টাইব্রেকার-ঝলকে জয়ে শুরু প্রথম আলোর
Published: 26th, May 2025 GMT
কুল-বিএসজেএ মিডিয়া কাপ ফুটবলে জয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছে প্রথম আলো। আজ পল্টনের আউটার স্টেডিয়ামে মাছরাঙা টেলিভিশনকে টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে হারিয়েছে প্রথম আলো ফুটবল দল। এর আগে নির্ধারিত সময়ের খেলা গোলশূন্য সমতায় শেষ হয়।
নির্ধারিত ২০ মিনিটের খেলায় বল প্রথম আলোর দখলেই বেশি ছিল। প্রথম মিনিটে স্ট্রাইকার রিয়াদুল করিম চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লেও আক্রমণ ছিল মুহুর্মুহু। প্রথমার্ধে বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ তৈরি করে প্রথম আলো।
মাঝমাঠ থেকে দাপুটে ফুটবলে প্রতিপক্ষের রক্ষণ তটস্থ করে তোলন মেহেদী হাসান। ১০তম মিনিটে তাঁর নেওয়া শট আটকে দেয় বেরসিক গোলপোস্ট। ড্রিঞ্জা চাম্বুগং ও ইয়াহিয়া নকিবও মাছরাঙা গোলমুখে আতঙ্ক ছড়ান। তবে দরকারি গোলটি নির্ধারিত সময়ে আর পাওয়া হয়নি প্রথম আলোর। খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে।
পেনাল্টি শুটআউটে প্রথম দুই শটের পর স্কোর ছিল সমান ২-২। তৃতীয় ও চতুর্থ শটে দুই দলই গোল মিস করে। এর মধ্যে মাছরাঙার চতুর্থ শট দারুণভাবে রুখে দেন প্রথম আলো গোলকিপার মাহমুদুল হাসান। এরপর মাহমুদুল মাছরাঙার পঞ্চম শটও প্রতিহত করলে প্রথম আলোর শেষ শটটি হয়ে ওঠে ফল নির্ধারক।
এই শটে শাওন শেখ জোরালো শটে জাল কাঁপিয়ে তুললে ম্যাচ জিতে যায় প্রথম আলো। ডাগআউট থেকে মাঠে নেমে খেলোয়াড়দের জয়োৎসবে শামিল হন দলের কোচ-কর্মকর্তারা। এ সময় মাঠে ছিলেন ম্যানেজার শওকত হোসেন, ক্রীড়া সম্পাদক তারেক মাহমুদ ও কোচ আবিদুল ইসলাম। টাইব্রেকারে দুটি দারুণ সেভ করে ম্যাচসেরা হন প্রথম আলোর গোলকিপার মাহমুদুল হাসান।
জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করা প্রথম আলো কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে প্লে-অফ খেলবে। ২৮ মের সেই প্লে-অফে প্রথম আলোর প্রতিপক্ষ আগামীকাল জাগো নিউজ-চ্যানেল ২৪-এর মধ্যকার জয়ী দল।
বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসজেএ) আয়োজনে মিডিয়া কাপ ফুটবলে খেলছে মোট ৩২টি গণমাধ্যমের ফুটবল দল।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল র ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।