ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, “এত বড় নেতা আপনি, কিন্তু আমেরিকা বললে এক সেকেন্ডে চুপ হয়ে যান।” বৃহস্পতিবার মোদির দেওয়া ভাষণের জবাব দিতে নবান্নে সংবাদ সম্মেলন ডেকে এসব কথা বলেন মমতা।

আলিপুরদুয়ারের জনসভা থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে লক্ষ্য করে একের পর এক আক্রমণ শানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি তৃণমূলকে নানামুখী আক্রমণ করে বলেছেন, “এই রাজ্যে পাঁচটি সঙ্কট রয়েছে।” দুর্নীতি, নারীদের নিরাপত্তা, শিক্ষা ইত্যাদি নানা প্রসঙ্গে তৃণমূল সরকারের গাফিলতিগুলোতুলে ধরে আক্রমণ শানান মোদি। 

এর প্রতিক্রিয়ায় দুপুরে নবান্নে সংবাদ সম্মেলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোদিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, “আপনাকে খোলা চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছি। আজ বাংলা নিরাপদ বলে আপনি ঠিক নির্বাচনের আগে এখানে আসেন। আসেন বাংলার মানুষকে ভুল বোঝাতে, কুৎসা রটাতে, ষড়যন্ত্র করতে। মণিপুরে গেলেন না কেন? আপনার তো আগে ওখানে যাওয়া উচিত ছিল।”

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “ওই অভিযানের নাম অপারেশন সিঁদুর তারা দিয়েছেন। এই নাম দেওয়া হয়েছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। যে সময় বিরোধীরাও দেশের হয়ে গলা ফাটাচ্ছেন, সেই সময় নির্বাচনী প্রচারের অংশ হিসাবে এখানে রাজনীতির হোলি খেলতে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী।”

মোদিকে লক্ষ্য করে মমতা বলেন, “উনি আগে নিজেকে চা-ওয়ালা বলতেন। পরে বললেন, পাহারাদার। আর এখন সিঁদুর বেচতে এসেছেন?”

কাশ্মীর নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্যের জবাবে মোদি কোনো জবাব দেননি উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এত বড় নেতা আপনি, আমেরিকা বললেই চুপ হয়ে যান।”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

২২ অনাথ কাশ্মীরি শিশুর পড়াশোনার দায়িত্ব নিলেন রাহুল গান্ধী

অপারেশন সিঁদুর চলাকালীন পাকিস্তানি গোলায় ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু–কাশ্মীরে যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, তাঁদের পরিবারের ২২ অনাথ শিশুর লেখাপড়ার পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ওই শিশুরা পুঞ্চ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দা।

স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে উঠে স্নাতক হওয়া পর্যন্ত ওই শিশুদের পড়াশোনার সব খরচ রাহুল গান্ধী বহন করবেন। সেই খরচের প্রথম কিস্তির টাকা বুধবার ওই পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন জম্মু–কাশ্মীরের কংগ্রেস সভাপতি তারিক হামিদ কাররা।

পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিল কয়েকজন জঙ্গি। সেই হামলায় নিহত হয়েছিলেন মোট ২৬ জন পর্যটক। প্রত্যাঘাতের জন্য ভারত শুরু করে অপারেশন সিঁদুর। চার দিনের সেই লড়াইয়ের সময় জম্মুর সীমান্তবর্তী এলাকায় প্রবল গোলাবর্ষণ করে পাকিস্তান। সেই হামলায় মারা গিয়েছিলেন ২৭ জন গ্রামবাসী। আহত হয়েছিলেন ৭০ জনের বেশি। যাঁরা নিহত হয়েছিলেন, ওই ২২ শিশু ওইসব পরিবারেরই সন্তান। তাদের কেউ বাবা, কেউ মা, কেউ–বা দুজনকেই হারিয়েছে। কারও পরিবারের একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

রাহুল গত মে মাসে ওইসব এলাকায় গিয়েছিলেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। অনাথ শিশুদের স্কুলেও গিয়েছিলেন। ওই সময় তিনি দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন অনাথ শিশুদের তালিকা তৈরি করতে। সরকারি নথির সঙ্গে সেই নাম মিলিয়ে ২২ জনের চূড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত হয়। পুঞ্চ জেলা সফরের সময় রাহুল তাঁর ইচ্ছার কথা জানিয়ে বলেছিলেন, ওই শিশুদের স্নাতক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনার সব খরচ তিনি দেবেন।

পাকিস্তানের গোলার আঘাতে মারা গিয়েছিলেন ১২ বছরের দুই যমজ ভাই–বোন জাইন আলি ও উরবা ফতিমা। রাহুল তাঁদের স্কুলে গিয়েছিলেন। সেই স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তাঁদের বলেছিলেন, তোমরা তোমাদের বন্ধুদের হারিয়েছ। সে জন্য তোমাদের মন খারাপ। ওই মৃত্যু আমাকেও দুঃখ দিয়েছে। তোমাদের দুঃখ আমি বুঝি। কিন্তু তোমাদের জন্য আমি গর্বিত। তোমরা ভয়কে জয় করেছ। রাহুল ওই শিশুদের বলেছিলেন, ভয়কে জয় করতে হবে। সুদিন আসবে। সব আবার স্বাভাবিক হবে।

ওই ২২ জনের জন্য বছরে কত খরচ হবে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব তা জানাননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ