ইসরায়েলের ‘অবৈধ অবরোধ ভাঙতে’ রওনা দিয়েছে নৌকার বহর
Published: 31st, August 2025 GMT
‘গাজার উপর ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ ভেঙে ফেলার’ লক্ষ্য নিয়ে স্পেনের বন্দর শহর বার্সেলোনা ত্যাগ করেছে ত্রাণবাহী নৌকার বহর গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা।
রবিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে বন্দর থেকে নৌকাগুলো যাত্রা শুরু করে। এসময় অধিকার কর্মী, সহায়তা কর্মী এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভিড় ছিল ক্রুদের বিদায় জানাতে।
যাত্রার কয়েক ঘন্টা আগে সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থানবার্গ ফিলিস্তিনিদের উপর ইসরায়েলের গণহত্যার বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন।
থানবার্গ বলেছেন, “ইসরায়েল তাদের গণহত্যার উদ্দেশ্য সম্পর্কে খুব স্পষ্ট। তারা ফিলিস্তিনি জাতিকে মুছে ফেলতে চায়। তারা গাজা উপত্যকা দখল করতে চায়। রাজনীতিবিদ এবং সরকারগুলো আন্তর্জাতিক আইন সমুন্নত রাখতে ব্যর্থ।”
গাজায় জাহাজে করে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য অধিকারকর্মীদের দুটি প্রচেষ্টায় এর আগে ইসরায়েল বাধা দিয়েছিল। জুন মাসে, গাজা থেকে ১৮৫ কিলোমিটার পশ্চিমে ইসরায়েলি বাহিনী ম্যাডলিনে থাকা ১২ জন কর্মীকে আটক করে। ওই সময় থানবার্গসহ নৌকার যাত্রীদের আটক করা হয় এবং অবশেষে বহিষ্কার করা হয়।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)