ভারতীয় বাংলা টিভি সিরিয়াল নিয়ে তোপ দাগলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তার দাবি—এসব সিরিয়ালের গল্প সমাজে ভয়ংকর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। মহানায়ক উত্তম কুমারের স্মৃতিতে আয়োজিত সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বরেন তিনি। 

মমতা ব্যানার্জি বলেন, “সিরিয়াল যারা করেন তাদের বলব, এখন সারাক্ষণ দেখছি, এ ওকে বিষ দিচ্ছে, ও একে বিষ দিচ্ছে। একটা পরিবারে তিনজন ঝগড়া করছে। একটা কেন্দ্রীয় চরিত্র, দুটি ঝগড়াটে চরিত্র। আর বাজে বাজে জিনিসগুলো শেখানো হচ্ছে। এতে সমাজের বাচ্চারা ভুল করছে। অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে।” 

টিভি সিরিয়ালের মালিকদের দৃষ্টিআকর্ষণ করে মমতা বলেন, “টিভি সিরিয়ালের মালিকদের বলব, এটা লীনাদিদের (লীনা গাঙ্গুলি) হাতে নেই, যারা মালিক তাদের হাতে আছে, দয়া করে খারাপ কিছু শেখাবেন না। আর সিরিয়াল বাড়াতে হবে বলে, রোজ গুন্ডামি! ভালো জিনিস দিয়ে বাড়ান। কত-কত সুন্দর বিষয় আছে। হাসি-খুশি-মজা-সামাজিক গল্প, এগুলো দেখান। যে গল্প আমার সংস্কৃতিকে ভালোবাসে, যে গল্প মানুষের বিবেককে জাগ্রত করে, আবেগকে জাগ্রত করে, সেগুলো দেখান।” 

আরো পড়ুন:

উত্তরায় শুটিং হাউজ বন্ধের নোটিশ, নির্মাতা-শিল্পীদের প্রতিবাদ

রাজস্থানের ফটোশুটে বর জয়, কনে জেরিন

বাংলা সিরিয়ালে বাংলা গান ব্যবহার নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “সিরিয়ালে এখন বাংলা গান কোথায়? এরা ভাবে শুধু ঝিকঝাক দুমদাম গান দিয়ে দিলেই হয়ে গেল। আরে বাজান না, কিন্তু ওরা তো একটা জায়গায় বাজায়। তাদের জন্য একটা প্ল্যাটফর্ম আছে তো! বলিউড তো পুরোটাই তাদের জন্যে। দক্ষিণ ভারতও বেশ জনপ্রিয়। কিন্তু টলিউডে তো আপনারা বাংলা গানটা বেশি করে দেবেন। লীনাদি (লীনা গাঙ্গুলি) দেয়, আমি জানি। কিন্তু সবাইকেই এটা নিয়ে ভাবতে হবে।”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক

এছাড়াও পড়ুন:

সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন

প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।

জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।

অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।

কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।

সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ