চবির ৩ ছাত্র আইসিইউতে, ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ
Published: 1st, September 2025 GMT
স্থানীয় গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) তিন শিক্ষার্থীকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, উদ্ভূত পরিস্থিতি ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে প্রশাসনিক ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা থেকে শুরু করে দাপ্তরিক কাজ চলছে।
গত দুদিন ধরে দফায় দফায় চলা সংঘর্ষে ২২০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই শিক্ষার্থী। জানা গেছে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও নগরের দুটি বেসরকারী হাসপাতালে অন্তত ১৩৫ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়েছেন। ভর্তি আছেন ৪৭ শিক্ষার্থী।
আরো পড়ুন:
ফেনীতে সড়ক দুর্ঘটনা ও ছুরিকাঘাতে নিহত ২
পেটে গজ রেখে সেলাই, সাত মাস পর অপসারণ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমদ বলেন, “গতকালের পরিস্থিতি বিবেচনায় আজ ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে শিক্ষকদের বাস নিয়মিত সূচিতে চলাচল করছে। আগামীকালকের ক্লাস-পরীক্ষার বিষয়ে দ্রুত জানানো হবে।”
দুদিন ধরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান থাকায় অনেকে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.
এ বিষয়ে উপচার্য বলেন, “আমি রবিবার বিষয়টি বাতিল করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দূর-দূরান্ত থেকে এক্সপার্টরা চলে আসায় আমরা বাতিল করতে পারিনি। এছাড়া, এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের খরচসহ আরো বিভিন্ন বিষয় জড়িত আছে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা ভালো পরিবেশ গড়ে তুলেছি ক্যাম্পাসে। সবগুলো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সবচেয়ে ভালো চলছে। হার্ভাড, এমআইটির স্কলাররা এখানে সেমিনার দিচ্ছে।”
সংঘর্ষের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “আজ আমরা মিটিং ডেকেছি। সেখানে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য যেটা ভালো সেটাই করা হবে। তবে চাকসুর তফসিল ঘোষণা করার পরেই এরকম একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছি। কাজেই এখানে নানারকম চিন্তার বিষয় আছে।”
এদিকে, চট্টগ্রাম বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. ফজলে রাব্বী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় স্থানীয়দের হামলায় গুরুতর আহত তিনজন ছাত্র হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে চবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান ভর্তি আছেন বেসরকারি ন্যাশনাল হাসপাতালের আইসিইউতে। নগরীর পার্ক-ভিউ হাসপাতালে আইসিইউতে রয়েছেন মামুন নামের এক ছাত্র। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছেন পলাশ নামের আরেক ছাত্র।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আলাউদ্দিন জানান, শনিবার রাত থেকে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অন্তত ১১০ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের মধ্যে ২২ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এছাড়া, নগরীর ন্যাশনাল হাসপাতাল এবং পার্ক ভিউ হাসপাতালসহ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে ২৫ জন চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ২৪ জন পার্কভিউ হাসপাতালে ও ১ জন ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি আছেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে অনেক শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়েছেন।
চমেকসহ অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছাত্রদের আঘাত সম্পর্কে চিকিৎসক ও নার্সরা জানান, অধিকাংশ ছাত্র ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয়েছেন। অনেক ছাত্রকে নির্মমভাবে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। আইসিইউতে থাকা দুই শিক্ষার্থীকে মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে। অনেক ছাত্রের হাত ভেঙে গেছে বড় লাঠির আঘাতে।
চট্টগ্রাম বিভাগের স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. ফজলে রাব্বী জানান, আহত সকল শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় সব ধরনের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
চবিতে সংঘর্ষের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি চসিক মেয়রের: চবি শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
গতকাল চমেক হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়ে মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, “শিক্ষাঙ্গনে এমন সহিংসতা কখনোই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের হামলা দুঃখজনক ও উদ্বেগজনক। এই ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত হওয়া জরুরি, যাতে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা যায়। শিক্ষার পরিবেশ অশান্ত করে যারা সহিংসতা সৃষ্টি করছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
এর আগে গত শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা থেকে গতকাল বেলা ৩টা পর্যন্ত দফায় দফায় স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের এক ছাত্রী ক্যাম্পাসের ২ নম্বর গেটের কাছে একটি ভবনে ভাড়া থাকেন। শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার পর তিনি ওই ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে ভবনের দারোয়ান তাকে মারধর করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার রাতের পর রবিবার দ্বিতীয় দফায় সংঘাতে জড়ায় স্থানীয় লোকজন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন, যা আজ রাত ১২টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
ঢাকা/রেজাউল/মিজান/ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ র ঘটন য় র আইস ইউত পর স থ ত পর ক ষ তদন ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বাগদানের গুঞ্জনের মাঝে হুমার রহস্যময় পোস্ট
অনেক দিন ধরে গুঞ্জন উড়ছে, অভিনয় প্রশিক্ষক রচিত সিংয়ের সঙ্গে প্রেম করছেন বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। যদিও তারা এ সম্পর্কের কথা কখনো স্বীকার করেননি। কয়েক দিন আগে জানা যায়, দীর্ঘ দিনের কথিত প্রেমিক রচিতের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন হুমা কুরেশি।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে দ্য ফ্রি প্রেস জার্নাল জানিয়েছে, এক বছরের বেশি সময় লিভ-ইন সম্পর্কে থাকার পর বাগদান সম্পন্ন করেছেন তারা। যদিও এই খবরের কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি হুমা।
আরো পড়ুন:
আমার স্বামীর উপরে কু-নজর পড়েছে: অঙ্কিতা
‘উদয়ের সঙ্গে ব্রেকআপের পর অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম’
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ইনস্টাগ্রামে একটি রহস্যময় বার্তা শেয়ার করেছেন এই অভিনেত্রী। হুমা তার ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে রামেন বাউলের ছবি শেয়ার করে লেখেন, “প্রত্যেকেরই শান্ত হওয়া প্রয়োজন… আর শান্তভাবে কাজ করা উচিত।” পাশাপাশি জানান, তিনি বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়ায় অবস্থান করছেন।
এর আগে হুমা-রচিতের ঘনিষ্ঠজন হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, “হুমা তার দীর্ঘ দিনের প্রেমিক, অভিনয় প্রশিক্ষক রচিত সিংয়ের সঙ্গে বাগদান সম্পন্ন করেছেন।”
হুমা ও রচিতের সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়, তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু, গায়িকা আকাসা সিংয়ের শেয়ার করা একটি ছবিকে কেন্দ্র করে। এ ছবির ক্যাপশনে আকাসা লেখেন, “এক টুকরো এই স্বর্গের জন্য তোমাদের অভিনন্দন। দারুণ একটি রাত কেটেছে।”
এ ঘটনার কিছুদিন পর, হুমা ও রচিতকে একসঙ্গে দেখা যায় সোনাক্ষী সিনহা ও জহির ইকবালের বিয়েতে, দুজনেই সেদিন পরেছিলেন গোলাপী রঙের পোশাক। তাদের রসায়ন ছিল চোখে পড়ার মতো এবং ভক্তরা দ্রুত অনলাইনে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন এই রহস্যময় ব্যক্তিটিকে (রচিত) নিয়ে।
সম্প্রতি, রচিতের ঘনিষ্ঠ একজনের জন্মদিন উদযাপনের সময় আবারো তাদের একসঙ্গে দেখা যায়, যা তাদের বাগদান নিয়ে জল্পনা আরো বাড়িয়ে তোলে। তবে বাগদান নিয়ে নানা চর্চা চললেও সরাসরি একটি কথাও বলেননি হুমা কিংবা রচিত।
রচিত সিংহ একজন নামকরা অভিনয় প্রশিক্ষক। রচিত সিং ওয়ার্কশপ নামে তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই ওয়ার্কশপের মাধ্যমে ১০০টিরও বেশি কর্মশালা পরিচালনা করেছেন রচিত। তার কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন—গুলশন দেবাইয়া, ইমাদ শাহ, কুণাল কাপুর, পূজা হেগডে, হর্ষবর্ধন রানে, অমৃতা সুবাস, সহানা গোস্বামী, অহনা কুমারা, রণবীর সিং, বরুণ ধাওয়ান, ভিকি কৌশল, অনুশকা শর্মা, অনীত পড্ডা, শানায়া কাপুরের মতো অভিনয়শিল্পীরা।
এর আগে পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার মুদাসসার আজিজের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করেছেন বলিউড অভিনেত্রী হুমা কুরেশি। দীর্ঘ ৩ বছর সম্পর্কে ছিলেন তারা। ২০২২ সালের শেষের দিকে জানা যায়, ভেঙে গেছে এই সম্পর্ক।
ঢাকা/শান্ত