্রেপ্তার করে ও তিশাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় আরও দুজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.

হাসিনুজ্জামান বলেন, বাচ্চা চুরির ঘটনায় তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও দুজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত মাহমুদা চুরির বিষয়টি স্বীকার করেছে। মূলত তার দীর্ঘ ১২ বছরের সংসার জীবনে কোন সন্তান নেই। যে কারণে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে চাপে ছিলেন। এমনকি এ কারণে তার সংসার ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়। 

গত ৭ মাস আগে তিনি অন্তঃসত্তা হলেও মিসক্যারেজ হয়ে যায়। এ বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের কাছে তিনি লুকিয়েছেন। ফলে এই বাচ্চাটি তিনি চুরি করে তার নিজের বাচ্চা বলে জাহির করেন। এ কারণে বাচ্চাটি চুরি করেন তিনি।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ গ র প ত র কর এ ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি ও ভর্তুকি কমানোর পরামর্শ আইএমএফের

রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি ও ভর্তুকি হ্রাসে জোর দিতে সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। নতুন বিনিময় হার ব্যবস্থা চালু করায় সংস্থাটি বাংলাদেশকে স্বাগত জানিয়েছে। আবার এ–ও বলেছে, ভবিষ্যতে বিনিময় হার পরিপূর্ণভাবে বাজারের ওপর ছেড়ে দিতে হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে আইএমএফের কার্যালয় থেকে গতকাল রোববার বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ভার্চ্যুয়াল ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির মিশনপ্রধান পাপাজর্জিও এসব কথা বলেন। উপমিশনপ্রধান আইভো ক্রিজনার ও আইএমএফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি জয়েন্দু দে এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

আইএমএফ বলেছে, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হচ্ছে বাংলাদেশ। এ সময়ে রপ্তানি পণ্যের বহুমুখিতা দরকার। আরও দরকার সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ, শাসনব্যবস্থার শক্তিশালীকরণ ও তথ্যের মানোন্নয়ন।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশের ঋণ কর্মসূচির মেয়াদ একটু বেড়েছে। ২০২৬ সালের বদলে এটা শেষ হবে ২০২৭ সালের জানুয়ারিতে এবং বাকি সময়ে আরও ৮০ কোটি মার্কিন ডলার বাড়তি ঋণ পাবে বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হলেও ঋণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে মোটামুটি সঠিক পথেই আছে বাংলাদেশ।

আইএমএফ আরও বলেছে, রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি ও এনবিআর পৃথককরণ নিয়ে যৌথভাবে কাজ শুরু করেছে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক। মিশনপ্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, বাংলাদেশ কীভাবে কার্যকরভাবে রাজস্ব আহরণ বাড়াবে, সে লক্ষ্যে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আইএমএফের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশকে ২ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করতে হবে। চলমান আন্দোলনের পরিস্থিতিতে তা কি অর্জন করা সম্ভব, এমন প্রশ্নের জবাবে পাপাজর্জিও বলেন, ‘কঠিন পরিস্থিতির কথা স্বীকার করছি। তবে লক্ষ্যমাত্রা উচ্চাকাঙ্ক্ষী হলেও তা অর্জনযোগ্য। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় রাজস্ব সংগ্রহের অনুপাতের দিক থেকে বিশ্বে সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে বাংলাদেশ। এ অবস্থার উত্তরণ দরকার।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ