দাবি আদায়ে টানা ১৬ দিন ধরে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশানুরূপ সাড়া পাননি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের দাবি না মানলে তাঁরা ‘গণছুটি’ কর্মসূচি দিয়ে বাড়িতে চলে যাবেন।

সাত দফা দাবিতে আন্দোলন করছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা। এর মধ্যে রয়েছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) চেয়ারম্যানের পদত্যাগ; এক ও অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) একীভূত করে অন্য বিতরণ সংস্থার মতো পুনর্গঠন; মিটার রিডার, লাইন শ্রমিক ও পোষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিত করা।

আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়াদের একজন বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোহম্মদ সুমন মিয়া। জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে কর্মরত এই লাইনম্যান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এবং সমিতি সংকট নিরসনের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগে মিটিং করেছে। সেই মিটিংয়ে আমাদের চেয়ারম্যান স্যারের অপসারণ ব্যতীত আরও যে ছয় দফা দাবি আছে, তার মধ্যে পাঁচ দফা দাবি এই সামনের ৩০ জুনের ভেতরে তারা সমাধান করবে—এই মর্মে তারা একটা লিখিত দিতে চাইতেছে। যদি লিখিত পাই, সে ক্ষেত্রে আমরা ৩০ তারিখ পর্যন্ত তাদের সময় দিতে পারি। এর মধ্যে যত প্রকার “হয়রানিমূলক” বদলি করা হয়েছে, বিশেষ করে লাইনম্যানদের যে বদলি করার কারণে গ্রাহকসেবা চরমভাবে বিঘ্ন হচ্ছে, তাঁদের বদলি স্থগিত করতে হবে।’

মোহম্মদ সুমন মিয়া বলেন, ‘এর পাশাপাশি যাঁরা চুক্তিভিত্তিক কর্মরত রয়েছেন, তাঁদেরও চাকরিতে নিয়মিত করতে হবে। এসব দাবি যদি ৩০ তারিখের মধ্যে আমাদের স্পষ্ট করা না হয়, তাহলে ৩০ তারিখের পর থেকে আমরা আবার মাঠে নামব। আর আজকের দিনের মধ্যে যদি এই পাঁচটা বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে লিখিত না দেয়, সে ক্ষেত্রে আমরা সকলে গণছুটিতে বাড়িতে চলে যাব।’

আন্দোলনে থাকা জামালপুর সদরের লাইনম্যান মো.

নাইমুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের দাবি পূরণ না করা হলে আমরা গণছুটিতে চলে যাব। এরপর যদি বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো বিঘ্ন ঘটে, তার দায় আমরা নেব না।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

সুদানের এল-ফাশের শহরে ‘চরম বিপদে’ বাসিন্দারা: ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস

সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) কাছে দেশটির এল–ফাশের শহরের পতনের পর সেখানকার বাসিন্দারা ‘চরম বিপদের’ মধ্যে রয়েছেন। তাঁরা শহরটিতে আটকা পড়েছেন। গতকাল শনিবার ফ্রান্সভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতব্য চিকিৎসা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছে।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরএসএফের লড়াই চলছে। গত ২৬ অক্টোবর এল-ফাশের দখল করে নেয় আধা সামরিক বাহিনীটি। শহরটির পতনের পর থেকে সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যা, যৌন সহিংসতা, ত্রাণকর্মীদের ওপর হামলা, লুটপাট এবং অপহরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। সেখানকার যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুনসুদানে ‘গণহত্যা’ হয়েছে২২ ঘণ্টা আগে

এল–ফাশের শহর থেকে যাঁরা পালিয়ে কাছের তাউইলা শহরে আশ্রয় নিয়েছেন, তাঁরা বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা চালানোর কথা বলেছেন। তাঁদের ভাষ্য, এল–ফাশেরে মা–বাবার সামনে সন্তানদের হত্যা করা হচ্ছে। মানুষজন শহরটি থেকে পালানোর সময় তাঁদের মারধর করা হচ্ছে। জাতিসংঘের হিসাবে, ২৬ অক্টোবর থেকে ‍৬৫ হাজারের বেশি মানুষ শহরটি থেকে পালিয়েছেন।

শনিবার ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, এল–ফাশেরের বিপুল মানুষ ‘চরম বিপদের’ মধ্যে রয়েছে। তাদের শহরটি ত্যাগ করতে দিচ্ছে না আরএসএফ ও তাদের সহযোগীরা। সংস্থাটির জরুরি বিভাগের প্রধান মাইকেল ওলিভিয়ার লাচেরিটে বলেন, এল–ফাশের থেকে যাঁরা নিখোঁজ হয়েছেন, তাঁরা কোথায়? সম্ভাব্য উত্তরটা হলো—তাঁদের হত্যা করা হয়েছে।

গত শুক্রবার জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আরএসএফের হামলায় এল–ফাশেরে কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছেন। তবে সুদানের সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে দুই হাজার বেসামরিক মানুষকে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যানিটারিয়ান রিসার্চ ল্যাব বলেছে, এল–ফাশেরে গণহত্যা অব্যাহত থাকার বিভিন্ন ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

সুদান ‘মহাবিপর্যয়কর পরিস্থিতির’ মধ্যে রয়েছে বলে শনিবার উল্লেখ করেছেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়েডফুল। বাহরাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বেসামরিক লোকজনকে সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আরএসএফ। এরপরও এমন নৃশংসতার জন্য তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। একই সংবাদ সম্মেলনে সুদানের পরিস্থিতি ‘ভয়ংকর’ বলে উল্লেখ করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার।

আরও পড়ুনসুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন৭ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ