একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান হলে বিপজ্জনক পরিস্থিতি হবে: বদিউল আলম
Published: 31st, May 2025 GMT
একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান হলে একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন বদিউল আলম মজুমদার। তিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ক্ষমতা কুক্ষিগত হওয়ার কতগুলো পন্থা আছে। প্রধানমন্ত্রীশাসিত সরকার। মন্ত্রিপরিষদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেন না। প্রধানমন্ত্রীই সিদ্ধান্ত নেন। তার ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতিকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতি নিয়োগ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর সব সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতিরও।
শনিবার দুপুরে ‘জাতীয় সনদ ও নাগরিক প্রত্যাশা’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। ‘সচেতন, সংগঠিত ও সোচ্চার জনগোষ্ঠীই গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ’ স্লোগানে রংপুর আরডিআরএস মিলনায়তনে এ সংলাপের আয়োজন করে সুজনের রংপুর মহানগর কমিটি।
বদিউল আলম বলেন, এক ব্যক্তি আজীবন প্রধানমন্ত্রী থাকলে স্বৈরাচারী হওয়া স্বাভাবিক। অতীতে যেটি ঘটেছে, একই ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী, সংসদ নেতা হয়েছেন। একই সঙ্গে দলীয় প্রধান হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী নির্বাহী বিভাগের প্রধান। সংসদ নেতা হলো আইনসভার প্রধান। একই ব্যক্তি দুটো পদে থাকলে ক্ষমতার বিভাজন নীতির বরখেলাপ হয়।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবার মতবিনিময় শুরু হবে। আশা করছি, দ্বিতীয়বারের আলোচনায় আমরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব। তার ভিত্তিতে একটি জাতীয় সনদ হবে। এই সনদে সবাই সই করবে।
বদিউল আলম বলেন, জুলাই আন্দোলনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরবে ঘোষণাপত্র। জাতীয় সনদ হবে একগুচ্ছ সংস্কার প্রস্তাব। রাজনৈতিক দলগুলো সই করবে। তারা নির্ধারণ করবে, কীভাবে এটি বাস্তবায়ন হবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর যেসব সংস্কার দরকার, প্রার্থী নির্বাচনের জন্য যেসব প্রস্তুতি দরকার, এখন থেকে শুরু করতে পারে।
রংপুর মহানগর সুজনের সভাপতি অধ্যক্ষ খন্দকার ফখরুল আনাম বেঞ্জুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, সুজনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক দিলীপ সরকার, আইনীজীবী অ্যাডভোকেট জোবাইদুল ইসলাম, মাহে আলম, সমাজকর্মী মঞ্জুশ্রী সাহা প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স জন
এছাড়াও পড়ুন:
দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টাকে সংস্কারের পথনকশা চূড়ান্ত করতে হবে: চরমোনাই পীর
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকে সংস্কারের রোডম্যাপ (পথনকশা) চূড়ান্ত করার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম। তিনি বলেছেন, সংস্কারের নথনকশা ও কাজে কোনো ধরনের জটিলতা থাকলে সেগুলো সমাধানে করণীয় নিয়ে রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কার নিয়ে অস্পষ্টতা দূর করতে হবে।
আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন সৈয়দ রেজাউল করীম। তিনি বলেছেন, গণ–অভ্যুত্থানের প্রধান চাওয়া রাষ্ট্রসংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আগামীকাল সোমবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বৈঠক আয়োজন করেছে। এই বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ।
ইসলামী আন্দোলনের আমির আরও বলেন, এই সরকার শুধু নির্বাচন আয়োজনের জন্য অতীতের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো কোনো সরকার না, বরং হাজারো মানুষের রক্তের ওপরে গঠিত একটি সরকার। যাদের প্রধান কাজ রাষ্ট্রের আমূল সংস্কারের মাধ্যমে দেশকে ভবিতব্য সব স্বৈরাচারের হাত থেকে সুরক্ষা দেওয়া।
চরমোনাই পীর বলেন, সরকার গঠনের প্রায় ১০ মাস হতে চলল। সংস্কার নিয়ে কাজ হয়েছে ঠিক কিন্তু দৃশ্যমান, সুসংহত ও জোরালো কোনো সংস্কার চোখে পড়ছে না। অথচ এই সংস্কারের ওপরেই আগামীর বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবে। দেশে নির্বাচন নিয়ে কথা উঠছে। অথচ নির্বাচনপদ্ধতি, সংসদীয় আসন সংখ্যা ও সংসদের কক্ষ সংখ্যার মতো গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক বিষয়ে কোনো ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি।
সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, জুলাইতে ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে ঐকমত্য তৈরি হয়েছিল। কিন্তু দ্রুততার সঙ্গে ভিন্নমতও তৈরি হচ্ছে। সামনে আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে। রাষ্ট্র সংস্কারের মৌলিক কাজে দেরি হলে রাজনৈতিক সংস্কৃতি সংস্কারকে দুরূহ করে তুলতে পারে। সে জন্য আগামীকালের বৈঠকে জাতিকে সংস্কার নিয়ে একটি পরিষ্কার ও দ্বিধামুক্ত দিশা দিতেই হবে।
উল্লেখ্য, আগামীকাল সোমবার থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার আলোচনা শুরু করতে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিকেলে এ আলোচনার উদ্বোধন করবেন কমিশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। কমিশনের প্রথম দফার আলোচনা শুরু হয় ২০ মার্চ; শেষ হয় ১৯ মে।