বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “পতিত ফ্যাসিস্ট বিভ্রান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ‘গুজব’ ছড়াচ্ছে।”

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর উত্তরায় একটি খালের পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উদ্বোধনকালে বিএনপি মহাসচিব এই মন্তব্য করে জনগণকে সর্তক থাকার আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন:

জনগণের সরকার হলে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হবেন: ফখরুল

গণঅধিকারের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ বিএনপির

ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে বিকেলে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরে একটি খাল এবং দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে সকালে মানিক নগরে খালের ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার অভিযান চালানো হয়।

মিজা ফখরুল বলেন, “অনেক গুজব চারদিকে, গুজবে কান দেবেন না। কারণ গুজব গুজবই। আমাদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার জন্য আওয়ামী লীগ ভারত থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের মধ্যে কোন বিভেদ নাই। আমাদের মধ্যে ঐক্য আছে, সেই ঐক্য নিয়ে আমরা জয় করব ইনশাআল্লাহ।”

পরিচ্ছন্নতা যেন লৌকিকতা না হয় উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “আজকে খাল পরিস্কার অভিযান। আজকে আমাদের র‌্যালি হওয়ার কথা ছিল। র‌্যালি হলে রাস্তায় ভিড় হয়ে যায়, গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ হয়ে যায়, ঢাকা শহর বন্ধ হয়ে যায়, মানুষের কষ্ট হয় এই কথা চিন্তা করে আমাদের নেতা তারেক রহমান বললেন, ঢাকা শহরে দুইটা অঞ্চলে দুইটা খাল আপনারা বেছে নেন যেটা আপনারা পরিস্কার করবেন। সেভাবে আমাদের নেতাদেরকে বলেছি সেভাবে এই কর্মসূচি হচ্ছে।”

তিনি বলেন, “আমার একটা অনুরোধ আছে নেতাদের কাছে। সেটা হচ্ছে, আজকে পাঁচ মিনিটের জন্য দেখিয়ে চলে গেলে হবে না, পাঁচ মিনিটের জন্য আমরা দেখলাম যে, আমরা পরিস্কার করতেছি, তারপরে নাই। আমরা দেখতে চাই যে, এই খাল পরিস্কার হয়েছে এবং আপনাদের নেতাকর্মীরা পরিস্কার করেছে। এখানে বুঝা যাবে যে, আপনাদের দলের প্রতি আপনার দরদ কতটা।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল সবার আগে নেতৃত্ব নিতে হবে। কোথাও কোনো গোলযোগ করা যাবে না। বিশেষ করে নির্বাচনগুলো হচ্ছে ছাত্র সংসদগুলোতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। সেখানে যেন কোন গোলযোগ সৃষ্টি না হয়। কোথাও যেন এই বদনাম না আসে বিএনপির বিরুদ্ধে।  আপনারা বড় দল, আপনাদের দায়িত্ব বেশি।”

এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, সদস্য সচিব মোস্তফা জামানসহ মহানগর নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে খাল পরিস্কার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব।

এর আগে বেলা ১২টায় রাজধানীর পুরনো ঢাকায় দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে সপ্তাহব্যাপী খাল-নর্দমা পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। পরে তিনি নিজে পরিচ্ছন্নতা অভিযানে নেতা-কর্মীদেরসহ অংশগ্রহণ করেন।

এ সময়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, দলের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিব, জাসাস জাকির হোসেন রোকন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের লিটন মাহমুদ, আব্দুস সাত্তার, ফরহাদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব এনপ পর স ক র ব এনপ র আম দ র ফখর ল সদস য আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ