সময় হলে নির্বাচনের তারিখ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেছেন, নির্বাচন আয়োজন বিষয়ে সরকারের সঙ্গে কমিশনের যোগাযোগ ও সম্পৃক্ততা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন তার নিজস্ব কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। সময় হলেই নির্বাচনের তারিখ বিষয়ে সবাই জানতে পারবে।

শনিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি এসব কথা বলেন। এদিন নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট কর্মকর্তাদের দুইদিনব্যাপী নির্বাচনী আইন ও বিধি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন তিনি।

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি আরও বলেন, নির্বাচন আয়োজন বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশন যতই স্বাধীন হোক না কেন, সরকারের সহযোগিতা ছাড়া নির্বাচন হবে না। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, প্রশাসন ইত্যাদি বিষয়গুলো রয়েছে। কাজেই সরকারের সঙ্গে ফরমাল ইনফরমাল সব ধরনের যোগাযোগ রয়েছে। 

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‌‘এটাকে কেন রোডম্যাপ বলছেন? আমরা তো এটাকে কর্মপরিকল্পনা বলছি। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই একটা কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। যেকোনো অফিসের একটি কর্মপরিকল্পনা থাকে। নির্বাচনের তারিখ হলে সবাই জানতে পারবে, জাতি জানতে পারে।’

এর আগে প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করে সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী আচরণবিধি প্রণয়নের চেষ্টা হচ্ছে। বিভিন্ন নীতিমালা তৈরি করছি। বিভিন্নজনের মতামত নিয়ে এটি চূড়ান্ত করা হবে। 

নির্বাচন পরিচালনায় প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, যারা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন তাদের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য কিছু আসলে সেটা আমরা গ্রহণ করব। প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বিস্তৃত করতে আঞ্চলিক নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের কথা জানান সিইসি। ইসি সচিব আখতার আহমেদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমেদ।  

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ইস ইস সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃষ্টির মধ্যে অনশনে একদল শিক্ষার্থী, অসুস্থ দুজন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কাফনের কাপড় জড়িয়ে আমরণ অনশনে বসেছেন এক শিক্ষার্থী। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে সামনে এই অনশন অব্যাহত রেখেছেন তিনি। রাতে তাঁর সঙ্গে যুক্ত হন আরও তিন শিক্ষার্থী। পরে আজ শনিবার সকালে একদল শিক্ষার্থী সেখানে যুক্ত হয়েছেন।

আজ শনিবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটেও বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে সামনে এসব শিক্ষার্থীদের অনশনরত অবস্থায় দেখা গেছে। পরে সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়েন দুজন। তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনপোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনাকে রাকসু বানচালের ষড়যন্ত্র বলছেন প্রার্থীরা১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

অনশন শুরু করা ওই শিক্ষার্থীর নাম আসাদুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তাঁর ব্যানারে লেখা আছে—‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা নামক বিষফোড়া পুনর্বহাল রাখার প্রতিবাদে আমরণ অনশন ধর্মঘট’। রাতে আসাদুলের সঙ্গে যুক্ত হওয়া অন্য শিক্ষার্থীরা হলেন আরবি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রমজানুল মোবারক, ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সজিবুর রহমান এবং ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে সমাজকর্ম বিভাগের আরিফুল ইসলাম। এ ছাড়া আজ সকালে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী সেখানে যোগ দিয়েছেন। তাদের রমজানুল মোবারক ও সাঈদ নামের দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়।

অনবরত অবস্থায় আসাদুল ইসলাম বলেন, পোষ্য কোটা নামের বিষফোড়া আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এটিকে নির্মূল করার জন্যই এই কর্মসূচি। পোষ্য কোটা বাতিল না করা পর্যন্ত তিনি অনশন ভাঙবেন না।

আরও পড়ুনপোষ্য কোটা ফেরানোর প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ২১ ঘণ্টা আগে

রমজানুল মোবারক বলেন, রাকসুকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা সুযোগ নিয়েছেন। তাঁরা পোষ্য কোটা বাতিলের সঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদও (রাকসু) চান।

আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আজ বেলা পৌনে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে যান প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান ও ছাত্র উপদেষ্টা সহযোগী আমিরুল ইসলাম। কিন্তু তাঁদের কথাতেও অনশন ভাঙেননি শিক্ষার্থীরা। পরে বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি। বৃষ্টি উপেক্ষা করেই অনশন চালিয়ে যান তাঁরা।

আরও পড়ুনপোষ্য কোটা ফেরানোর প্রতিবাদে সাড়ে ৪ ঘণ্টা বিক্ষোভ, আজ দুপুরে নতুন কর্মসূচি১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ বিষয়ে আমিরুল ইসলাম আজ দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনশনরত দুই শিক্ষার্থী বৃষ্টিতে ভিজে অসুস্থ পড়েছে। তাঁদের মেডিকেলে নিয়ে এসেছি। দুজনেরই ঠান্ডাজ্বর লেগেছে। তাঁদের প্রয়োজনীয় প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের একজনকে আবাসিক হল এবং অন্যজনকে মেসে দিতে যাচ্ছি।’

গত বৃহস্পতিবার প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১০টি শর্তে পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়। উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনের সভাপতিত্বে সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ভর্তি উপকমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই প্রতিবাদ শুরু করেন। পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ চলে। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পরও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়।

আরও পড়ুনরাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ শর্তে ফিরল পোষ্য কোটা, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ