ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালালো রাশিয়া
Published: 4th, July 2025 GMT
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে ইউক্রেনে সবচেয়ে বড় ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। হামলায় কমপক্ষে ২৩ জন আহত হয়েছে এবং রাজধানী কিয়েভজুড়ে ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে কথা বলার কয়েক ঘন্টা পরেই।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া মোট ৫৩৯টি ড্রোন এবং ১১টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত কিয়েভে বিমান হামলার সাইরেন, কামিকাজে ড্রোনের শব্দ এবং বিস্ফোরণের শব্দ প্রতিধ্বনিত হয়েছিল। বাসিন্দারা আশ্রয়ের জন্য ভূগর্ভস্থ মেট্রো স্টেশনগুলোতে পরিবারের সাথে জড়ো হয়েছিলেন। শহরের কেন্দ্রস্থলে তীব্র ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছিল।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই আক্রমণকে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে বিশাল এবং নিন্দনীয়’ বলে অভিহিত করেছেন।
জেলেনস্কি এক্স-এ বলেছেন, “উল্লেখযোগ্যভাবে গতকাল আমাদের শহর ও অঞ্চলে প্রথম বিমান হামলার সতর্কতা প্রায় একই সাথে প্রচারিত হতে শুরু করে যখন সংবাদমাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং পুতিনের মধ্যে একটি ফোনালাপ নিয়ে আলোচনার খবর প্রকাশিত হয়েছিল। আবারো রাশিয়া দেখিয়ে দিচ্ছে যে যুদ্ধ ও সন্ত্রাস বন্ধ করার কোনো ইচ্ছা তাদের নেই।”
কিয়েভের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামলায় কিয়েভের ১০টি জেলার মধ্যে ছয়টিতে প্রায় ৪০টি অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক, যাত্রীবাহী রেলওয়ে অবকাঠামো, পাঁচটি স্কুল ও কিন্ডারগার্টেন, ক্যাফে এবং অনেক গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পোল্যান্ড জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় কিয়েভে তাদের দূতাবাসের কনস্যুলার অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কর্মীরা অক্ষত রয়েছেন।
মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে ১৪জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আটক হয়নি কেউ আতঙ্কে এলাকা পুরুষশূন্য
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ী গ্রামে মা ও দুই সন্তানকে হত্যার পর এলাকা অনেকটা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। মরদেহ তিনটি গতকাল শুক্রবার রাতে দাফন করা হয়েছে। ঘটনার পর ৩৬ ঘণ্টা পার হলেও পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।
ময়নাতদন্ত শেষে রাতে নিহতদের বাড়ির পাশের একটি কবরস্থানে পুলিশের উপস্থিতিতে মরদেহ দাফন করা হয়। এদিকে ঘটনার পর থেকে নিহতদের বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে বাঙ্গরা বাজার থানাধীন কড়ইবাড়ী গ্রামে একটি মোবাইল ফোন ছিনতাই ও মাদক ব্যবসার অভিযোগ তুলে হামলা করে উচ্ছৃঙ্খল জনতা। ওই গ্রামের জুয়েল মিয়ার স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি, তাঁর ছেলে মো. রাসেল মিয়া ও মেয়ে জোনাকি আক্তারকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। যদিও এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রুবির ছেলে নিহত রাসেলের স্ত্রী মীম আক্তার। তিনি বলেন, ‘একটি মোবাইল চুরির ঘটনার সূত্র ধরে আমাদের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর হয়। বুধবার রাতে বাছির নামে এক যুবক আমার স্বামীকে ফোন করে সকালে পুরো পরিবারকে হত্যা করে ফেলার হুমকি দেয়। তিনজন পরিকল্পিত হত্যার শিকার।’
পালিয়েছেন চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, ঘটনার দিন সকালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল ও ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়ার সঙ্গে নিহতদের পরিবারের হাতাহাতি হয়। এ ঘটনাকে মারধর বলে মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজনকে জড়ো করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য এলাকা ছেড়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন। তাদের মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে, ঘটনার পর থেকে গতকাল শুক্রবার রাতে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিহতদের বাড়িতে পুলিশের পাহারা ছিল। বাড়ির তিনটি আবাসিক ভবন তালাবদ্ধ। বাইরে পাহারায় ছিল পুলিশ।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, শুক্রবার ওই বাড়িতে গণমাধ্যমকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন ছাড়া আর কাউকে দেখা যায়নি। তারা আরও জানান, নিহতদের কবর খুঁড়তে পুলিশকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ গ্রেপ্তার আতঙ্কে এলাকা ছেড়েছে। অন্য এলাকা থেকে লোক এনে কবর খুঁড়তে হয়েছে। এর পর মরদেহ রাতে পুলিশের তত্ত্বাবধানে জানাজা শেষে দাফন করা হয়। এ সময় থানা পুলিশ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. শারমীন সুলতানা জানান, দুপুর ১২টার দিকে তিনজনের মরদেহের ময়নাতদন্ত শুরু করা হয়। বিকেলে সেগুলো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
রাতে বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে নিহতদের বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত রুবির মেয়ে রিক্তা আক্তার গতকাল রাতে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হবে। তিনি আরও
জানান, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।