সোনামসজিদ ইমিগ্রেশনে কিটের অভাবে করোনা পরীক্ষা বন্ধ
Published: 12th, June 2025 GMT
প্রতিবেশী দেশ ভারতে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারতে ভ্রমণ করে আসা মানুষের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। এজন্য সেখানে মেডিকেল টিম কাজ করছে। তবে করোনা পরীক্ষার কিট মজুদ না থাকায় সেখানে পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, কিট সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি করোনার ওমিক্রন ভাইরাসের কয়েকটি নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট এলএফ.
স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদের ইমিগ্রেশনে মেডিকেল টিম বসানো হয়েছে। এ টিমের সদস্যরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভারত ভ্রমণকারীদের শরীরের জ্বর পরীক্ষা করছে। শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চাইতে বেশি কিংবা জ্বর শনাক্ত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হচ্ছে। তবে কিট সঙ্কটের কারণে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে না। ফলে স্বাভাবিকভাবে ওমিক্রন ভাইরাসের সাব-ভ্যারিয়েন্টগুলো দেশে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
ডিএসসিসির ডেঙ্গু–করোনা রোধে বাড়ছে সচেতনতা কার্যক্রম
করোনাভাইরাস: ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ১০
যদিও দেশে করোনা-ওমিক্রনের একটি উপধরন এখন ছাড়িয়ে পড়ছে। এই উপধরনটিকে বলা হচ্ছে জেএন-১। জনস্বাস্থ্যবিদেরা বলছেন, নতুন এই উপধরনের তীব্রতা তুলনামূলকভাবে কম। তবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার খবরটি এসেছে ঠিক ঈদের সময়। এ সময় বহু মানুষ পশুর হাটে একত্রিত হয়েছেন। ছুটিতে বড় বড় শহর থেকে গ্রামে যাওয়ার সময় মানুষকে দীর্ঘ সময় বাস-ট্রেন লঞ্চে ভিড়ের মধ্যে থাকতে হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতেও ভিড় ছিল প্রচণ্ড। এসবই সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। কাজেই শুধু ভারত ভ্রমণকারীদের নয়, করোনার উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা করতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
ভারত ভ্রমণকারী শিবগঞ্জের বাসিন্দা আব্দুল বাতেন জানান, ভারতে করোনাভাইরাসের নতুন করে সংক্রমণ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তাই সোনামসজিদ ইমিগ্রেশনে ভারত থেকে আসা ব্যক্তিদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। কিটের সংকট কাটিয়ে করোনা পরীক্ষা জোরদার করার দাবি জানান তিনি।
কিট সঙ্কটের বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন একেএম ডা. শাহাব উদ্দিন বলেন, ঈদের পর থেকে সোনামসজিদ ইমিগ্রেশনে মেডিকেল টিম বসানো হয়েছে। তারা ভারত ভ্রমণকারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে। কিন্তু করোনা পরীক্ষার কিটের মজুদ নেই। এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিট পেলে পরীক্ষা শুরু হবে।
করোনার উপধরণ সংক্রমণ রোধে জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় সকলকে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের এই কর্মকর্তা।
ঢাকা/শিয়াম/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ রমণক র দ র স ক রমণ বগঞ জ র পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকালে বৈদ্যুতিক লাইনের নেটের আঘাতে নিহত ১, আহত ৫
টাঙ্গাইলে ট্রেনের ছাদে অবৈধভাবে ভ্রমণের সময় বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম রিপন আলী (৩৭)। তিনি রাজশাহীর পবা উপজেলার কালিয়ানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। আহতদের মধ্যে অজ্ঞাতপরিচয়ের এক ব্যক্তি টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
রেলওয়ে পুলিশের টাঙ্গাইল ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ জানান, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর পর ছাদে রক্তাক্ত অবস্থায় ছয়জনকে পাওয়া যায়। আহত যাত্রীরা পুলিশকে জানান, তাঁরা ঢাকা থেকে ট্রেনের ছাদে উঠেছিলেন। টাঙ্গাইল স্টেশনে পৌঁছানোর ১৫–২০ মিনিট আগে রেলপথের ওপর দিয়ে অতিক্রম করা একটি বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইনের নিচের নেটের সঙ্গে ধাক্কা লেগে তাঁরা আহত হন।
আহত ছয়জনকে পুলিশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে রিপন আলীর মৃত্যু হয়। আহতদের মধ্যে আশরাফুলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহত আমিরুল ইসলাম (২৫), আলিম (২৫) ও ফয়সাল (২৭) চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। অজ্ঞাতপরিচয়ের এক কিশোর (১৫–১৬) এখনো টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, তার হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা অবস্থায় শুয়ে আছে। কর্তব্যরত নার্স জানান, ছেলেটি কথা বলতে পারছে না।
এদিকে নিহত রিপন আলীর রাজশাহীর বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কালিয়ানপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির ভেতরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আহাজারি করছেন। বাইরে রিপনের দাফনের জন্য কবর খোঁড়া হচ্ছে, কেউ বাঁশ কাটছেন।
রিপনের বাবা ইসরাফিল হোসেন জানান, রিপন ঢাকার একটি ইলেকট্রনিকস কোম্পানিতে চাকরি করত। কয়েক মাস আগে চাকরি ছেড়ে দিয়ে নতুন কাজ খুঁজছিল। গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টাঙ্গাইল হাসপাতাল থেকে রিপনের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে তার ছোট ছেলের ফোনে যোগাযোগ করা হয়। তখনই তাঁরা জানতে পারেন, রিপন ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।