বেরোবি উপাচার্য কলিমউল্লাহসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
Published: 18th, June 2025 GMT
অর্থ আত্মসাৎ, ঠিকাদারকে অগ্রিম বিল প্রদানসহ নানা অভিযোগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক দুই উপাচার্যসহ মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৮ জুন) গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।
মামলার আসামিরা হলেন বেরোবির সাবেক উপাচার্য ও প্রকল্প পরিচালক এ কে এম নূর-উন-নবী, সাবেক উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদার আব্দুস সালাম বাচ্চু ও ঠিকাদার এমএম হাবিবুর রহমান।
আরো পড়ুন:
কিশোরগঞ্জে মাদক মামলায় নারীর যাবজ্জীবন
ঘরের দরজা ভেঙে বিধবাকে ধর্ষণ, থানায় মামলা
দুদক মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বলেন, “পরস্পর যোগসাজশ, অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ, ক্ষমতার অপব্যবহার করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদিত ডিপিপি উপেক্ষা করে নকশা পরিবর্তন, ৩০ কোটি টাকা মূল্যের ঊর্ধ্বের চুক্তি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অনুমোদন ব্যতিরেকে সম্পাদন, ঠিকাদারের রানিং বিল থেকে কর্তনকৃত নিরাপত্তা জামানতকে এফডিআর হিসেবে ব্যাংকে জমা রাখা এবং সেই এফডিআরকে লিয়েনে রেখে ঠিকাদারকে লোন প্রদান করার জন্য নো অবজেকশন সার্টিফিকেট অনুমোদন তথা গ্যারান্টর হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় তথা সরকারের ৪ কোটি টাকা আত্মসাৎ, ঠিকাদারের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিতে অগ্রিম অর্থ প্রদানের কোনো সংস্থান না থাকা সত্ত্বেও ঠিকাদারকে আর্থিক সহযোগিতার কারণ দেখিয়ে ব্যাংক গ্যারান্টি গ্রহণ করে অগ্রিম বিল প্রদান করা এবং অগ্রিম প্রদানকৃত বিল সমন্বয়ের পূর্বেই অগ্রিম বিলের বিপরীতে প্রদত্ত ব্যাংক গ্যারান্টিসমূহ অবমুক্ত করা, প্রথম পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদানকৃত ড্রইং/ডিজাইন না মেনে সরকারি খাতে ক্রয় পদ্ধতির বিধিবর্হিভূতভাবে দ্বিতীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ প্রদান, অস্বাভাবিক হারে মূল্য দাখিল বা ফ্রন্ট লোডিং থাকা সত্ত্বেও পিপিআর ২০০৮-এর বিধান অনুযায়ী দরপত্র মূল্যায়ন সম্পন্ন না করার অভিযোগ রয়েছে।”
তিনি বলেন, “এগুলো দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ও দণ্ডবিধির ৪০৯, ১০৯ ধারায় ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ইরান থেকে আরও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে: ইসরায়েলি সেনাবাহিনী
ইরান থেকে আরও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ঠেকাতে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কাজ করছে। তাই সেনাবাহিনী দেশটির জনগণকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলেছে।
কিছুক্ষণ আগে, ইরানের সংবাদ সংস্থা ফার্স জানিয়েছে, ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে বাঙ্কার ভাঙা ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর বিবৃতির বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলের জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) জানিয়েছে, তাদের বিমানবাহিনী তেহরানের বিভিন্ন এলাকায় সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা শুরু করেছে। ইরানের ইসলামিক রিভ্যলিউশনারি গার্ড বলেছে, তেহরানের উত্তরাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলীয় শহরতলীতে কিছু ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, ইরানের সংবাদমাধ্যম বড় ধরনের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে খবর দিয়েছে। বিভিন্ন ছবিতে দেখা যাচ্ছে, উত্তর পূর্ব তেহরানে বিস্ফোরণের পর ধোঁয়া উড়ছে।
কিছু সূত্র বলছে, তেহরানের লাভিজান এলাকাতেও বিমান হামলা হয়েছে। নিউজ সাইট তাবনাক বলছে, তেহরানের পূর্ব ও পশ্চিম অংশ ছাড়াও কারাজের বিভিন্ন এলাকায় হামলা করছে ইসরায়েল।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে, ইরানের দুটি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্র ইসরায়েলি হামলায় আক্রান্ত হয়েছে। সেন্ট্রিফিউজ সিস্টেম ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
বুধবার এক্স হ্যান্ডেলে আইএইএ জানায়, ইরানি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্র টিইএসএ কারাজ ও তেহরান রিসার্চ সেন্টারে হামলা হয়েছে। দুটি কেন্দ্রই একসময় আইএইএর নজরদারির আওতায় ছিল। এর আগে ইসরায়েলও তাদের রাতভর হামলায় ইরানের সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন কেন্দ্র আক্রান্ত হওয়ার তথ্য দিয়েছিল।
আইএইএ -এর বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, তেহরান রিসার্চ সেন্টারের একটি ভবনে হামলা হয়েছে। এখানে অ্যাডভান্সড লেভেলের সেন্ট্রিফিউজ রটরস উৎপাদন ও পরীক্ষা করা হয়। এছাড়া কারাজে ইরান সেন্ট্রিফিউজ টেকনোলজি কোম্পানির (টিইএসএ) দুটি ভবন ধ্বংস হয়েছে। সেখানে সেন্ট্রিফিউজের বিভিন্ন উপকরণ উৎপাদন করা হয়। দুটি স্থাপনাই এর আগে ইরানের পরমাণু চুক্তির আওতায় আইএইএ পর্যবেক্ষণ করেছিল। সেন্ট্রিফিউজ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণে ব্যবহৃত হয়, যা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এটি পরমাণু অস্ত্র তৈরিতেও দরকার।
এছাড়া ইরানের রাজধানী তেহরানের পূর্ব উপকণ্ঠে অবস্থিত ইমাম হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়েও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বুধবার ইরানি সংবাদমাধ্যমের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, তেহরানের এই বিশ্ববিদ্যালয়টির সঙ্গে ইরানের অভিজাত বাহিনী ইসলামিক রেভ্যুলেশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে ধরা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক অধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যাকটিভিস্টস বলছে, ইরানজুড়ে ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৮৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত ১ হাজার ৩২৬ জন। সংগঠনটি বলেছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২৩৯ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ১২৬ জন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যকে তারা শনাক্ত করতে পেরেছে।
ইসরায়েলি হামলায় হতাহতের বিষয়ে সর্বশেষ সোমবার তথ্য জানিয়েছে ইরান সরকার। দেশটির সরকারি হিসাবে, নিহতের সংখ্যা ২২৪। আর আহত হয়েছেন ১ হাজার ২৭৭ জন মানুষ।
চলমান সংঘাতে ইরান সরকার নিয়মিত হতাহতের তথ্য প্রকাশ করছে না। সবশেষ সরকারি তথ্য প্রকাশ করা হয়েছিল গত সোমবার। সেই তথ্য অনুসারে, ২২৪ জন নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন ১ হাজার ২৭৭ জন মানুষ।