গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) কৃষি অনুষদের অধীনে তিনটি বিভাগে শুধু স্নাতক পর্যায়ে পাঠদান চলছে। তবে আজো স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠদান চালু হয়নি।
এ বিভাগগুলো হলো- কৃষি, অ্যানিমেল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন এবং ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স। বর্তমানে কৃষি বিভাগে নবম ব্যাচ, ভেটেরিনারি বিভাগে সপ্তম ব্যাচ এবং ফিশারিজ বিভাগে সপ্তম ব্যাচে শিক্ষার্থীরা অধ্যয়নরত।
এর মধ্যে, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে কৃষি বিভাগে স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম চালু করা হলেও বর্তমানে তা বন্ধ রয়েছে। ফিশারিজ ও ভেটেরিনারি বিভাগে এখনো স্নাতকোত্তর চালু করা সম্ভব হয়নি।
আরো পড়ুন:
ঈদে জবি শিক্ষার্থীদের জন্য মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন শিবিরের
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশংসা কুড়িয়েছে রাজশাহী কলেজ
কৃষি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান বলেন, “একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থার জন্য স্নাতকোত্তর থাকা জরুরি। স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের উচ্চতর জ্ঞান ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর করতে গেলে শিক্ষার্থীরা আবাসন সংকট, তত্ত্ববধায় সংক্রান্ত সমস্যা ভোগেন। এছাড়া বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের সহযোগিতা কম থাকে। আর অযথা সময়ও নষ্ট হয়।”
ফিশারিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী নুরুল আলম বলেন, “স্নাতকোত্তর না থাকায় আমাদের উচ্চশিক্ষার জন্য বাইরে যেতে হয়। এতে ভর্তি পরীক্ষা, কাগজপত্র স্থানান্তর, একাডেমিক সমন্বয় ও গবেষণায় নানা জটিলতা দেখা দেয়। তত্ত্বাবধায়ক সংকট ও সহযোগিতার অভাবেও শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। এছাড়া, আবাসন সমস্যা, পারিবারিক চাপ ও নিরাপত্তার অভাব মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.
তিনি বলেন, “আমাদের শিক্ষক সংকট প্রকট। আবার শতাধিক শিক্ষক বিদেশে চলে গেছেন। অনেকেই ফিরবেন কিনা তা নিশ্চিত নয়। কেউ কেউ বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার আবেদনও করেছেন। নতুন শিক্ষক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত স্নাতকোত্তর কার্যক্রম চালু সম্ভব নয়।”
তিনি আরো বলেন, “শিক্ষক নিয়োগের পর ইউজিসি ও মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রয়োজন। আমরা চেষ্টা করছি বর্তমান সমস্যাগুলো, বিশেষ করে করোনাকলের সেশনজট নিরসনের চেষ্টা করছি। ডিসেম্বরের মধ্যে ক্লাস বাড়িয়ে সেশনজট শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।”
ঢাকা/রিশাদ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।