ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানবিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার (২৭ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে দিনব্যাপী এ সম্মেলনে দেশ-বিদেশের ১৩টি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও সিভিল সোসাইটি সংগঠন অংশগ্রহণ করে।

ঢাকাভিত্তিক গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটেড থট (আরআইটি) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ যৌথভাবে সম্মেলনটির আয়োজন করে। এতে সহ-আয়োজক হিসেবে অংশ নেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব রেজিনা (কানাডা), নানিয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি (সিঙ্গাপুর), কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি (যুক্তরাষ্ট্র), দ্য ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি, বাংলাদেশ ২.

০ ইনিশিয়েটিভ (যুক্তরাজ্য), সোচ্চার (যুক্তরাষ্ট্র), ইনসাফ (বাংলাদেশ), সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চ (তুরস্ক), সেন্টার ফর পলিসি অ্যানালিসিস অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি (বাংলাদেশ) এবং জাগরণ ফাউন্ডেশন (যুক্তরাজ্য)।

আরো পড়ুন:

যোগ্য হয়েও রাবির শিক্ষক নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষায় ডাক না পাওয়ার অভিযোগ

যবিপ্রবিতে জলবায়ুবিষয়ক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সম্মেলনের শুরুতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলো থেকে পাঠ করা হয়। এরপর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ জাহিদুজ্জামান তানভীনের মা বিলকিস জামান ও বাবা শামসুজ্জামান বক্তব্য প্রদান করেন। সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও সম্মেলনটির আহ্বায়ক ড. মো. শরীফুল ইসলাম।

দিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান, আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিবিদ জন এফ. ডেনিলোইজ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, “আমরা আজ যে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসনের পতন দেখেছি, সেটার নিষ্ঠুরতা আমাদের বিবেককে সামগ্রিকভাবে ক্ষতবিক্ষত করেছে। এই শাসনব্যবস্থা রাষ্ট্রকে জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্রে পরিণত করেছিল। শুধু তাই নয় র‌্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সন্ত্রাসের হাতিয়ার বানানো হয়েছিল। গুম-খুন হয়ে উঠেছিল নিত্যদিনের ঘটনা। কবি, শিক্ষক, সাংবাদিক ও ছাত্রনেতাদের অপরাধী বানিয়ে জেলে ভরা হয়েছিল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মুক্ত চিন্তায় বাধা দেওয়া হত।”

তিনি বলেন, “আমরা বিকৃত ইতিহাস থেকে সত্যকে উদ্ধার করতে চাই। যারা নিখোঁজ হয়েছেন, তাদের পরিবারের কান্না ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালে গেঁথে থাকা গুলির চিহ্ন এসবই একদিন ন্যায়বিচারের নির্মাণ কাজে প্রমাণ হয়ে উঠবে “

জুলাই বিপ্লবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান স্মরণ করে তিনি আরো বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবারো সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছে। এর শ্রেণিকক্ষগুলো হয়ে উঠেছিল রণকৌশলের কেন্দ্র, ছাত্ররা হয়ে উঠেছিল বিবেকের যোদ্ধা। আমরা বিদেশি গবেষক, অধ্যাপক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছে কৃতজ্ঞ। যারা বিপজ্জনক সময়েও বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন।”

তিনি এই সম্মেলনকে একটি জাতীয় অঙ্গীকারে পরিণত করতে জুলাই বিপ্লবের দলিলপত্র, ভিডিও, ফটো নিয়ে একটি আর্কাইভ গড়ে তোলা, স্কুল-কলেজের পাঠ্যক্রমে জুলাই ইতিহাস সত্যনিষ্ঠভাবে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।

সমাপনী পর্বে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, মালয়েশিয়ার পার্টি কেডিলান রকইয়াট (পিকেআর) এর ডেপুটি প্রেসিডেন্ট নুরুল ইজজাহ আনোয়ার, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত ড. লুৎফে সিদ্দিকী এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বকস্ চৌধুরী।

সম্মেলন শেষে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) অডিটোরিয়ামে ‘লাল জুলাই’ নামক একটি মঞ্চ নাটক পরিবেশন করা হয়।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট য ক তর ব ষয়ক

এছাড়াও পড়ুন:

ইউআইইউতে শহীদ ইরফান স্মরণে দোয়া মাহফিল

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ইউআইইউ) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ইরফান ভূঁইয়াসহ সব শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শহীদ ইরফান ভূঁইয়া ইউআইইউ এর শিক্ষার্থী ছিলেন।

শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুর আড়াইটায় ইউআইইউ অডিটোরিয়ামে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

ইউআইইউর উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এএসএম সালাহউদ্দিনের সভাপতিত্ব জুলাই স্মরণ আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রেজিস্ট্রার ডা. মো. জুলফিকার রহমান।

অন্যদের মাঝে বক্তব্য দেন, বিবিএ প্রোগ্রামের পরিচালক অধ্যাপক ড. সালমা করিম এবং সিএসই বিভাগের প্রধান ড. সুমন আহম্মেদ। এছাড়া জুলাই ২০২৪ গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন শহীদ ইরফান ভূঁইয়ার পিতা আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া।

অনুষ্ঠানে বক্তারা গণঅভ্যুত্থানের তাৎপর্য, সংগ্রামীদের আত্মত্যাগ এবং স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এ আন্দোলনের অবদান নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনা অনুষ্ঠানে ২০২৪-এর জুলাই স্মরণে একটি ভিডিও ডকুমেন্টরি প্রদর্শন করা হয়। 

আলোচনা শেষে ২০২৪ গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় একটি দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ইউআইইউ কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শহীদ ইরফান ভূঁইয়াসহ সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে দোয়া করা হয়। 

অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তাসহ অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতিসংঘ স্থায়ী মিশনে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিশেষ অনুষ্ঠান
  • ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ১৫ মামলার চার্জশিট
  • নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জুলাই ৩৬ কর্ণার’ উদ্বোধন
  • রাকসু: দীর্ঘ ৩৫ বছর অপেক্ষার অবসান ঘটাবে যে নির্বাচন
  • গণঅভ্যুত্থান না হলে নির্বাচনের স্বপ্নই দেখতে পারতেন না: নাহিদ
  • ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ'র জরুরি সভা অনুষ্ঠিত
  • আবদুল হামিদ মানুষের গণতন্ত্র হত্যা করেন: নাহিদ
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান রুখে দাঁড়াবার এক মহাকাব্য: সংস্কৃতি উপদেষ্টা
  • ইউআইইউতে শহীদ ইরফান স্মরণে দোয়া মাহফিল