রিয়াল-বার্সার ১২ রত্ন: যাঁদের কেড়ে নিতে লাগবে ১৩ হাজার কোটি টাকা
Published: 12th, June 2025 GMT
এক দশক আগেও ১৫ থেকে ২০ কোটি ইউরো রিলিজ ক্লজকে আকাশচুম্বী ভাবা হতো। ধারণা করা তো, এই দাম দিয়ে কোনো ক্লাবই আরেক ক্লাবের খেলোয়াড় ছাড়িয়ে নিতে পারবে না।
কিন্তু আরবের ধনকুবেরেরা বিশ্বের নামীদামি তারকার দিকে হাত বাড়ানোর পর থেকে ধীরে ধীরে দৃশ্যপট বদলাতে থাকে। তাঁদের কাছে ১৫-২০ কোটি ইউরো কোনো ব্যাপারই নয়। এমনকি ৫০ কোটি ইউরো ঢেলেও জনে-জনে খেলোয়াড় কেনার সামর্থ্য তাঁদের আছে।
নিজেদের শীর্ষ ফুটবলারদের সুরক্ষিত রাখতে ইউরোপের ক্লাবগুলো তাই এমন রিলিজ ক্লজ ধার্য করা শুরু করেছে যেন অন্যরা চাইলেও তাঁদের দলে ভেড়াতে না পারে। ভেড়ালেও যেন ক্লাবটি আর্থিকভাবে বিপুল লাভবান হয়।
আরও পড়ুনবার্সার সঙ্গে নতুন চুক্তিতে কী কী সুযোগ-সুবিধা থাকছে ইয়ামালের২৭ মে ২০২৫রিলিজ ক্লজের অঙ্কটা মিলিয়ন ছাড়িয়ে এখন বিলিয়নে পৌঁছে গেছে। বর্তমানে বিশ্বে এমন ১২ জন ফুটবলার আছেন, যাঁদের রিলিজ ক্লজ ১ বিলিয়ন (১০০ কোটি) ইউরো। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ১৩ হাজার ৯৭৮ কোটি টাকার সমান।
এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়ার আগে রিলিজ ক্লজ সম্পর্কে ফুটবলপ্রেমীদের স্বচ্ছ ধারণা দেওয়া যাক—
রিলিজ ক্লজকে বাইআউট ক্লজও বলা হয়। সহজ বাংলায় যেটিকে মুক্তির ধারা বলা যেতে পারে। এই ধারায় একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ খেলোয়াড়ের চুক্তিপত্রে উল্লেখ থাকে। খেলোয়াড়, তাঁর প্রতিনিধি বা এজেন্ট এবং ক্লাব—এই তিন পক্ষের সম্মতিতে চুক্তি স্বাক্ষরের সময় তা নির্ধারিত হয়।মূল ক্লাবের ইচ্ছার বাইরে ওই খেলোয়াড়কে অন্য কোনো ক্লাব নিতে চাইলে রিলিজ ক্লজ দিয়ে নিতে হয়। অস্বাভাবিক এই টাকার অঙ্ক একজন খেলোয়াড়কে পূর্ণ স্বাধীনতার নিশ্চয়তাও দেয়। তিনি বর্তমান ক্লাবে থাকতে না চাইলে রিলিজ ক্লজের মাধ্যমে অন্য ক্লাবে যাওয়ার সুযোগ থাকে।উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া যাক। ধরুন, একজন খেলোয়াড়ের সঙ্গে একটি ক্লাবের ২০২৭ সাল পর্যন্ত চুক্তি আছে। তাঁর জন্য ৫০ কোটি ইউরো রিলিজ ক্লজ ধার্য করা আছে। চুক্তির মেয়াদ ফুরানোর আগে সেই ক্লাব ওই খেলোয়াড়কে ছাড়তে ইচ্ছুক নয়। কিন্তু মূল ক্লাবের অনিচ্ছা সত্ত্বেও অন্য ক্লাব যদি খেলোয়াড়টিকে কিনতে চায় এবং খেলোয়াড়ও চলে যেতে চান, তাহলে ৫০ কোটি ইউরো দিয়েই ছাড়িয়ে নিতে হবে। এতে ক্লাবটি তাদের পছন্দের খেলোয়াড়কে হারালেও আর্থিকভাবে বিপুল লাভবান হবে।বর্তমানে যে ১২ ফুটবলারের রিলিজ ক্লজ রেকর্ড ১০০ কোটি ইউরো, তাঁদের ৬ জন রিয়াল মাদ্রিদের ও ৬ জন বার্সেলোনার।
রিয়াল মাদ্রিদের আক্রমণভাগের চার তারকা (বাঁ থেকে) এমবাপ্পে, রদ্রিগো, ভিনিসিয়ুস ও বেলিংহাম.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মাতামুহুরী নদীর তীরে মিলল পর্যটকের লাশ, এখনো নিখোঁজ ২
বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার মাতামুহুরী নদীর তীর থেকে এক পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার নাম শেখ জুবাইরুল ইসলাম। তিনি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ধলইতলা পাচুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। ইউএনও’র দাবি, এখনো দুই পর্যটক নিখোঁজ আছেন।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ভোর ৪টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাজার পাড়ার ফরেস্ট ঘাট সংলগ্ন মাতামুহুরী নদীর তীরে লাশটি ভেসে আসে। আলীকদম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহাদাৎ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে। আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজার উপকূলে ২৪ ঘণ্টায় ৬ মরদেহ উদ্ধার
ঈদের দিন নিখোঁজ, পরদিন মাদ্রাসাছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার
স্থানীয় ট্যুর গাইড ও পুলিশ জানান, ‘ট্যুর এক্সপার্ট’ গ্রুপের এডমিন বর্ষার নেতৃত্বে ৩৩ জন পর্যটকের একটি দল গত বুধবার (১১ জুন) আলীকদমে পৌঁছান। এই দলে কো-হোস্ট হিসেবে ছিলেন হাসান নামে একজন এবং স্থানীয় গাইড ছিলেন সিদ্ধার্থ তঞ্চঙ্গ্যা। তাদের উদ্দেশ্য ছিল আলীকদম উপজেলার ক্রিসতং পাহাড় ও থানচির লিমান লিবলু এবং সাকাহাফং চূড়া জয় করা।
পর্যটকদের দলটি দুইটি গ্রুপে বিভক্ত হয়। একটিতে ২২ জন এবং অন্যটিতে ১১ জন সদস্য ছিলেন।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সাইফুল ইসলাম রিমন জানান, বর্তমানে ২২ জনের একটি দলের ১৯ জন সদস্য আলীকদম থানায় রয়েছে। নিখোঁজ তিনজনের মধ্যে জুবাইরুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, তবে কো-হোস্ট হাসানসহ বাকি দুইজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
তিনি থানায় অবস্থানরত ১৯ জন পর্যটকের সঙ্গে কথা বলে জানান , গত বুধবার রাতে তারা তৈনখাল পার হচ্ছিলেন। ১৯ জন নিরাপদে খাল পার হতে পারলেও কো-হোস্ট হাসানসহ তিনজন তৈনখাল পার হতে পারেননি। এই তিনজনের একজন হলেন শেখ জুবাইরুল ইসলাম, যার মরদেহ বৃহস্পতিবার ভোরে আলীকদম সদরের ফরেস্ট ঘাট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন বলেন, “গত ১১ জুন ২২ জনের একটি পর্যটক টিম দোসারি দিকে ভ্রমণে যায়। তাদের মধ্যে ১৯ জন পর্যটক আলীকদম থানার হেফাজতে আছেন। তিনজন নিখোঁজ ছিলেন। আজ শেখ জুবাইরুল ইসলাম নামের একজনের মরদেহ পাওয়া গেছে। বাকি দুইজন এখনো নিখোঁজ। তাদেরকে উদ্ধারে পুলিশ ও স্থানীয় ট্যুর গাইড তৎপরতা চালাচ্ছে।”
ঢাকা/চাইমং/মাসুদ