ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে পাকিস্তানের জার্সি ঢাকতে বলার ঘটনায় ক্ষমা চাইল ল্যাঙ্কাশায়ার
Published: 1st, August 2025 GMT
ইংল্যান্ড–ভারত টেস্ট সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে পাকিস্তানের জার্সি পরে খেলা দেখতে বসেছিলেন এক দর্শক। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষীরা জার্সিটি ঢাকতে বলার পর সেই দর্শক তা না করায় তাঁকে স্টেডিয়াম থেকে বের করে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছে ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব। ওল্ড ট্রাফোর্ড ল্যাঙ্কাশায়ারের ঘরের মাঠ।
সংক্ষিপ্ত সংস্করণে পাকিস্তানের সবুজ রংয়ের জার্সি পরে মাঠে গিয়েছিলেন ফারুক নজর নামের সেই দর্শক। ঘটনাটি তিনি ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করার পর এ নিয়ে আলোচনার ঝড় শুরু হয়।
আরও পড়ুনওল্ড ট্রাফোর্ডে পাকিস্তানি জার্সি পরা নিয়ে বিতর্ক, তদন্তে ল্যাঙ্কাশায়ার২৮ জুলাই ২০২৫ভিডিওতে দেখা যায়, এক নিরাপত্তারক্ষী নজরকে জার্সিটি ঢাকতে বলছেন। সেই নিরাপত্তারক্ষী ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে কাজ করেন বলে পরিচয় দেন। ফারুককে তিনি বলেন, জার্সিটি ঢাকতে বলার জন্য ‘কর্তৃপক্ষ’ তাঁকে পাঠিয়েছেন। তবে তাঁর কথায় ফারুক রাজি হননি। এরপর পুলিশ কর্মকর্তাদের সহায়তায় ফারুরকে স্টেডিয়াম থেকে বের করে দেওয়া হয়।
ল্যাঙ্কাশায়ারের বিবৃতি অনুযায়ী, ‘(স্টেডিয়ামের নিরাপত্তার কাজে) দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের সঙ্গে অগ্রহণযোগ্য ব্যবহার করায় স্টুয়ার্ড ও পুলিশ কর্মকর্তারা তাঁকে স্টেডিয়াম থেকে চলে যেতে বলেন।’ গত রোববার টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিনে এই ঘটনা ঘটে।
ল্যাঙ্কাশায়ার এর আগে জানিয়েছিল, এই ঘটনার তদন্ত করা হবে। অভ্যন্তরীণ তদন্ত শেষে ক্ষমা চেয়ে ক্লাবটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘অনিচ্ছাকৃতভাবে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি সামলানোর ক্ষেত্রে যে প্রক্রিয়া, তা পর্যালোচনা করা হবে।’
ল্যাঙ্কাশায়ারের ব্যাখ্যায় বলা হয়, টেস্টের চতুর্থ দিনে অর্থাৎ শনিবার ভারত ও পাকিস্তান সমর্থকদের মধ্যে অন্য একটি ঘটনা ফারুক নজরের বিষয়টি ওভাবে সামলানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। ক্লাবটির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘প্রথমে একটি বিষয় আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই, স্রেফ পাকিস্তানের জার্সি পরে আসায় কাউকে বের করে দেওয়ার ইচ্ছা ছিল না। শনিবার একটি ঘটনার কারণে বিষয়টি সামলানো হয় ওভাবে। একদল সমর্থক পাকিস্তানের পতাকা ওড়ান, তাতে কাছাকাছি থাকা ভারতের সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। আমাদের তত্ত্বাবধায়ক সম্মানের সঙ্গে পতাকা সরিয়ে রাখার কথা বলে ঘটনাটা আর বাড়তে দেননি। তাঁরাও (সমর্থক) কোনো প্রকার সন্দেহ ছাড়াই সেটা (পতাকা নামিয়ে ফেলা) করেছেন।’
সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ অব লেজেন্ডস (ডব্লুসিএল) টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের সঙ্গে দুটি ম্যাচ খেলতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত। এর মধ্যে একটি সেমিফাইনাল এবং আফ্রিদি–হাফিজদের বিপক্ষে সেই ম্যাচ খেলায় টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয় যুবরাজ–হরভজনদের।বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রোববার আমাদের (নিরাপত্তা) দল সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়। আমাদের কাছে নিরাপত্তাই আগে। কোনো উত্তেজনা যেন তৈরি না হয় এবং তাঁর (ফারুক নজর) নিজের স্বার্থে গ্যালারিতে আমাদের (নিরাপত্তা) কর্মী ভদ্রভাবে জার্সিটি ঢেকে রাখার কথা বলেন। কয়েকবার অনুরোধের পরও তিনি বার বার অসম্মতি জানান।’
আরও পড়ুনওল্ড ট্রাফোর্ডে পাকিস্তানি জার্সি নিয়ে বিতর্ক: খাজার প্রশ্ন, জার্সি ঢাকতে বলাটা কি বৈধ২৯ জুলাই ২০২৫ভারত-পাকিস্তানের রাজনৈতিক সম্পর্কে কয়েক বছর ধরেই উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত মে মাসে দুই দেশের সামরিক সংঘাতের পর সেই উত্তেজনা আরও তীব্র হয়। এই টানাপোড়েনের ছায়া পড়েছে দুই দেশের ক্রিকেটীয় সম্পর্কেও।
২০১৩ সালের পর আর কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলেনি ভারত-পাকিস্তান। টেস্ট ক্রিকেটে মুখোমুখি হওয়ার ঘটনা আরও পুরোনো, ২০০৭ সালে। এমনকি বৈশ্বিক ও মহাদেশীয় টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়ার সময় একে অন্যের দেশে গিয়ে খেলাতেও তৈরি হয়েছে জটিলতা। ফলে সম্প্রতি দুই দলের ম্যাচ নিরপেক্ষ ভেন্যুতে আয়োজন করতে হচ্ছে ‘হাইব্রিড মডেলের’ অংশ হিসেবে।
ওল্ড ট্রাফোর্ডে ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যে টেস্টটি ড্র হয়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পর ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বেরোবি
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ব্রাকসু) নিয়ে অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে শিক্ষার্থীদের। গত ২৮ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গেজেট প্রকাশ হয়ছে গঠনতন্ত্র।
এরই মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৭ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙিক্ষত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ তথা ব্যাকসু নির্বাচন। তবে এর জন্য আমরণ অনশন থেকে শুরু করে সব ধরনের কর্মসুচিই পালন করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন:
‘আমরা একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করতে চাই’
বেরোবিতে শহীদ আবু সাঈদ স্মৃতিস্তম্ভের মডেল প্রদর্শন
জুলাই অভ্যুত্থান পর গণরুম ও গেস্ট রুমের যে সাংস্কৃতি ছিল, তা এখন বন্ধ হয়েছে। কোনো রাজনৈতিক দলের কমকাণ্ডে সামিল হওয়াও বাধ্যতামুলক নয়।
তাই শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ ছাত্র সংসদ। যাতে শিক্ষার্থীদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ বেরোবির বিধিমালা অনুযায়ী, ১৩টি পদে সরাসরি নির্বাচন ও হল সংসদে নয়টি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে সব ধরনের কথা তুলে ধরতে পারবেন।
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী শেখর রায় বলেন, “সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও লেজুরবিত্তিক রাজনীতি ব্যতীত একটি নির্বাচন হোক। যোগ্য, আদর্শ, উত্তম চরিত্র ও মনের প্রার্থী বিজয়ী হোক। নির্বাচিত হয়ে তারা হয়ে উঠুক বেরোবির একেকজন যোগ্য প্রতিনিধি। তারা ন্যায়ের পক্ষে থাকুক । তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাক বেরোবি।”
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী জাওয়াদ সাজিদ বলেন, “ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের দাবি, অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার প্রধান মঞ্চ। এটি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে, যাতে প্রতিটি শিক্ষার্থীর কণ্ঠ পৌঁছে যায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের টেবিলে। কিন্তু এজন্য সংসদকে দলীয় প্রভাবমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হতে হবে। প্রকৃত অর্থে ছাত্র সংসদ তখনই সফল, যখন তা শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের সমস্যার সমাধান ও কল্যাণে কাজ করে।”
অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান বলেন, “আমরা এমন ছাত্র সংসদ চাই, যেখানে যোগ্য নেতৃত্ব আসবে এবং সব শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হয়ে কাজ করবে। সবমিলিয়ে সবার বিশ্বস্ত জায়গা হবে এই ছাত্র সংসদ।”
ঢাকা/সাজ্জাদ/মেহেদী