ভূমি সেবাগ্রহিতাকে সবোর্চ্চ সেবা দেওয়া নিশ্চিত করার আহ্বান জা‌নি‌য়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ বলেছেন, খতিয়ান হচ্ছে দখলের প্রামাণ্য দলিল, মালিকানার দলিল নয়।

তিনি বলেন, খতিয়ানে মালিক ছাড়া অন্য কারো নাম অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেলে যেমন সেই ব্যক্তির মালিকানা সৃস্টি হয় না, তেমনি প্রকৃত মালিকের মালিকানা সত্ত্বও নষ্ট হয় না। খতিয়ানে করণিক ভুল সংশোধনে সেবাগ্রহিতাকে সবোর্চ্চ সেবা দেওয়া নি‌শ্চিত করতে হবে।

আরো পড়ুন:

‘ভূমিসেবায় দুর্নীতির ব্যাপারে আপস নয়’

স্থানীয়রা আন্তরিক না হলে সড়কের পাশের গাছ রক্ষা করা কঠিন: ভূমি উপদেষ্টা  

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর ভূমি ভবনের সম্মেলন কক্ষে ‘অটোমেটেড ভূমি সেবা সিস্টেমে ভূমির রেকর্ডীয় খতিয়ান সংশোধন’ শিরোনামের কর্মশালায় অংশ নিয়ে তিনি এই ব্যাখ্যা তুলে ধরেন।

কর্মশালার আয়োজন করে ভূমি সংস্কার বোর্ড। এতে অন্যান্যের মধ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন অনুবিভাগ) মো.

এমদাদুল হক চৌধুরী, অতিরিক্ত সচিব (মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগ) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান এবং প্রকল্প পরিচালক মো. পারভেজ হাসান। মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও কর্মশায় অংশ নেন।

কর্মশালার পরে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘লিজকৃত রাবার বাগান নবায়ন বিষয়ে উদ্ভূত জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে সভায় সভাপতিত্ব করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ।

তি‌নি বলেন, “দেশের জন্য রাবার শিল্প মঙ্গলজনক, কারণ এটি অর্থনীতিতে অবদান রাখে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে এবং দেশের চাহিদা পূরণ করে। উন্নত মানের রাবার বিদেশে রপ্তানি হয় এবং দেশে বিভিন্ন শিল্প যেমন মোটরগাড়ি, চিকিৎসা, ও খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়। রাবার গাছ চাষের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতি ও পরিবেশের উন্নতি হয়, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী সম্পদ। রাবার শিল্প উন্নয়নে রাবার চাষীদের ভূমিকা অন্যন্য। এর জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।”

সভায় জানানো হয়, বান্দরবান পার্বত্য জেলায় মোট ১ হাজার ৪০৭টি রাবার প্লট এবং ৪৬১টি হর্টিকালচার প্লট রয়েছে, যার আয়তন ৪৩ হাজার ৭০০ একর। রাবার গাছের জীবনচক্র অনুযায়ী, বাগান ৪০ বছরের জন্য ইজারা দেওয়া হয়। ১৯৭৭-৭৮ সাল থেকে রাবার বাগান-হর্টিকালচারের জন্য প্লট লিজ দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। বান্দরবান পার্বত্য জেলায় রাবার-হর্টিকালচার বাগান করার জন্য প্রতি একর তিন হাজার টাকা হারে ২৫ একর জমির সালামি পঁচাত্তর হাজার টাকা ধার্য্য করে ইজারা দেওয়া হয়। বর্তমানে প্রতি ২৫ একর প্লটের জন্য লিজ নবায়নের ফি ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং লিজ নবায়নের চুক্তির মেয়াদ ৪০ বছর করার জন্য বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়।

বাংলাদেশ রাবার গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলেন, দুর্গম এলাকায় তাদের রাবার বাগান। যোগাযোগ ব্যস্থা তারা নিজেদের অর্থায়নে করেছেন, বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ মকোবিলা করে তাদের টিকে থাকতে হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারি সহযোগিতা পেলে রাবার উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। তারা নাবয়ন ফি কমানোসহ ব্যাংক ঋণ সুবিধা এবং লিজের চুক্তির বিষয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন। 

তারা জানান, দেশে শুধু রাবার উৎপাদন হয়, প্রক্রিয়াজাত হয় বিদেশে। সেক্ষেত্রে রাবারকে কৃষি পণ্যা ঘোষণা করার দাবি জানান বাগান-মালিকরা। ৬০ বছরের পুরোনো ক্লোন দিয়ে রাবার চাষ হচ্ছে। উৎপাদন বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলানোর মতো না। সেক্ষেত্রে নতুন ক্লোন আমদানি করলে রাবার উৎপাদন অনকে গুন বৃদ্ধি পাবে।

সার্বিক বিষয় বিবেচনায় করণীয় সম্পর্কে সিনিয়র সচিবের নির্দেশে একটি কমিটি করা হয়। কমিটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন সিদ্ধান্ত জানাবে।

সভায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. শরিফুল ইসলাম, রাবার বোর্ডের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো. খায়রুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র র জন য খত য় ন

এছাড়াও পড়ুন:

আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।

আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।

আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।

ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ