২১ ও ২৮ জুন কাস্টমস,ভ্যাট ও কর কার্যালয় খোলা থাকবে
Published: 18th, June 2025 GMT
২১ জুন ও ২৮ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং এর অধীন সব কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর কার্যালয় খোলা থাকবে। শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও ওই দুই দিন খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মূলত রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর।
আজ এ–সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে এনবিআর। গত ২ জুন আগামী অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। ২২ জুন বাজেট চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) মোট ৩ লাখ সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকা আদায় করেছে। এটি সাময়িক হিসাব। ভ্যাটের রিটার্ন দাখিলের হিসাবের এই সংখ্যা আরও বাড়বে। লক্ষ্য অর্জনে শুধু জুন মাসেই সব মিলিয়ে ১ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে হবে এনবিআরকে।
এনবিআরকে চলতি অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার সংশোধিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। মূল লক্ষ্য ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা, নীতি সুদহার অপরিবর্তিত
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথমার্ধের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্য নতুন মুদ্রানীতি ঘোঘণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মুদ্রানীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।নীতি সুদহার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। এ সময় ডেপুটি গভর্নর, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান, গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক, প্রধান অর্থনীতিবিদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় গভর্নর বলেন, “যতক্ষণ না মূল্যস্ফীতির হার ৭ শতাংশের নিচে নেমে আসে, ততদিন নীতি সুদ হার ১০ শতাংশ নির্ধারিত থাকবে। এছাড়া স্ট্যান্ডিং ল্যান্ডিং ফ্যাসিলিটির হার ১১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটির হার ৮ শতাংশ বজায় রাখা হবে। তবে যদি রপ্তানি কমে যায় ও টাকার ওপর চাপ সৃষ্টি হয়, তাহলে নীতিসুদ হার সাময়িকভাবে সমন্বয় করা হবে।”
আরো পড়ুন:
সালমানকে ১০০ কোটি, সায়ানকে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা
সিটি ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান হোসেন খালেদ
গভর্নর বলেন, “২০২৪ সালের আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের অর্থনীতি একাধিক গুরুতর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, টাকার অবমূল্যায়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস, তারল্য সংকট, দুর্বল সুশাসন এবং ঋণ খেলাপির মাত্রা বেড়ে যাওয়ার মতো সংকট তখন প্রকট। তখন বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে একটি সুস্পষ্ট ও বাস্তবভিত্তিক কৌশল গ্রহণ করেছে।”
তিনি বলেন, “সংকট মোকাবিলায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠন এবং ব্যাংকিং খাতে আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর মুদ্রানীতি অবলম্বন করেছে। একইসাথে, চালু করা হয়েছে একটি সম্পূর্ণ নমনীয় বাজারভিত্তিক বিনিময় হার ব্যবস্থা। ব্যাংকিং খাতে সংস্কার প্রক্রিয়া জোরদার করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে দুর্বল ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম পর্যালোচনা, সুশাসন নিশ্চিতকরণ এবং ঝুঁকিভিত্তিক তদারকি চালু করেছে।ফলে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে। আমানতকারীদের আস্থা কিছুটা ফিরেছে এবং তারল্য পরিস্থিতিও উন্নতি হয়েছে।”
“চাহিদা ও সরবরাহের দিক থেকে নেওয়া নানা পদক্ষেপের ফলে মূল্যস্ফীতি হ্রাসের দিকে যাচ্ছে, তবে এটি এখনো লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি। মার্কিন ট্যারিফ প্রভাবের ফলে টাকার অবমূল্যায়নজনিত খরচ বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। তাই প্রথমার্ধের কড়া মুদ্রানীতি বজায় রাখবে। যাতে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে নেমে আসে।”
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে আগামী বছরের জুন নাগাদ গড় মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ। সরকারের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যকে সামনে রেখেই বাংলাদেশ ব্যাংক মুদ্রানীতি প্রণয়ন করেছে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রা সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বছরে দুইবার (জানুয়ারি-জুন ও জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের জন্য) মুদ্রানীতি ঘোষণা করে।
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ