কন্নড় সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী, নৃত্যশিল্পী ভাবনা রামান্না। রুপালি জগতে ভাবনা নামেই পরিচিত। ব্যক্তিগত জীবনে এখনো অবিবাহিত ৪০ বছর বয়সি এই অভিনেত্রী। এবার এই অভিনেত্রী জানালেন— জমজ সন্তানের মা হতে যাচ্ছেন তিনি।  

বেবি বাম্পের কয়েকটি ছবি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে মা হতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ভাবনা। আইভিএফ (ইন–ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন) পদ্ধতিতে সন্তান জন্ম দিতে যাচ্ছেন। উচ্ছ্বসিত ভাবনা বলেন, “নতুন অধ্যায়, নতুন ছন্দ। আমি কখনো কল্পনাও করিনি এই কথা বলতে পারব। কিন্তু এখন আমি ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। জমজ সন্তান আসছে। আমি কৃতজ্ঞ।” 

এ বয়সে মা হওয়ার বিষয়ে ভাবনা বলেন, “আমার বয়স যখন ২০ এবং ৩০ বছর, তখন মাতৃত্ব নিয়ে ভাবিনি। যখন আমার বয়স ৪০, তখন ইচ্ছাটা অপ্রতিরোধ্য হয়। কিন্তু অবিবাহিত নারী, সুতরাং এই যাত্রা সহজ নয়। অনেক আইভিএফ ক্লিনিক আমাকে ফিরিয়ে দেয়।”

আরো পড়ুন:

রামায়ণ: রাম-সীতা হতে কত কোটি টাকা নিলেন রণবীর-সাই পল্লবী?

ফের আইটেম গানে নাচবেন কারিনা?

পরের ঘটনা বর্ণনা করে ভাবনা বলেন, “তারপর আমি ডা.

সুষমার সঙ্গে দেখা করি। কোনো ভাবনাচিন্তা ছাড়াই তিনি আমাকে স্বাগত জানান। তার সহযোগিতায় এবং প্রথম প্রচেষ্টাতেই গর্ভধারণ করি।”

এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে পরিবারের পুরো সমর্থন পেয়েছেন ভাবনা। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “আমার বাবা, ভাই-বোনেরা ভালোবাসার সঙ্গে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। কেউ কেউ আমার এই পছন্দ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন— কিন্তু আমি জানতাম: আমি প্রস্তুত ছিলাম।” 

অনাগত সন্তানদের পিতৃপরিচয় নিয়ে ভাবনা বলেন, “আমার সন্তানদের বাবা থাকবে না এটা ঠিক। কিন্তু আমার বাড়িতে শিল্প-সংস্কৃতি, সংগীত এবং সীমাহীন ভালোবাসা নিয়ে বড় হবে। তারা মানুষ হিসেবে দয়ালু, আত্মবিশ্বাসী হবে। তারা যেখান থেকে এসেছে, তা নিয়ে গর্বিত হয়ে বেড়ে উঠবে।” 

অবিবাহিত হয়েও মা হওয়ার সিদ্ধান্ত কোনো বিদ্রোহ নয়। ভাবনার ভাষায়— “আমি কোনো বিদ্রোহ করার জন্য এই পথ বেছে নিইনি। আমি আমার সত্যকে সম্মান করার জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যদি আমার গল্প একজন নারীকেও নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে অনুপ্রাণিত করে, তাহলে সেটাই যথেষ্ট। খুব শিগগির দুটি ছোট্ট আত্মা আমাকে ‘আম্মা’ বলে ডাকবে— এটাই সবকিছু।”

ঢাকা/শান্ত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র অব ব হ ত আম র ব

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্প কীভাবে ‘ম্যাডম্যান তত্ত্ব’ ব্যবহার করে বিশ্ব বদলে দেওয়ার চেষ্টা করছেন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে গত মাসে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ইরানে হামলায় তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন কি না। জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি এটা করতে পারি। আবার আমি না-ও করতে পারি। আমি কী করতে যাচ্ছি, তা কেউই জানে না।’

ট্রাম্প বিশ্বকে এমনটা বিশ্বাস করতে দিয়েছিলেন যে ইরানকে আলোচনা শুরুর সুযোগ দিতে দুই সপ্তাহ হামলা স্থগিত রাখার বিষয়ে তিনি সম্মত হয়েছেন। কিন্তু পরে এ সময়ের মধ্যেই তিনি হামলা চালিয়ে বসেন।

এ ঘটনায় একটি প্রবণতা সামনে এসেছে, ট্রাম্পের সম্পর্কে সবচেয়ে অনুমেয় বিষয়টি হলো তাঁর অননুমেয় আচরণ। তিনি তাঁর চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করেন। তিনি স্ববিরোধী কাজ করেন। তাঁর কথা আর কাজে মিল নেই।

লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক পিটার ট্রুবোউইৎজ বলেন, ‘(ট্রাম্প) একটি অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়া তৈরি করেছেন, অন্তত পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে। সম্ভবত (প্রেসিডেন্ট) রিচার্ড নিক্সনের পর থেকে এটিই সবচেয়ে কেন্দ্রীভূত।’ তিনি বলেন, ‘এটি নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তগুলোকে ট্রাম্পের আচরণ, তাঁর পছন্দ ও মেজাজ-মর্জির ওপর আরও বেশি নির্ভরশীল করে তুলেছে।’

ট্রাম্প তাঁর এই বৈশিষ্ট্যকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে আসছেন। তিনি তাঁর নিজের অননুমেয় আচরণকে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত ও রাজনৈতিক সম্পদে পরিণত করেছেন। তিনি এই অননুমেয় আচরণকে একটি মতবাদ বা নীতির পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। আর এখন যে ব্যক্তিগত বৈশিষ্ট্য তিনি হোয়াইট হাউসে নিয়ে এসেছেন, সেটিই পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। এটি বিশ্বব্যবস্থার বিদ্যমান কাঠামো পাল্টে দিচ্ছে।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা এটিকে ‘ম্যাডম্যান থিওরি’ বা ‘খ্যাপাটে তত্ত্ব’ বলে থাকেন। এই তত্ত্বে একজন বিশ্বনেতা তাঁর প্রতিপক্ষকে বোঝানোর চেষ্টা করেন, তিনি নিজের মেজাজ-মর্জিমতো যেকোনো কিছু করতে সক্ষম, যাতে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে সুবিধা আদায় করা যায়। সফলভাবে ব্যবহার করা হলে এটি একধরনের জবরদস্তি বা চাপ প্রয়োগের কৌশল হতে পারে। ট্রাম্প বিশ্বাস করেন, এটি সুফল দিচ্ছে এবং এর মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের তাঁর পছন্দমতো অবস্থানে নিয়ে আসতে পারছেন।

কিন্তু এটি কি এমন পদ্ধতি, যা শত্রুদের বিরুদ্ধেও কাজে দেবে? আর এর ত্রুটি কি এমনটি হতে পারে যে এটি প্রতিপক্ষকে বোকা বানানোর জন্য তৈরি করা একটি কৌশল না হয়ে বরং সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুস্পষ্ট চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে গঠিত, যার ফলে তাঁর আচরণ আরও সহজে অনুমানযোগ্য হয়ে ওঠে?

কথার আক্রমণ, অপমান ও কাছে টানা

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কাছে টেনে আর আমেরিকার মিত্রদের কথার আক্রমণের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করেন। তিনি কানাডাকে অপমান করে বলেছিলেন, দেশটির যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হয়ে যাওয়া উচিত।

ট্রাম্প বলেছিলেন, গ্রিনল্যান্ডকে (আমেরিকার মিত্র ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল) যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করার জন্য সামরিক শক্তি প্রয়োগের কথা বিবেচনা করতে তিনি প্রস্তুত। তিনি আরও বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত পুনরায় পানামা খালের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ নেওয়া।

সামরিক জোট ন্যাটো সনদের ৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রতিটি সদস্যদেশ অন্য দেশকে রক্ষায় এগিয়ে আসার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের এ অঙ্গীকারকে সংশয়ের মধ্যে ফেলে দেন। যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেন, ‘আমি মনে করি, (ন্যাটো সনদের) ৫ অনুচ্ছেদ লাইফ সাপোর্টে আছে।’

ন্যাটো সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (প্রথম সারিতে বাঁ থেকে চতুর্থ) ও বিশ্বনেতারা

সম্পর্কিত নিবন্ধ