ফুটবলের একটি ম্যাচকে ঘিরে এতোটা উন্মাদনা, উত্তেজনা, উৎসব আগে কখনো হয়েছিল? টিকিট না পেয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ভবনে তালা কী ঝুলেছিল? না খেয়ে, না ঘুমিয়ে টিকিটের জন্য প্রতিবাদ কী হয়েছিল?

নিকট অতীতে হয়নি। হয়নি কারণ, ওই গণজোয়ার ছিল না। ছিল না তারকা, পোস্টারবয়। হামজা চৌধুরী বাংলাদেশ ফুটবলে সেই চাঁদ হয়ে এসেছেন। যাকে ঘিরে নতুন করে ফুটবল জেগে উঠার স্বপ্ন দেখছে। 

আজই যার কঠিনতম পরীক্ষা হতে যাচ্ছে। আবেগের লড়াইয়ের সঙ্গে যদি সংগতিপূর্ণ পারফরম্যান্স হয় তাহলে তো কথাই নয়। ফুটবল তার হারানো গৌরব, জৌলুস ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ে কয়েকধাপ এগিয়ে যাবে। আর যদি না হয়…তাহলে কী? উত্তরটা সময়ের কাছেই তোলা থাক। 

আরো পড়ুন:

জয় চায় বাংলাদেশ, ভীত নয় সিঙ্গাপুর

পা ভাঙতে হলে ভাঙুক, আমাকে ট্রফি জিততে হবে: রোনালদো

এফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে সিঙ্গাপুরের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। সন্ধ্যা সাতটায় ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হবে ম্যাচটি। টি স্পোর্টসে দেখা যাবে সেই ম্যাচ।

নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করায় এক পয়েন্ট পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০২৭ সালের এএফসি এশিয়ান কাপে অংশ নিতে বাংলাদেশকে নিজেদের গ্রুপে সেরা হতে হবে।

বাংলাদেশসহ বাকি তিন দল হংকং, ভারত ও সিঙ্গাপুরের পয়েন্ট সমান এক করে। আজ জিতলে বাংলাদেশ পাবে ৩ পয়েন্ট। ড্র করলে মিলবে ১ পয়েন্ট।

বাংলাদেশের লক্ষ্য পূর্ণ ৩ পয়েন্টই। অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া সেই কথাই বলেছেন, ‘‘আমরা যদি এক গোল আগে দিতে পারি ভালো হবে। এটাও ঠিক আমাদের কিন্তু ক্লিনশিটও ধরে রাখতে হবে। যেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তবে ফুটবলে জয়টাই মুখ্য। আপনি তিন গোলে জেতেন বা এক গোলে দিনশেষে পয়েন্ট পাওয়াই সবকিছু। আমাদেরও লক্ষ্য, তিন পয়েন্ট তুলে নেওয়া।”

সিঙ্গাপুর কোচ সুতোমু ওগুরা বাংলাদেশকে কোনো ছাড় দেবেন না তার কথাতেই বোঝা যাচ্ছে, ‘‘আমার কাছে অ্যাওয়ে ম্যাচ কঠিন ম্যাচ। আশা করি, এখানে আমরা টুরিস্ট হবো না। বাংলাদেশকে ভয় পাবো না। ভালো একটা ম্যাচ খেলার চেষ্টা করব আমরা। হ্যাঁ, অবশ্যই বাংলাদেশের এই দলটা ভালো। সে জন্য আমাদের ভালো একটা প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। আমার বিশ্বাস, ম্যাচটা উপভোগ্য হবে।’’

এদিকে প্রায় ৫৫ মাস পর জাতীয় স্টেডিয়ামে কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এখনো অনেকে ফুটবলপ্রেমী টিকিটের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন। স্টেডিয়ামের গ্যালারি ফুলহাউজ মোটামুটি নিশ্চিত। এটা কী বাড়তি চাপ কি না জানতে চাইলে বাংলাদেশের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেছেন, ‘‘কতজন মানুষ ম্যাচটা দেখবে, সেটা কোনো বিবেচ্য বিষয় নয়। দিন শেষে দেশের জন্য জয়টাই লাগবে আমাদের। হ্যাঁ, এটা ঠিক, চাপ এবং এই উত্তেজনাটা আমরা অনুভব করি। কিন্তু খেলার সময় আমাদের চিন্তা থাকবে কীভাবে ম্যাচটা জেতা যায়।’’

১০ বছর পর ফের দুই দল মুখোমুখি হচ্ছে।আগের দুই দেখায় বাংলাদেশের কোনো জয় নেই। ১৯৭৩ সালে মারদেকা কাপে ১-১ ড্র, ২০১৫ সালের দেখায় ২-১ গোলে হেরেছিল দল। এবার কী বাংলাদেশের ভাগ্যে জয় লিখা থাকবে? ফয়সালা হয়ে যাবে আজ রাতেই। 

ঢাকা/ইয়াসিন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল আম দ র ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ