মোদিকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর কথা মনে করিয়ে দিলেন ওমর আবদুল্লাহ্
Published: 6th, June 2025 GMT
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে প্রকাশ্য জনসভায় কায়দা করে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ পূর্ণাঙ্গ রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পাওয়ার বাসনার কথা প্রকাশ করলেন। শুক্রবার জম্মু-কাশ্মীরের কাটরায় প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় তিনি বলেন, মঞ্চে উপস্থিত সবার উন্নতি হলেও একমাত্র তাঁর অবনতি হয়েছে। ছিলেন পূর্ণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, এখন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের।
ওমর অবশ্য বলেন, তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস, খুব বেশি অপেক্ষায় থাকতে হবে না। প্রধানমন্ত্রী জম্মু-কাশ্মীরকে নিশ্চিতই আবার পূর্ণ রাজ্য করে দেবেন।
পেহেলগাম–কাণ্ড ও অপারেশন সিঁদুরের পর আজ শুক্রবার প্রথম প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জম্মু-কাশ্মীর সফরে যান। দুপুর ১২টায় কাশ্মীরে চন্দ্রভাগা নদীর ওপর বিশ্বের সর্বোচ্চ রেলসেতুর উদ্বোধন করেন, যার উচ্চতা প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের চেয়েও বেশি। এরপর তিনি যান জম্মুর কাটরায়। উদ্বোধন করেন দুটি ‘বন্দে ভারত’ ট্রেন। তারপর কাটরায় এক প্রকাশ্য জনসভায় ভাষণ দেন। সেই জনসভাতেই নিজের ভাষণের সময় ওমর আবদুল্লাহ কায়দা করে মোদিকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফেরত পাওয়ার কথাটি মনে করিয়ে দেন।
মঞ্চে উপস্থিত প্রধানমন্ত্রী মোদি, উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহা, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ও প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংয়ের উপস্থিতিতে ওমর বলেন, তাঁর সৌভাগ্য এমন যে যখনই জম্মু-কাশ্মীরে রেলওয়ের কোনো বড় প্রকল্পের শিলান্যাস বা উদ্বোধন হয়েছে, তিনি তার সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন। অনন্তনাগ রেলস্টেশন চালু হওয়া, বানিহাল রেল টানেলের (সুড়ঙ্গ) উদ্বোধন কিংবা ২০১৪ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে যখন প্রধানমন্ত্রী কাটরা রেলস্টেশনের উদ্বোধন করেন, প্রতিবারই তিনি হাজির ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে। ওমর এরপর প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনি যখন কাটরা রেলস্টেশন উদ্বোধন করেন, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন জিতেন্দ্র সিং। এখন তিনি প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের মন্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন আজকের উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহা। তখন তিনি ছিলেন রেল মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী। বৈষ্ণব দেবীর কৃপায় তার পর আপনি আরও দুবার ভোটে জিতে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। মনোজ সিনহারও পদোন্নতি ঘটেছে। হয়েছেন উপরাজ্যপাল। কিন্তু আমার ডিমোশন হয়েছে। তখন আমি ছিলাম পূর্ণ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, এখন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু আমার স্থির বিশ্বাস, অচিরেই রাজ্য তার হৃত মর্যাদা ফিরে পাবে।’
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীর রাজ্য ভেঙে তৈরি করা হয় দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ। কেন্দ্রীয় সরকার যদিও শুরু থেকেই জানিয়েছে, এটা সাময়িক। পরিস্থিতির উন্নতি হলে দ্রুত রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তা কবে হবে কেউ জানে না। যেমন কারও জানা নেই পরিস্থিতির উন্নতির সংজ্ঞা কী।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ম খ যমন ত র উপস থ ত
এছাড়াও পড়ুন:
আসামে শত শত ভারতীয়কে বিদেশি বলে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হচ্ছে: মুম্বাইভিত্তিক সিজেপির প্রতিবেদন
উত্তর–পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্যে হাজার হাজার দরিদ্র এবং প্রধানত শ্রমিক শ্রেণির মানুষ ‘নিদ্রাহীন’ রাত কাটাচ্ছেন। কারণ, শত শত ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশি বলে আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়ে (বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’) দেওয়া হয়েছে।
ভারতের মুম্বাইয়ের নাগরিক সমাজের সংস্থা সিটিজেনস ফর জাস্টিস অ্যান্ড পিসের (সিজেপি) প্রকাশিত এক দীর্ঘ প্রতিবেদনে এসব কথা উঠে এসেছে। সাংবাদিক, আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী তিস্তা শেতেলবাদের এই সংস্থা জানিয়েছে, আসামের ৩৩ জেলার সর্বত্রই নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করে ‘নারী, শিশু ও পুরুষদের’ বেআইনিভাবে আটক করে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হচ্ছে।
তবে গত রোববার (১ জুন) ওই সব ভারতীয় নাগরিকের অনেককে বাংলাদেশ থেকে ‘পুশ ব্যাক’ (ফেরত পাঠানো) করা হয়েছে বলেও সিজেপির এই বিশেষ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। আসামে অন্তত ছয়জন নারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছে এই সংস্থাটি।
সিজেপির প্রতিবেদনে যে ছয় নারীর সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে, তাঁরা হলেন হাজেরা খাতুন, সোনা বানু, রহিমা বেগম, জাহানারা বেগম, আসিফা বেগম ও সাহেরা খাতুন। এই প্রতিবেদন তৈরিতে আসামের বেশ কিছু সাংবাদিক ও সমাজকর্মী অংশ নিয়েছিলেন বলেও জানানো হয়েছে।
সিজেপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৩ মে থেকে হঠাৎ করেই রাজ্যের ৩৩টি জেলায় পুলিশি অভিযান শুরু হয় এবং ‘কোনো নথিভুক্ত মামলা, নোটিশ বা আইনি যৌক্তিক ব্যাখ্যা ছাড়াই প্রায় ৩০০ মানুষকে আটক করা হয়।
সাংবিধানিক ও আইনি নিয়ম লঙ্ঘন করে বন্দীদের অবস্থান সম্পর্কে পরিবার এবং আইনজীবীদের কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। যদিও প্রায় ১৫০ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে অসমর্থিত প্রতিবেদনগুলো বলছে, নাগরিকত্ব প্রমাণ করার জন্য এখনো আদালতে লড়ছেন, এমন ১৪৫ জনকে জোর করে সীমান্তের ওপারে ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এ ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
সাংবিধানিক ও আইনি নিয়ম লঙ্ঘন করে বন্দীদের অবস্থান সম্পর্কে পরিবার এবং আইনজীবীদের কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। যদিও প্রায় ১৫০ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে অসমর্থিত প্রতিবেদনগুলো বলছে, নাগরিকত্ব প্রমাণ করার জন্য এখনো আদালতে লড়ছেন এমন ১৪৫ জনকে জোর করে সীমান্তের ওপারে ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’-এ ঠেলে দেওয়া হয়েছে।সিজেপির প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব ব্যক্তির মধ্যে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে অনেককে আইনি ট্রাইব্যুনাল বিদেশি ঘোষণা করেছে। আবার এমন অনেকেও আছেন, যাঁরা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন বা যাঁরা নাগরিকত্ব প্রমাণের উদ্দেশ্যে আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ এঁদের অন্য দেশের ঠেলে দেওয়া হলো কোনো আনুষ্ঠানিক নির্বাসনবিষয়ক আদেশ বা দ্বিপক্ষীয় প্রত্যাবাসন চুক্তি প্রকাশ না করেই। ফলে এসব ব্যক্তির পরিবার চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন।
ভুক্তভোগীর বক্তব্য
বরপেটা জেলার ভাল্লুকি গ্রামের সানসের আলীর স্ত্রী ষাটোর্ধ্ব হাজেরা খাতুনকে বেআইনিভাবে জোর করে গত ২৫ মে আসাম পুলিশ আটক করে বলে অভিযোগ উঠেছে। অতীতেও তাঁকে একবার আটক করা হয়েছিল এবং তাঁর মামলা এখনো গুয়াহাটি হাইকোর্টে চলছে। তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।
এরপরও হাজেরার পরিবারকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে তাঁকে আটক করা হয়। ফলে চরম উৎকণ্ঠায় ভুগে তাঁর পরিবার নানা জায়গায় হাজেরার খোঁজ করতে শুরু করেন। কিন্তু ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত এই নারীর কোনো সংবাদ তাঁর পরিবার পায়নি বলে সিজেপির সমাজকর্মী ও সাংবাদিক নন্দ ঘোষ এবং আইনজীবী অভিজিৎ চৌধুরী জানিয়েছেন। হাজেরা মে মাসের শেষে বাসায় ফেরার পর তাঁর সঙ্গে সিজেপির প্রতিনিধিরা কথা বলেন।
হাজেরার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর মতো আরও অনেককে তিন–চারটি বাসে করে বরপেটা জেলা থেকে ৯১ কিলোমিটার দূরে মাটিয়া বন্দিশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়।
সিজেপির প্রতিনিধিদের হাজেরা বলেন, ‘সারা দিনরাত না খেয়ে এই সময়টা কাটাতে হয়েছে। পরের দিন সকাল ১০টার দিকে…আমরা তখনো বাসে বসে আছি…আমাদের বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণ পরে আমাদের সামান্য ভাত দেওয়া হয়। আমরা খুব ভয় পেয়েছিলাম, আমরা ঠিকমতো খেতেও পারিনি। এরপর আমরা ভেবেছিলাম, যে ঘরে আমরা ছিলাম, সেখানে কিছুক্ষণ হয়তো বসতে দেওয়া হবে। কিন্তু আমরা বসার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ডাকা হয় এবং বলে আমাদের ছবি তোলা হবে।’
হাজেরার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁর মতো আরও অনেককে তিন–চারটি বাসে করে বরপেটা জেলা থেকে ৯১ কিলোমিটার দূরে মাটিয়া বন্দিশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়।হাজেরা সিজেপিকে বলেন, ‘এরপর আমাদের হাতে কিছু বাংলাদেশি টাকা দিয়ে সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাস থেকে নামিয়ে বলা হয়, নিজেদের মধ্যে কোনো কথা না বলতে। আমরা চূড়ান্ত অসহায় বোধ করতে শুরু করি। সেখানে সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় আমাদের ছেড়ে দেওয়া হয় এবং আমাদের বাধ্য করা হয় সারা রাত অভুক্ত অবস্থায় বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে।’
এরপর সকালে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি হাজেরা ও তাঁর দলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে, তাঁরা কেন বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করেছেন। তাঁদের সেখানেই রেখে দুই পক্ষের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে আলাপ-আলোচনা শুরু হয় এবং তা চলতে থাকে।
হাজেরা বলেন, ‘দুই দিক থেকে আমাদের একবার এদিকে, একবার ওদিকে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের মধ্যে আলোচনা চলতেই থাকে। কিন্তু আমাদের কী হবে, সে বিষয়ে কোনো সমাধান সূত্র খুঁজে পাওয়া যায় না।’
হাজেরা বিবি সিজেপির প্রতিবেদকদের আরও বলেন, খায়রুল ইসলাম নামের একজন স্কুলশিক্ষক তাঁদের ওপরে এবং বিশেষত নারীদের ওপরে এ ধরনের অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ায় তাঁকে এমনভাবে মারধর করা হয় যে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। একটা সময় পর হাজেরা এবং তাঁর দলকে কেউ বাধা না দেওয়ায় তাঁরা ভারতের দিকে হাঁটতে শুরু করেন। এভাবে তাঁরা সীমান্ত অঞ্চল থেকে বরপেটা জেলার উদ্দেশে রওনা দেন।
হাজেরার এক ছেলে সিজেপির প্রতিবেদকদের বলেন, ‘৩১ মে রাত ১১টার দিকে আমরা খবর পাই, আমার মা (হাজেরা) এবং সোনা বানু নামের এক নারী গোয়ালপাড়া জেলার মহাসড়কে অবস্থান করছেন। তখন আমি জব্বার ভাইকে (স্থানীয় ছাত্রনেতা) নিয়ে যাই এবং মাকে উদ্ধার করি।’
এরপর আমাদের হাতে কিছু বাংলাদেশি টাকা দিয়ে সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাস থেকে নামিয়ে বলা হয়, নিজেদের মধ্যে কোনো কথা না বলতে। আমরা চূড়ান্ত অসহায় বোধ করতে শুরু করিহাজেরা খাতুন, আসামের ভুক্তভোগী মুসলিম নারীসিজেপির প্রতিবেদকেরা বলছেন, বাকিদেরও কমবেশি একই অভিজ্ঞতা। তবে তাঁরা হয়তো অন্য দলে ছিলেন বা অন্য কোনো সীমান্ত দিয়ে তাঁদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। তাঁদেরও বৃষ্টির মধ্যে দুই দেশের মধ্যবর্তী নিরপেক্ষ অঞ্চলে এক বা একাধিক রাত কাটাতে হয়েছে। মাথার ওপর কোনো ছাদ ছিল না। বয়স্ক ও নারীদের অনেককেই অসুস্থ অবস্থায় ভেজা কাপড়ে দুই দেশের মধ্যবর্তী নিরপেক্ষ অঞ্চলে সারা রাত দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে বা পানির মধ্যে ধানখেতে বসে থাকতে হয়েছে।
স্থানীয় এক সাংবাদিক প্রথম আলোকে এই প্রসঙ্গে বলেন, আসামে এই মুহূর্তে হাজার হাজার বাঙালি মুসলিম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন, কবে তাঁদের দরজায় পুলিশ কড়া নাড়ে এবং কোনো কথাবার্তা না শুনে বা কাগজপত্র না দেখে তুলে নিয়ে সীমান্তের ওপারে নিরপেক্ষ অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়। নিশ্চয়ই সবার সঙ্গে এ ঘটনা ঘটবে না। কিন্তু কখন, কার সঙ্গে ঘটবে, তা কেউ বুঝতে পারছেন না।
আসাম রাজ্যে আগামী বছর নির্বাচন। তার আগে বাঙালি মুসলিমদের ইচ্ছামতো তুলে নিয়ে যাওয়া এবং বিদেশি বলে হেনস্তা করার বিরুদ্ধে আসামের কিছু রাজনৈতিক নেতা ইতিমধ্যে সরব হয়েছেন। তবে এই প্রক্রিয়া এখনো চলছে বলে স্থানীয় সাংবাদিকেরা জানিয়েছেন।