সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম কারাগারে
Published: 19th, June 2025 GMT
সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। যুবদল নেতা শামীম মোল্লা হত্যা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো এবং কারাগারে পাঠানোর আবেদন করে পুলিশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ বৃহস্পতিবার আবেদন দুটি মঞ্জুর করেন।
শামসুল আলমকে বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসা থেকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।
আজ শামসুল আলমকে আদালতে হাজির করে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর পাশাপাশি কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) ফেরদৌস আলম। আসামিপক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত শামসুল আলমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
রাজধানীর নয়াপল্টনে ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশের দিন যুবদলের নেতা শামীম মোল্লাকে হত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ৭০৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ছাত্রদলের সাবেক সদস্য মো.
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২৮ অক্টোবর দুপুরের দিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্য আসামিরা পল্টনের হোটেল লিভিংয়ের সামনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেন। তাঁরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর গুলি, বোমা, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ছুড়তে থাকেন। শামীম গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশপ্রেমিক ও পেশাদার কর্মকর্তাদের বাহিনীর নেতৃত্বে চান প্রধান উপদেষ্টা
বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর নেতৃত্বে দেশপ্রেমিক, মেধাবী, দক্ষ, পেশাদার, সৎ, মানবিক ও নৈতিক গুণাবলিসম্পন্ন যোগ্য কর্মকর্তাদের নির্বাচনের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী নির্বাচনী পর্ষদকে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
নৌবাহিনী সদর দপ্তরে ‘নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী নির্বাচনী পর্ষদ-২০২৫’–এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন থেকে কমোডর, কমান্ডার থেকে ক্যাপ্টেন ও লেফটেন্যান্ট কমান্ডার থেকে কমান্ডার এবং বিমানবাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন থেকে এয়ার কমোডর, উইং কমান্ডার থেকে গ্রুপ ক্যাপ্টেন এবং স্কোয়াড্রন লিডার থেকে উইং কমান্ডার পদবিতে কর্মকর্তাদের পদোন্নতির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সামরিক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত এ পর্ষদ সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর ভবিষ্যৎ জ্যেষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তা নির্বাচন করবে।
আইএসপিআর জানায়, নির্বাচনী পর্ষদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর বীর সদস্য, সব শ্রেণি-পেশার মুক্তিকামী বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আত্মত্যাগকারী সকল শহীদকে স্মরণ করেন। তিনি বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর গৌরবময় ইতিহাস, সংগ্রাম ও বীরত্বের কথা স্মরণসহ শান্তিকালীন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা এবং জাতীয় প্রয়োজনে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের প্রশংসা করেন।
আইএসপিআর আরও জানায়, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ও নানা সংকটে মানুষের ভালোবাসা ও পরম নির্ভরতা অর্জন করায় নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের সাধুবাদ ও অভিনন্দন জানান প্রধান উপদেষ্টা। এ ক্ষেত্রে তিনি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর দেশের নিরাপত্তা, সংকটে আপামর জনসাধারণের পাশে দাঁড়িয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, দেশ গঠনে উন্নয়ন ও সেবামূলক কাজে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের অংশগ্রহণের বিষয় উল্লেখ করেন।
আইএসপিআর আরও জানায়, দেশের সমুদ্র সম্পদের সংরক্ষণ ও আহরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন, ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র গভীর সমুদ্রবন্দরের ব্যবস্থাপনায় নৌবাহিনীর অবদান এবং সার্বিকভাবে সুনীল অর্থনীতির বিকাশে প্রয়োজনীয় দক্ষ মানবসম্পদ গড়ার ব্যাপারে নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি দেশের সুনীল অর্থনীতির বিকাশে চলমান বিভিন্ন কর্মকাণ্ড, মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (এমআইডিএ) প্রতিষ্ঠা, উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নসহ দেশের সার্বিক উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ওপর আলোকপাত করেন। এসব কাজে নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর অবদানের কথা উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর মাধ্যমে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানসহ দেশমাতৃকার সেবায় ও সুরক্ষায় বাহিনী দুটির ভূমিকা ও সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী দেশের সংবিধান সমুন্নত রেখে যেকোনো রাষ্ট্রীয় সংকটে এবং দুর্যোগে আর্তমানবতার সেবায় জনগণের পাশে দাঁড়ানোর এই ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
এর আগে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন প্রধান উপদেষ্টাকে স্বাগত জানান। দুই বাহিনী প্রধান উল্লেখ করেন, ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টার সম্পৃক্ততা ও দিকনির্দেশনা নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর সদস্যদের কর্মস্পৃহা ও মনোবল বৃদ্ধি করেছে। প্রধান উপদেষ্টার দিকনির্দেশনায় নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীতে নেতৃত্ব প্রদানে দেশপ্রেম, পেশাগত দক্ষতা, মানবিক ও অধিনায়কত্বের গুণাবলির মাপকাঠিতে দক্ষ ও উপযুক্ত কর্মকর্তা নির্বাচনের মাধ্যমে সুদক্ষ বাহিনী গড়ে তোলার দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করেন বাহিনী প্রধানগণ।
নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর নির্বাচনী পর্ষদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সামরিক ও বেসামরিক ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান উপদেষ্টা নৌবাহিনী সদর দপ্তর প্রাঙ্গণে একটি বৃক্ষ রোপণ করেন।