মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নে ধলেশ্বরী নদীর ভাঙন প্রতিদিনই আতঙ্কের সৃষ্টি করে চলেছে। নদীর তাণ্ডবের কারণে ভিটেমাটি, ফসলি জমি ও বসতঘর বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এতে হাজারো মানুষ ঘরবাড়ি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। 

চলতি বছরে উপজেলার তিনটি গ্রামে দুই কিলোমিটার এলাকা নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাম পশ্চিম কুমুল্লী। সেখানে বসবাসকারী মানুষজন এখন ভিটেমাটি রক্ষা করতে না পেরে অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

পশ্চিম কুমুল্লী, পেচারকান্দা, পশ্চিম জাবরা ও কাউটিয়া গ্রামে প্রায় সাড়ে আট হাজার মানুসের বসবাস। স্থানীয়রা জানান, নদীর ধারে কালীগঙ্গার ভাঙনে গত তিন বছরে অর্ধশত পরিবার সম্পূর্ণভাবে এবং শতাধিক পরিবার আংশিকভাবে ভিটেমাটি হারিয়েছে। চলতি মাসে ভাঙনের কারণে অন্তত ৩০টি বসতঘর, ৬০ বিঘা আবাদি জমি, একটি রাস্তা, একটি মসজিদ ও দুটি স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। 

নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলে পুরো গ্রাম মানচিত্র থেকে মুছে যেতে পারে। তাই তারা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসন ও নিরাপদ আশ্রয় নিশ্চিত করার দাবি তুলেছেন।

পশ্চিম কুমুল্লী গ্রামের ছোরহাব উদ্দিন (৭০) বলেন, ‘‘আমার পৈতৃক ভিটেবাড়ির ৪০ শতাংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। আবাদি জমি, ফল গাছের বাগান সব শেষ। পরিবার নিয়ে কোথায় যাবো, ভাবছি।’’ 

স্থানীয়দের মধ্যে অনেকেই ত্রাণ ও নিরাপদ আশ্রয়ের অভাব অনুভব করছেন। লাভলু মিয়া বলেন, ‘‘আমরা গরিব মানুষ। বৌ-বাচ্চা নিয়ে কোথায় যাবো। ভিটেমাটি নেই, আশ্রয় নেই।’’ 

গৃহবধূ রাশেদা বেগম জানান, ‘নদীর মাঝখানে আমাদের বাড়ি ছিল। তিনবার সরিয়েছি, এখন আর জায়গা নেই। এখন এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছি।’’

প্রবীণ হাফিজ উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, “প্রতিদিন নদীতে শত শত বাল্কহেডে বালু পরিবহনের কারনে ভাঙন আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রতিবাদ করলে পরিবহনকারীরা হামলা চালায়।” 

নদীর ভাঙনে নান্নু, ইদুল, দুদু, ইদ্রিস আলী, নোয়াব আলী, সুজাত মিয়া, নজরুল ইসলাম, খোরশেদ, আক্তার, মোক্তার হোসেন, আলমগীর ও ইমান আলীর বসতঘর ও ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে বলে জানান তিনি।

বালিয়াখোড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো.

আওয়াল খান বলেন, ‘‘কুমুল্লী গ্রামের মানুষ দিশেহারা। নদীশাসনের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া এখন সময়ের দাবি। আমরা উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে এরইমধ্যে জানিয়েছি।’’

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, “ধলেশ্বরী ও কালীগঙ্গা নদীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন রোধে প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। ভাঙন কবলিত এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে এবং দীর্ঘমেয়াদী নদী শাসন পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে ভাঙন প্রতিরোধ সম্ভব হবে।”

ঢাকা/চন্দন/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

বাগদানের গুঞ্জনের মাঝে হুমার রহস্যময় পোস্ট

অনেক দিন ধরে গুঞ্জন উড়ছে, অভিনয় প্রশিক্ষক রচিত সিংয়ের সঙ্গে প্রেম করছেন বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। যদিও তারা এ সম্পর্কের কথা কখনো স্বীকার করেননি। কয়েক দিন আগে জানা যায়, দীর্ঘ দিনের কথিত প্রেমিক রচিতের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন হুমা কুরেশি।  

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে দ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল জানিয়েছে, এক বছরের বেশি সময় লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার পর বাগদান সম্পন্ন করেছেন তারা। যদিও এই খবরের কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি হুমা।  

আরো পড়ুন:

আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা

‘উদয়ের সঙ্গে ব্রেকআপের পর অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম’

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ইনস্টাগ্রামে একটি রহস্যময় বার্তা শেয়ার করেছেন এই অভিনেত্রী। হুমা তার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে রামেন বাউলের ছবি শেয়ার করে লেখেন, “প্রত্যেকেরই শান্ত হওয়া প্রয়োজন… আর শান্তভাবে কাজ করা উচিত।” পাশাপাশি জানান, তিনি বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করছেন। 

এর আগে হুমা-রচিতের ঘনিষ্ঠজন হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, “হুমা তার দীর্ঘ দিনের প্রেমিক, অভিনয় প্রশিক্ষক রচিত সিংয়ের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন।”  

হুমা ও রচিতের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়, তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, গায়িকা আকাসা সিংয়ের শেয়ার করা একটি ছবিকে কেন্দ্র করে। এ ছবির ক্যাপশনে আকাসা লেখেন, “এক টুকরো এই স্বর্গের জন্য তোমাদের অভিনন্দন। দারুণ একটি রাত কেটেছে।”   

এ ঘটনার কিছুদিন পর, হুমা ও রচিতকে একসঙ্গে দেখা যায় সোনাক্ষী সিনহা ও জহির ইকবালের বিয়েতে, দুজনেই সেদিন পরেছিলেন গোলাপী রঙের পোশাক। তাদের রসায়ন ছিল চোখে পড়ার মতো এবং ভক্তরা দ্রুত অনলাইনে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন এই রহস্যময় ব্যক্তিটিকে (রচিত) নিয়ে।  

সম্প্রতি, রচিতের ঘনিষ্ঠ একজনের জন্মদিন উদযাপনের সময় আবারো তাদের একসঙ্গে দেখা যায়, যা তাদের বাগদান নিয়ে জল্পনা আরো বাড়িয়ে তোলে। তবে বাগদান নিয়ে নানা চর্চা চললেও সরাসরি একটি কথাও বলেননি হুমা কিংবা রচিত।  

রচিত সিংহ একজন নামকরা অভিনয় প্রশিক্ষক। রচিত সিং ওয়ার্কশপ নামে তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই ওয়ার্কশপের মাধ্যমে ১০০টিরও বেশি কর্মশালা পরিচালনা করেছেন রচিত। তার কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন—গুলশন দেবাইয়া, ইমাদ শাহ, কুণাল কাপুর, পূজা হেগডে, হর্ষবর্ধন রানে, অমৃতা সুবাস, সহানা গোস্বামী, অহনা কুমারা, রণবীর সিং, বরুণ ধাওয়ান, ভিকি কৌশল, অনুশকা শর্মা, অনীত পড্ডা, শানায়া কাপুরের মতো অভিনয়শিল্পীরা।  

এর আগে পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার মুদাসসার আজিজের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করেছেন বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। দীর্ঘ ৩ বছর সম্পর্কে ছিলেন তারা। ২০২২ সালের শেষের দিকে জানা যায়, ভেঙে গেছে এই সম্পর্ক।  

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ