সুলতানার স্বপ্ন আজকের বিশ্বেও প্রাসঙ্গিক: ড. লিন্ডসে হোনার
Published: 24th, May 2025 GMT
রোকেয়ার ‘সুলতানার স্বপ্ন’ শুধু একটি কল্পনা নয়—এটি একেবারে বাস্তব, সুগঠিত ও মানবিক এক সমাজকাঠামোর রূপরেখা। নারীর স্বাধীনতা, শিক্ষা, নিরাপত্তা এবং মানবিক মূল্যবোধের ওপর গঠিত এই সমাজ-চিত্র আজকের বিশ্বেও প্রাসঙ্গিক।
শনিবার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে বিশেষ বক্তৃতায় যুক্তরাজ্যের এডিনবরার ইউনিভার্সিটির সিনিয়র লেকচারার ড.
ড. লিন্ডসে হোনার বলেন, ‘সুলতানার স্বপ্ন’ কেবল একটি সাহিত্যকর্ম নয়, এটি এক বিকল্প রাষ্ট্রচিন্তার দলিল। এটি আমাদের দেখায়—কল্পনা কীভাবে রাজনৈতিক প্রতিরোধের ভাষা হয়ে উঠতে পারে। পরিবর্তন সম্ভব—এই বিশ্বাসই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।
তার মতে, রোকেয়ার নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গি ব্রিটেনের বর্তমান নারীবাদী আন্দোলনের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ—বিশেষ করে উচ্চশিক্ষায় নারী-পুরুষ বৈষম্য দূর, প্রযুক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং পারিবারিক ও সামাজিক সহিংসতা প্রতিরোধের মতো ইস্যুগুলোতে। অথচ রোকেয়ার চিন্তাধারাগুলো ছিল ব্রিটিশ শাসিত শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে।
হোনার বলেন, রোকেয়ার স্বপ্নে যে ধরনের শান্তিপূর্ণ, সহযোগিতামূলক ও পরিবেশবান্ধব রাষ্ট্রের কল্পনা করা হয়েছে, তা শিল্পায়ননির্ভর পাশ্চাত্য মূল্যবোধের এক অনন্য বিকল্প হাজির করে। এটি আমাদের ভাবতে শেখায়—আমি কেমন এক পৃথিবী গড়তে চাই?
আলোচনায় ড. হোনার ‘সুলতানার স্বপ্ন’-এর অভিবাসী সুরক্ষা, ধর্মীয় সহনশীলতা এবং মৃত্যুদণ্ডবিরোধী মনোভাবের দিকগুলোও তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, রোকেয়া কেবল নারীবাদীই ছিলেন না, তিনি ছিলেন এক মানবিক রাষ্ট্রচিন্তার অগ্রদূত। যৌন সহিংসতা এবং জনপরিসরে নারীর নিরাপত্তার বিষয়গুলো আজকের নারীবাদে গুরুত্বপূর্ণ। সুলতানার স্বপ্ন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ভবিষ্যৎ কল্পনা করাও রাজনৈতিক কাজ। এটি কেবল অতীতের প্রতিবাদ নয়, বরং আগামীর রূপরেখা।
অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন ইউনেস্কো থেকে ‘সুলতানার স্বপ্ন’ স্বীকৃতি আদায় এবং বিশ্বব্যাপী এর প্রভাব তুলে ধরেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। তিনি বলেন, ইউনেস্কোর মাধ্যমে ‘সুলতানার স্বপ্ন’–এর যে বার্তা, সেটা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যাচ্ছে। দেশে নতুন প্রজন্মের মধ্যে, সমাজের মধ্যে যেন আরও বেশি ছড়িয়ে দেওয়া যায়–সে লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরও তৎপর রয়েছে।
জাদুঘরের সহকারী পরিচালক তাবাসসুম নিগার ঐশীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শিক্ষাবিদ, গবেষক ও সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
১৯০৫ সালে ‘সুলতানার স্বপ্ন’ প্রথম প্রকাশিত হয়। ২০২৪ সালের মে মাসে রোকেয়ার ‘সুলতানার স্বপ্ন’ ইউনেস্কোর মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। এই স্বীকৃতির জন্য আবেদনকারী প্রতিষ্ঠান ছিল মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। জাদুঘরের পক্ষ থেকে রোকেয়ার রচনার পাঠচর্চা ও ব্যাকগ্রাউন্ড প্রাসঙ্গিক প্রচারের জন্য বহু বছর ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম ক ত য দ ধ জ দ ঘর ইউন স ক আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
বাগদানের গুঞ্জনের মাঝে হুমার রহস্যময় পোস্ট
অনেক দিন ধরে গুঞ্জন উড়ছে, অভিনয় প্রশিক্ষক রচিত সিংয়ের সঙ্গে প্রেম করছেন বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। যদিও তারা এ সম্পর্কের কথা কখনো স্বীকার করেননি। কয়েক দিন আগে জানা যায়, দীর্ঘ দিনের কথিত প্রেমিক রচিতের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন হুমা কুরেশি।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে দ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল জানিয়েছে, এক বছরের বেশি সময় লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার পর বাগদান সম্পন্ন করেছেন তারা। যদিও এই খবরের কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি হুমা।
আরো পড়ুন:
আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
‘উদয়ের সঙ্গে ব্রেকআপের পর অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম’
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ইনস্টাগ্রামে একটি রহস্যময় বার্তা শেয়ার করেছেন এই অভিনেত্রী। হুমা তার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে রামেন বাউলের ছবি শেয়ার করে লেখেন, “প্রত্যেকেরই শান্ত হওয়া প্রয়োজন… আর শান্তভাবে কাজ করা উচিত।” পাশাপাশি জানান, তিনি বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করছেন।
এর আগে হুমা-রচিতের ঘনিষ্ঠজন হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, “হুমা তার দীর্ঘ দিনের প্রেমিক, অভিনয় প্রশিক্ষক রচিত সিংয়ের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন।”
হুমা ও রচিতের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়, তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, গায়িকা আকাসা সিংয়ের শেয়ার করা একটি ছবিকে কেন্দ্র করে। এ ছবির ক্যাপশনে আকাসা লেখেন, “এক টুকরো এই স্বর্গের জন্য তোমাদের অভিনন্দন। দারুণ একটি রাত কেটেছে।”
এ ঘটনার কিছুদিন পর, হুমা ও রচিতকে একসঙ্গে দেখা যায় সোনাক্ষী সিনহা ও জহির ইকবালের বিয়েতে, দুজনেই সেদিন পরেছিলেন গোলাপী রঙের পোশাক। তাদের রসায়ন ছিল চোখে পড়ার মতো এবং ভক্তরা দ্রুত অনলাইনে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন এই রহস্যময় ব্যক্তিটিকে (রচিত) নিয়ে।
সম্প্রতি, রচিতের ঘনিষ্ঠ একজনের জন্মদিন উদযাপনের সময় আবারো তাদের একসঙ্গে দেখা যায়, যা তাদের বাগদান নিয়ে জল্পনা আরো বাড়িয়ে তোলে। তবে বাগদান নিয়ে নানা চর্চা চললেও সরাসরি একটি কথাও বলেননি হুমা কিংবা রচিত।
রচিত সিংহ একজন নামকরা অভিনয় প্রশিক্ষক। রচিত সিং ওয়ার্কশপ নামে তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই ওয়ার্কশপের মাধ্যমে ১০০টিরও বেশি কর্মশালা পরিচালনা করেছেন রচিত। তার কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন—গুলশন দেবাইয়া, ইমাদ শাহ, কুণাল কাপুর, পূজা হেগডে, হর্ষবর্ধন রানে, অমৃতা সুবাস, সহানা গোস্বামী, অহনা কুমারা, রণবীর সিং, বরুণ ধাওয়ান, ভিকি কৌশল, অনুশকা শর্মা, অনীত পড্ডা, শানায়া কাপুরের মতো অভিনয়শিল্পীরা।
এর আগে পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার মুদাসসার আজিজের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করেছেন বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। দীর্ঘ ৩ বছর সম্পর্কে ছিলেন তারা। ২০২২ সালের শেষের দিকে জানা যায়, ভেঙে গেছে এই সম্পর্ক।
ঢাকা/শান্ত